এসএসসিতে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা



হাসান আদিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম
ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া পরীক্ষা কেন্দ্র কাটাখালি উচ্চ বিদ্যালয়/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া পরীক্ষা কেন্দ্র কাটাখালি উচ্চ বিদ্যালয়/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি কেন্দ্রে নিয়ম ভেঙে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষায় রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

প্রথম থেকেই ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রসচিব। শিক্ষার্থীরা বিষয়টিতে আপত্তি জানালে তাদেরকে ভালো নম্বর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মুখবন্ধ রাখা হয়। তবে শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন, শুক্রবার (১৫ মার্চ) তারা বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) ঐ কেন্দ্রসচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর পাশের আরেকটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে প্রশ্নপত্র ভিন্ন হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন কাটাখালি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীরা।

কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী তানভীর ইসলাম, সোহেল রানা ও মুন্না জানায়, শিক্ষাবোর্ডের সকল কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে সেট-৪ এ। কেবল তাদের কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করা হয় সেট-৩।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/16/1552739571906.jpg

পরীক্ষা শেষে বিষয়টি তারা কেন্দ্র সচিব মহরম আলী খানকে জানায়। কিন্তু সবাইকে ‘পাস করিয়ে’ দেওয়ার আশ্বাসে এই ঘটনা চাপা রাখতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন মহরম আলী।

এ বিষয়ে কথা বলতে স্কুলে গিয়েও পাওয়া যায়নি কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব মহরম আলী খানকে। কয়েক দফা মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলেননি।

তবে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাটাখালী পৌর মেয়র মো. আব্বাস আলী বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা আমি শুনেছি। ভুল করে এমনটি হয়েছে। তবে এই ভুলের জন্য যেন শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

এদিকে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আনারুল হক প্রামাণিক বলেন, ‘এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটলে প্রথমেই শিক্ষাবোর্ডকে জানাতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন্দ্রসচিব আমাদেরকে এ ঘটনাটি অবহিত করেননি।’

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কাজেই এটির সুরাহা করা কঠিন হয়ে পড়লো। তবে কেন্দ্র সচিবকে শোকজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই ন্যায্য নম্বর থেকে বঞ্চিত না হয় তা বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

উল্লেখ্য, পবা উপজেলার মাসকাটাদীঘি বহুমুখী কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, সমসাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং এমআরকে উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ছিলো।

   

ফেনীতে বাড়ছে অনলাইন জুয়ার আসক্তি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ফেনীর একটি প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন কর্মচারী এক সাথে মেতে ওঠেন জুয়া খেলায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদেরই একজন জানান, এ মাসের বেতনের ১০ শতাংশ পরিবারের জন্য খরচ করতে পারিনি। অধিকাংশই জুয়া খেলায় ব্যয় হয়েছে।

এভাবে সন্ধ্যা হলে সকল কাজ স্থগিত করে ফেনীর বিভিন্ন মার্কেট ও বাজারের দোকান কর্মচারীরা আইপিএলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছোটখাট জুয়ায় মেতে ওঠেন। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে আড্ডার স্থান সবজায়গায় চলে জুয়া নিয়ে মাতামাতি। প্রতি বল, ওভার, কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে, কোন বোলার কয়টা উইকেট নেবে- এমন অনেক বিষয় নিয়ে বাজি ধরা হয়। বর্তমানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে মোবাইলে বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ায় বাজি ধরা হচ্ছে। যাদের বেশির ভাগই উঠতি বয়সী তরুণেরা। অনলাইন জুয়া নিয়ে অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ফেনীতে কতজন এ অনলাইন জুয়া জড়িত হয়েছেন তার নির্দিষ্ট করে না জানা গেলেও জানা গেছে এর বিস্তার ফেনীর প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।

অনুসন্ধানে ও সম্পৃক্ত একাধিক ব্যক্তির দেওয়া। তথ্যে জানা গেছে, লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা এই জুয়ায় বেশি আসক্ত হচ্ছেন। পৌর এলাকা থেকে শুরু করে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোয় এই জুয়া বিস্তার লাভ করছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময় খোয়া যাচ্ছে হাজার হাজার টাকা।

ফেনীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র রবিন (ছদ্মনাম)। পাড়ার বড় ভাইদের দেখাদেখি আইপিএল ঘিরে চলা জুয়ার ব্যাপারে কৌতূহলী হয়ে পড়ে সে। কৌতূহল মেটাতে বড় ভাইদের সাহায্য নিয়ে সেও নাম লিখায় অনলাইন জুয়ার খাতায়। প্রতিদিনই বাবা-মা এমনকি বন্ধু বান্ধবদের কাছ হতে টাকা ধার করে ছোটখাট জুয়া খেলতে শুরু করে সে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তার জুয়ায় আসক্তি। প্রথমে ছোটখাট অংকের বাজি ধরলেও ক্রমেই বাড়তে থাকে তার পরিমাণ। বেশির ভাগ সময় লাভের অংক শুণ্যই থাকে তার, তবে জুয়ার আসক্তি কোনভাবেই পিছু ছাড়ছে না তাকে। সন্ধ্যা হলেই মোবাইল হাতে পাড়ার মোড়ে বন্ধুদের সাথে অথবা ঘরে বসে অনলাইনে চোখ থাকে তার মোবাইল অথবা টিভির স্ক্রীনে।

