বাংলাদেশ দূতাবাস ভিসা প্রদান স্বাভাবিক রাখলেও ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধে বর্তমানে একেবারে কমে এসেছে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাতায়াত।
এর মধ্যে কিছু ভিসা দিলেও নানান শর্তের বেড়া জালে বেনাপোল বন্দরেই গেল বছর তার আগের বছরের চেয়ে যাতায়াত কমেছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ জন। সব শেষ গেল মঙ্গলবার বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে গেছে ১ হাজার ২২ জন পাসপোর্টধারী।
এদের মধ্যে ৭০৮ জন বাংলাদেশি, ৩১৩ জন ভারতীয় ও অনান্য দেশের ছিল ২ জন।
এদিকে ভিসা প্রতিবন্ধকতায় ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশের-ই ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্প। এ পরিস্থিতি উত্তরনে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান ভুক্তভোগীদের।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। চিকিৎসা ব্যবসা বা অনান্য কাজে যারা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেন তাদের বড় একটি অংশ বেনাপোল-পেট্রাপোল রুট ব্যবহার করে থাকে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে বেনাপোল রুটে ৮ থেকে ১০ হাজার পাসপোর্টধারী যাতায়াত করতো। বছরে
ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের আয় হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। তবে জুলাই-আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে। পরবর্তীতে আ. লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুতির পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণে দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশিলতা ফিরলেও এখন পর্যন্ত ভিসা স্বাভাবিক করেনি দেশটি। এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে চরম ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশের-ই ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা,চিকিৎসা ও পর্যটন শিল্প। যাত্রী কমে আসায় সকালে বন্দর এলাকায় কিছুটা ব্যস্ততা থাকলেও দিনভর অলস সময় পার করছে কর্মকর্তারা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূইয়া জানান, ভিসা বন্ধে যাতায়াত কমেছে পাসপোর্টধারীদের। গেল বছর ২০২৪ সালে বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৩ জন পাসপোর্টধারী। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১১০ জন এবং ভারতীয় ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪১৩ জন ও অনান্য দেশের যাত্রী ২ হাজার ৪৯০ জন। এর আগে ২০২৩ সালে মোট যাতায়াত করেছে ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩১ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ১৮লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ জন এবং ভারতীয় ৩ লাখ ৮০ হাজার ৬০০ জন ও অনান্য দেশের যাত্রী ২ হাজার ৭১৬ জন। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এসে পাসপোর্টধারী যাতায়াত কমেছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ জন।
ভারতগামী পাসপোর্টধারী কবির হোসেন জানান, দেশে স্থিতিশিলতা ফিরেছে তাই ভিসা ছাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে ভারত সরকার। এতে দুই দেশই উপকৃত হবেন।
ভারতীয় পাসপোর্টধারী রবিন সরকার জানান, ভিসা বন্ধে দুই দেশের-ই ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশিরা আসতে না পারায় তাদের পশ্চিম বঙ্গের ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে।
বেনাপোল বন্দরের সহকারি পরিচালক ফয়সাল আহসান সজিব জানান, যাত্রী কমায় ভ্রমন খাত অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে আশাবাদী এ পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে উঠবে।