চুরির অভিযোগে নির্যাতন, আহত রিকশা চালকের মৃত্যু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রিকশা চালকের মৃত্যু/ছবি: সংগৃহীত

রিকশা চালকের মৃত্যু/ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় চুরির অভিযোগে মারপিটে আহত অটোরিকশার চালক হাসানুর রহমানের (২৯) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার পাটগ্রাম পৌরসভার মির্জারকোট এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। তিনি ওই এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ১১ নভেম্বর পাটগ্রাম পৌরসভার ঠাকুরবাড়ি এলাকার ইউনুস আলীর বাড়িতে তাকে আইপিএসের ব্যাটারী চুরির অভিযোগে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারপিট করেন বাড়ির মালিক ও স্বজনরা।

স্থানীয়রা ও নিহতের স্বজনেরা জানায়, গত ১১ নভেম্বর বিকেলে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউনুস আলীর ঠাকুরবাড়ি এলাকার বাসার একটি আইপিএসের ব্যাটারি হাসানুরের রিক্সায় পায় স্থানীয়রা। এতে ব্যাটারি চুরি করেছে বলে তাকে আটক করে বেধড়ক মারপিট করে ইউনুস আলীর ছেলে ও স্বজনেরা। খবর পেয়ে হাসানুরের স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৫) স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসানুরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় তাঁর স্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনার পাঁচদিন পর শনিবার দুপুরে আহত অটোরিকশা চালক হাসানুর নিজ বাড়িতে মারা যান। হাসানুরের মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা ইউনুস আলীর বাসা ও তাঁর ছেলেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ করে দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির দাবি করে। চুরির মিথ্যা অভিযোগে হাসানুরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতকদের বিচার দাবি করেন। এ সময় দোকান বন্ধ করে সরে পড়েন অভিযুক্তরা।

হাসানুরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন বলেন, ‘আমার ভাসুর নাকি আইপিএসের ব্যাটারি বের করে গাড়িতে তুলেছে। স্থানীয়রাসহ ওই বাড়ির লোকজনেরা মারপিট করেছে। হাসানুরের বুকের হাড় ভেঙে গেছে। মানুষের কাছে শুনে আমার জা (হাসানুরের স্ত্রী) ছুটে গেলে তাকেও মারধর করেছে। লোকজনের পায়ে-হাতে ধরে হাসানুরকে নিয়ে আসেন। ভাসুর হত্যার বিচার চাই।’

হাসানুরের ছোট ভাই আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই ঠাকুরবাড়িতে ভাড়া নিয়ে গেছে। কে বা কারা তাঁর রিক্সায় ব্যাটারি উঠায়ে দেয়। সেটা নিয়ে আসার সময় ব্যাটারি চুরির সন্দেহে ইউনুস আলীর ছেলে কাদের, তাঁর ভাই এবং স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে বেধড়ক মারধর করেছে। এ মারধরে আহত ভাই হাসানুর শনিবার মারা গেছে।’

এ ঘটনায় ইউনুস আলীর ছেলে ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই কাউকে মারপিট করে নাই, আমিও করি নাই। বাসা থেকে আইপিএস চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পাড়ার লোকজন চিৎকার করে হাসানুরকে ধরে চড় থাপ্পর দিয়েছে। পরে স্থানীয়রা হাসানুরকে তার স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিল।

পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) পি. এম মামুনুর রশিদ বলেন, ঘটনাটি স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি। নিহতের পরিবার আপোষ করবে মর্মে থানায় আসেনি বা অভিযোগও করেনি। ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।