চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকার নেভি কনভেনশন হলে ছেলের বিয়ের বৌ-ভাত অনুষ্ঠান থেকে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ফখরুল আনোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি চট্টগ্রাম-২ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির চাচা এবং প্রয়াত এমপি রফিকুল আনোয়ারের ছোট ভাই।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের দাবি, ফখরুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নেভী কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারের ছেলে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে ফটিকছড়ির সাবেক এমপি তারিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর ভাণ্ডারি ও এমপি খাদিজাতুল আনোয়ারসহ উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী এসেছে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রাত ৯টার দিকে শতাধিক মানুষ কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়ে ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’ স্লোগান দিতে থাকে। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ফখরুল আনোয়ারকে আটক করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এমিপ সনি ও ভান্ডারিকে খুঁজতে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। কমিউনিটি সেন্টারের সামনে শত শত ছাত্রজনতা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। তবে অনুষ্ঠানে আগত অনেকের দাবি, এই বিয়েতে সাবেক এই দুই এমপিকে তারা দেখেননি।
সর্বশেষ তথ্য মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে বিপুল নৌ বাহিনীর সদস্য।
এদিকে, রাত দেড়টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় ‘আওয়ামী নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার’ প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে চট্টগ্রাম নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, আজকে পুলিশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের দোসরদের স্থান হবে না এখানে। পুলিশ আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। যতক্ষণ ছাত্র হত্যার বিচার না হয় ততক্ষণ তারা এখানে স্থান পাবে না।
প্রসঙ্গত, ফখরুল আনোয়ারের ছেলের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের নাতনির বিয়ে হয়। নেভী কনভেনশনে বিয়ে পরবর্তী বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান ছিল আজ। সেখানে আওয়ামী লীগের উত্তর জেলার অনেক নেতাকর্মীকে দেখা যায়। তবে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে অধিকাংশ অতিথি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।