রবিনের মত এমন অনেক জনের সাথে কথা হয় এ বিষয়ে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে ফেনীতে আইপিএল ঘিরে জুয়ায় খেলায় যুক্ত রয়েছে প্রায় ২০ হাজারের বেশি তরুণ। যাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ফেনীর বাইরেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এতে যুক্ত রয়েছে। জুয়া খেলতে কি পরিমাণ টাকা লগ্নি করছে এ ব্যাপারে কোন নির্দিষ্টতা নেই। তাদের ধারণা মতে টাকার অংকের পরিমাণ অকল্পনীয়। তবে বিশ্বব্যাপী অনলাইন জুয়ার কাছে এ পরিমাণ কিছুই না।

জানা গেছে, অনলাইন জুয়ায় শুরুর দিকে ভালো লাভ হতে থাকে। কিন্তু তার পরেই লোকসানের পাল্লা বাড়তে থাকে। তাতে লগ্নি করতে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন অনেকে। জেনে-শুনে এমন পথে কেন জড়ালেন এ প্রশ্নের জবাবে উত্তর মেলে, এটি নেশার মতো। খেলা শুরু করলে যতক্ষণ টাকা থাকে, ততক্ষণ খেলতে ইচ্ছা করে।

ফেনীর জেল রোডে এলইডি স্কিনের সামনে প্রায় সময় বিভিন্ন খেলা দেখানো হয়। সেখানে দেখা মিলে কয়েকজন যুবক মোবাইল হাতে ব্যস্ত। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনলাইন জুয়ার সাইটে বেটিং করতে ব্যস্ত তারা। বল টু বল কিংবা ওভার টু ওভার বেট করছেন তারা। এভাবেই প্রতিনিয়ত জুয়া খেলেন বলে জানান তারা।

অনলাইনের বিভিন্ন সাইট ঘুরে দেখা যায়, নামে বেনামের প্রায় ১০ থেকে ১২টির মতো অ্যাপসে সবচেয়ে বেশি জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপসে ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো অঙ্কের টাকা দিয়ে শুরু করা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রলোভনে প্রচার করা বিজ্ঞাপনে এসব জুয়া বা বেটিং সাইটে ঢুকে পড়ে তারা। বুঝে না বুঝে কেউ একটি ক্লিক করলেই অ্যাপস কিংবা ওয়েবসাইটের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। শুরুতে সদস্য টানতে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন কৌশল। অল্প টাকায় লাখপতি হওয়া বা দ্বিগুণ মুনাফার লোভে অন্ধকার এ জগতে পা বাড়াচ্ছেন সব শ্রেণীরপেশার মানুষ।

এ বিষয়ে ফেনীর একটি কলেজের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যুব সমাজের অধঃপতনের আরেকটি মাধ্যম অনলাইন জুয়া। উঠতি বয়সী প্রায় অধিকাংশ তরুণের মোবাইল ফোনে অনলাইন জুয়ার সাইটের দেখা মিলে। এটি পারিবারিক ভাবে সতর্কতার পাশাপাশি সরকারের জাতীয়ভাবে প্রদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার এসব সাইট বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।


এদিকে দেশের ৫০ লাখ মানুষ অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, অনলাইন জুয়া থেকে জনগণকে দূরে রাখার জন্য সচেতনতা তৈরিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সোমবার (২৪ জুন) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জুনাইদ আহমেদ বলেন, 'আমরা অবৈধ জুয়ার সাইটগুলোকে ব্লক করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি একটা সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করছি। যাতে সাধারণ মানুষ এ ধরনের কোনো প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত না হন। আমাদের দেশের মুদ্রা যাতে বিদেশে পাচার না হয়। একটা সচেতনতা আর একটা প্রযুক্তিগত প্রয়োগ, পাশাপাশি কঠোর আইনের প্রয়োগ। তিনি জানান, আমরা মোট ২ হাজার ৬০০টি জুয়ার সাইট ব্লক করেছি। এখন আমরা মোবাইল অ্যাপগুলো প্রতিনিয়ত ব্লক করছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া।'

বিষয়টি নিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম, ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার, কম্পিউটার কাউন্সিল, বিটিআরসি ও সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি সবাইকে নিয়ে বসেছিলেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, 'যার যতটুকু সক্ষমতা আছে, পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স- সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে একটা ড্রাইভ দিচ্ছি। আরও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে আমরা অবিরাম এটা ব্লক করতে থাকব। মিডিয়াসহ বিভিন্ন সোর্সে আমরা যেটা পাচ্ছি, সেটা ব্লক করার চেষ্টা করছি।'

সচেতন মহল বলছেন, এখনই অনলাইন জুয়ার বিস্তার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের একেবারে নিম্ন পর্যায়ের মানুষও এতে জড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত এসব সাইট বন্ধ করা দরকার।

