‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্রিয়েটিভিটি ঝেটিয়ে বিদায় করা হয়’
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন, ক্রিয়েটিভিটি ঝেটিয়ে বিদায় করে দেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ১ম শ্রেণি থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল অনলাইন লটারি কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রাইমারি ও মাধ্যমিক শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তখনই তো তাদের গড়ে তোলার সময়। ছোট শিশুরা ও অল্প বয়স্করা সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ থাকে। অথচ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন, ক্রিয়েটিভিটি ঝেটিয়ে বিদায় করে দেয়া হয়। সর্বনাশ করে দেয়া হয়, চিরকালের জন্য পঙ্গু করে দেয়া হয়। প্রশ্ন মুখস্থ করে পরীক্ষায় উদগীরণ করে। নিজেরা যে কিছু করার সেটা করতে পারে না। অথচ সেটা করার সঠিক স্থান হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এখানে পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের ক্রিয়েটিভিটি নার্চার করতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে, তাদের উপরে তুলে আনতে হবে।
প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম বলেন, আগের ব্যবস্থাপনায় যেটা ছিলো ভালদের জন্য ভাল ব্যবস্থাপনা ছিলো, খারাপরা খারাপই থেকে যেতো, এটা তো কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সিস্টেম চালুর মধ্য দিয়ে ভাল, আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যারা রয়েছে তারাও বলেছে, যারা ভাল তাদের যেখানেই পড়ায় না কেন তারা ভাল করবে। কিন্তু খারাপ যারা তাদের কে উঠিয়ে আনতে হবে, সেটাই তো প্রকৃত চ্যালেঞ্জ আমাদের।
ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবোধ থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্যালুজ তৈরি করতে হবে। ক্লাস সিক্সে একটি কোর্সে ভ্যালুজ নিয়ে লেখা আছে কিন্তু এটা নট এনাফ। স্কুল-মাদ্রাসার দায়িত্ব প্রাইমারি থেকেই ভ্যালুজ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকবে। এটা শুধু যে কারিকুলামে থাকবে তাই না, তাদের একটা দায়িত্ব থাকবে ভ্যালুজগুলো তৈরি করার।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, তিনি শিক্ষার জন্য বাজেট অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে চান, তিনি চান শিক্ষার জন্য বরাদ্ধ সবচেয়ে বেশি করতে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতোমধ্যেই গেছেন জানিয়ে প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম বলেন, সেখানে একটা দারুন পরিবর্তন দেখলাম, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষামুখী করতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে কাজ করতে দেখলাম। সে জন্য শিক্ষকদের ভাল ট্রেইনিংও দরকার, সেজন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি দিক লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তাদের কর্মমুখী করা যায় বলেও যোগ করেন সরকারের এই বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, নিজেরা উদ্যোক্তা হবে, শুধু চাকরি না, নিজেরা উদ্যোক্তা হবে, অনেক ভাল ভাল কাজ করবে। এতে দেশের উন্নয়ন হবে তাদের নিজেদেরও উন্নয়ন হবে।