নীলফামারীতে চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মামলা
নীলফামারীতে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্চিতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু আল হাজ্জাজ। এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবি করে সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের।
আসামিরা হলেন- রোগী তানহার (১৪) বাবা শামীম শাহ আলম তমু ও চাচা আব্দুস সালাম বাবলা। শামীম শাহ আলম তমু সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও আব্দুস সালাম বাবলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে নীলফামারী জেনারেল হাসাপাতালে তানহা (১৪) নামের এক কিশোরীকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাকে রাখা হয় মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে। এরপর রোগীর বাবা শামীম শাহ আলম তমু ও আব্দুস সালাম বাবলা সোয়া চারটার দিকে মেডিসিন বিভাগের ইন্টার্ন কক্ষে কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক সুরাইয়া জান্নাত শম্পার কাছে রোগী তানহার ভর্তি ফাইল দিয়ে বলেন মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে গিয়ে তার রোগী দেখে আসতে। চিকিৎসক ফাইলে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তির বিষয়টি দেখতে পেয়ে শিশু বিভাগের ইন্টার্ন কক্ষে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। এতে চিকিৎসক সুরাইয়া জান্নাত শম্পার ওপর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আগ্রাসী আচরণ এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেন এবং সাধারণ জখম করেন। সে সময় তারা ইন্টার্ন কক্ষে ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র ও একটি কম্পিউটার ভাঙচুর করেন। এসময় চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়াই ভিডিও ধারণ ও তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে চলে যান তারা।
বিষয়টি জানার পর হাসপাতালে ছুটে আসেন অন্যান্য ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এরপর সেদিন সন্ধ্যা থেকে ওই ঘটনার প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন তারা। গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকে।
এ বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমরুল কায়েস বলেন, আমাদের সহকর্মী সুরাইয়া জান্নাত শম্পাকে শারিরীক ও মানুষিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে। সে বর্তমানে হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) মামলা দায়ের হয়েছে। আসামি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যহাত থাকবে।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু আল হাজ্জাজ বলেন, যে দুস্কৃতিকারীরা রোগীর সঙ্গে এসেছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের শাস্তির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেন আবেদন করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইনগত যথাযথ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এটার সুবিচার হবে আশা করছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শিগগিরই তাদের কাজে যোগদান করবেন।’
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম.আর সাঈদ বলেন, গত পরশুদিন বিকালে (মঙ্গলবার) হাসপাতালে একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজকে একটি এজাহার দিয়েছে। সে এজাহারের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে আমরা তৎপর আছি।