;

‘মামলা তো কুমিল্লায় নাই, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ডা. জহিরুল হক

ডা. জহিরুল হক

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় কিশোরী মিম আক্তার (১৫) নিহত হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ডা. জহিরুল হক বলেছেন, মামলা তো এখন কুমিল্লায় নাই, এটা তো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে চলে গেছে।

তিনি বলেন, তাকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি অফিস থেকে ফোন দিয়েছে। রোকেয়া আপা (স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা) ফোন দিয়েছে। রোকেয়া আপাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলেছি। তিনি বলেছেন- তুই তো কাজ করস নাই, এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে সুজিয়ে দে।

অভিযোগের বিষয়ে সোমবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় ডা. জহিরুল হকের নিজ চেম্বার ‘ফেইথ মেডিকেল সার্ভিস এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এ বার্তা২৪.কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার শেষে প্রতিবেদকের সামনেই ফোনে জনৈক ব্যক্তির সাথে এসব কথা বলেন। এসময় গোপনে অডিও কথোপকথন ধারণ করে এই প্রতিবেদক।

এসময় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেনকে ইঙ্গিত করে ডা. জহিরুল হক বলেন, ওসি ফিরোজকে বলেছি, ভাই এই অবস্থা। ওসি বলেছে, ভাই লোক পাঠাবো নাকি আবার?

এরআগে, বার্তা২৪.কমের কাছে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন ডা. জহিরুল হক। এসময় অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি রোগীকে অপারেশন করিনি।ডাক্তার এনেস্থিসিয়া (অচেতন) করার পর রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। যার কারণে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে নেওয়ার পথে রোগী মারা যায়।

রোগী মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে আমি ছুড়ি-কাঁচি লাগাইনি, সেখানে মৃত্যুর দায় আমি কেন নিবো? আমি তো ভুল করিনি।

তাহলে ভুলটা কার? জবাবে তিনি বলেন, আমি জানি না। রোগী অপারেশনের সময় কিছু সমস্যা হয়ে যেতেই পারে। সে কারণে যদি ডাক্তার দায়ী হয়, তাহলে কোনো ডাক্তারই অপারেশন করবে না।

এদিকে ঘটনার রাতে মিমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ওই হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জেনেছি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত হেলথ এন্ড ডক্টরস্ জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মিম আক্তার (১৫) নামে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে তালা ঝুলছে।

;

নরসিংদীতে নিখোঁজের ৪ দিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার, আটক ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর পলাশে নিখোঁজের চারদিন পর মাইশা আক্তার নামে সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে র‍্যাব।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নিজ বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নিহত মাইশা আক্তার জয়নগর গ্রামের মেহেদী হাসানের মেয়ে। সে শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় সেদিন রাতেই পলাশ থানায় জিডি করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার জালাল শেখ (৪৯), তার স্ত্রী মাহফুজা শেখ ও ছেলে বিল্লাল শেখ। তারা সবাই মেহেদী হাসানের বাড়ির ভাড়াটিয়া।

ডাংগা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বেলায়েত হোসেন ও পুলিশ জানায়, জয়নগর গ্রামের শিলবাড়ির মোড়ের মেহেদী হাসানের মেয়ে মাইশা শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল। পরে তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে এ ঘটনায় রাতেই পলাশ থানায় জিডি করে মাইশার বাবা।

ঘটনার চার দিন পর আজ ভোরে মেহেদী হাসানের ভাড়াটিয়া জামাল শেখ, স্ত্রী মাহফুজা শেখ ও ছেলে বিল্লাল শেখকে আটক করে র‍্যাব। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিজ বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে সকাল ৮টার দিকে মাইশার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কি কারণে মাইশাকে হত্যা করেছে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) মো: জসিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় আজ ভোরে ডাংগা থেকে তিনজনকে আটক করেছে র‍্যাব। তাদের পলাশ থানায় হস্তান্তর করবে র‍্যাব। শিশুকে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে তা আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর বিস্তারিত জানাতে পারবো।

;

উইন্ডশিল্ডে ফাটল নিয়ে বিমানের বোয়িং ৭৩৭’র জরুরি অবতরণ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিমানের বোয়িং/ছবি: সংগৃহীত

বিমানের বোয়িং/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উইন্ডশিল্ডে ফাটল নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (বিজি-১২৭) ঢাকায় জরুরি অবতরণ করেছে।

বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবী যাওয়ার পথে সোমবার (২৪ জুন) রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

ফ্লাইটটি রাত ১০টা ৪ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পরবর্তীতে উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দিলে উড়োজাহাজটি নরসিংদীর বেলাবো ও ফরিদপুর এলাকার আকাশে অসংখ্যবার চক্কর দেয়। মূলত জরুরি অবতরণের আগে জ্বালানি পুড়াতে এটি করা হয়।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে ফ্লাইটটি শাহজালালে নিরাপদে অবতরণ করে। এর আগে উড়োজাহাজটি প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে নরসিংদী ও ফরিদপুরের আকাশে চক্কর দেয়।

;