শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী’র কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারকে চার এবং পায়রা, মংলা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বন্দর এবং নৌ যান শ্রমিকদের নিকটবর্তী স্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম আজাদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, ফোনির সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এর আগে বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ফোনি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২শ ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার বেগে ধাবিত হচ্ছে। ফণী মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রবি মৌসুমের শুরুতে লালমনিরহাটের বাজারে সার সংকট দেখা দেয়ায় কৃষকদের মাঝে হাহাকার উঠেছে। নভেম্বর মাস শেষ দিকে এসেও চলতি মাসের বরাদ্দের সারের ২০-২৫ শতাংশ সারও পৌছেনি বাফার গুদামে।
এছাড়াও অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে নতুন বরাদ্দও দেয়নি বিসিআইসি। ফলে সার সংকটে কারণে রবি চাষাবাদ নিয়েও বেশ দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রবি মৌসুম চলে। এসময় আলু, ভুট্টা, সরিষা, গমসহ নানান সবজি চাষাবাদ হয়। রবি মৌসুমের শুরুতে জমিতে পর্যাপ্ত সার প্রয়োগ করেন চাষিরা। ফলে রবি মৌসুমে সারের চাহিদা তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকে। মৌসুমের শুরুতেই চাহিদা মত সার ন্যায্যমুল্যে না পেয়ে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় কোথাও কোথাও অধিক মূল্যে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
হাতীবান্ধার ভুট্টা চাষি আসাদুজ্জামান বলেন, ভুট্টা চাষাবাদ শুরু হতেই বাজার থেকে সার উধাও হয়েছে। গোপনে বেশি টাকা দিলে সার মিলছে প্রান্তিক বিক্রেতাদের কাছ থেকে। বাংলা টিএসপি প্রতিবস্তা ১৩৫০ টাকার স্থলে ১৫০০ টাকা এবং বাংলা ডিএপি ১০৫০ টাকার স্থলে দুই হাজার টাকা দামে কিনতে হচ্ছে অনিবন্ধিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে। শুরুতে এমন ধাক্কা খেয়ে উৎপাদন খরচ যেমন বাড়ছে তেমনি চাষাবাদ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আদিতমারীর দেওডোবা গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, তামাক চাষ করতে প্রচুর পরিমান সার লাগে। শুরুতেই সারের সংকট দেখা দিয়েছে। অনিবন্ধিত বিক্রেতারা বাংলা টিএসপি ও ডিএপি সার বস্তা প্রতি দুইশত থেকে ৬ শত টাকা বেশি দামে বিক্রি করছে। নিবন্ধিত বিক্রেতাদের গুদামে কোন সার নেই। তারা দাবি করছেন বাফার গুদামে না কি সার পৌছেনি। তাই সংকট তৈরী হয়েছে। কতদিনে বাফার গুদামে সার পৌছবে? মৌসুম শেষে চাষাবাদ করলে ফলন কম হওয়ারও আশংকা রয়েছে। সার নিয়ে বড় চিন্তায় আছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডিলার বলেন, লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার ৩টিতে ব্যাপক হারে তামাক চাষ হয়। বাকী পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধায় ব্যাপক ভাবে চাষ হয় ভুট্টা। তামাক চাষেও প্রচুর পরিমান সার লাগে। তাই তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করতে তামাকের জন্য কোন সার বরাদ্দ চায় না কৃষি বিভাগ।
নিবন্ধিত সার বিক্রেতারা জানান, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কোন সার বরাদ্দ দেয়নি বিসিআইসি। এ ছাড়াও নভেম্বর মাসে বিএডিসি যে পরিমান সার কাগজ কলমে বরাদ্দ দিয়েছে তার ২০/২৫ শতাংশ সার এখন পর্যন্ত বাফার গুদামে এসে পৌছেনি। গুদামে সরবরাহে ঘাটতির কারণে বাজারে কিছুটা সংকট পড়েছে। সামনের সপ্তাহে ডিসেম্বর মাসের বরাদ্ধে পৌছে গেলে এ সংকট কেটে যাবে। প্রান্তিক পর্যায়ে অনিবন্ধিত কিছু অসাধু সার বিক্রেতা আগাম সার কিনে মজুদ করে সুযোগ বুঝে এখন বেশি দামে বিক্রি করছে। অনিবন্ধিতদের মজুদদারীর কারনে এ কৃত্রিম সংকট তৈরী হতে পারে। যা মনিটরিং করে দ্রুত আইগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তবে সামনের সপ্তাহে সংকট কেটে যাবে বলেও তারা দাবি করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রবি মৌসুমের জন্য নভেম্বর মাসে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভায় বরাদ্দ আসে টিএসপি এক হাজার ৯২৬ মেঃটন, ডিএপি ৩হাজার ৪১২ মেঃটন, ও এমওপি দুই হাজার ৭০ মেঃটন। যা উপজেলা ভেদে ৩০ ও ৪০ শতাংশ সার এখন পর্যন্ত বাফার গুদামে পৌছেনি। পর্যাক্রমে আসছে এবং তা ডিলারদের মাঝে বিতরন করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক ড. সাইফুল আরেফিন বলেন, গত দুই মাসে বিসিআইসি'র সার আসেনি এবং নভেম্বর মাসের বরাদ্দের কিছু অংশ এখন পর্যন্ত বাফার গুদামে পৌঁছেনি। যে পরিমান আসছে তা তাৎক্ষনিক ডিলারদের মাঝে বিতরন করা হচ্ছে। সারের কোন সংকট নেই। কিছু অসাধু ব্যাক্তি গুজব সৃষ্টি করে সংকট তৈরি করছে। এসব অসাধু ব্যাক্তি ও বিক্রেতার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।
রাজধানীর সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামাসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ দিনের যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ফলে যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’র সবগুলো ট্রাফিক বিভাগ।
এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) একদিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৯৯৩টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। একই সঙ্গে অভিযানকালে ৩২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৫৬টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬নভেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক দিনে অভিযান পরিচালনা করে ১৯৯৩টি মামলায় ৩২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৫৬টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এদিকে এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং শ্রমিকদের সমর্থনে আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর শেষ হলো আজ।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের এক প্রেস নোটে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম. ফে রদ্রিগেজ এবং লেবার ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি থিয়া লি। এ সফরে তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডি-এর প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব, এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিশেষজ্ঞ ইউএনআই গ্লোবাল ইউনিয়নের মহাসচিব ক্রিস্টি হফম্যান এবং ওয়ার্কার রাইটস কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভা।
এ সফরে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ছিল গ্যাপ ইনকর্পোরেটেড, পিভিএইচ কর্পোরেশন এবং ভিএফ কর্পোরেশন, যারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য ক্রয় করে।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা, এবং জেন্ডার সমতা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য অপরিহার্য।
যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকারের, ক্রেতাদের, নিয়োগদাতাদের, নিয়ন্ত্রকদের এবং শ্রম ইউনিয়নগুলোর যৌথ দায়িত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এর মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বিশেষভাবে তৈরি পোশাক খাতে সমিতি গঠনের স্বাধীনতা ও যৌথ দর-কষাকষির অধিকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে শ্রমিক অধিকারের উন্নয়ন।
শ্রম সংস্কার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায় । শ্রমিকদের স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও যোগদানের অধিকার এবং উন্নত কর্মপরিবেশের জন্য যৌথ দর-কষাকষি করার অধিকারকে শক্তিশালী করতে আমরা বাংলাদেশকে আরও উৎসাহিত করি।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেন শিল্প খাতের কার্যক্রম স্থিতিশীল কর্মসংস্থান, মানসম্পন্ন কর্মপরিবেশ এবং জীবিকা নির্বাহের উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করে, যা বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের উন্নতি নিশ্চিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্র গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ এবং ঢাকায় একত্রিত হয়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন, বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরে গর্বিত।
সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন চার বছর আগে বন্ধ হওয়া লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা। বকেয়া বেতনের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা। মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন অনেকে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আশুলিয়ার ঢাকা ইপিজেড এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শ্রমিকদের অবরোধের মুখে সড়কটির উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষোভকারী একাধিক শ্রমিক জানান, চার বছর আগে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে বন্ধ হয়ে যায় লেনী ফ্যাশন ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানা। এরপর কারখানা দুটির একটি বিক্রি করে দেন বেপজা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা থাকলেও শ্রমিকদের বকেয়া এখন পরিশোধ করা হয়নি।
তারা জানান, আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বকেয়া বেতনের দাবিতে ডিইপিজেডের সামনে জড়ো হন এ দু'টি কারখানার শ্রমিকেরা। পরে তারা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনকারী শ্রমিক বলেন, 'গত ৪ বছর ধইরা বেপজা আমাদের ঘুরাইতাছে। তারা বলে টাকা দিবো। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে ফোন দিয়া বলছে আন্দোলনে যোগ দিয়েন না, নভেম্বরের ৩০ তারিখে টাকা দেয়া হবে। গতকাল আবার বলছে টাকা দিবে আরও পরে। আমাদের নির্দিষ্ট কোন তারিখ কেন দিচ্ছে না। তারিখ না দিলে আমরা সড়ক ছাড়ব না।'
অপর শ্রমিক মো. আজাদ বলেন, 'আমাদের একটি ফ্যাক্টরি বিক্রি হলেও আমাদের বকেয়া বেতনের টাকা দেয়া হচ্ছে না। আগের ফ্যাসিবাদ সরকারের কিছু দালাল এখনো রয়েছে তারা আমাদের ঘুরাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ও শ্রম উপদেষ্টার কাছে আমাদের দাব্বি এসকল কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে হবে। বেপজার কর্মকর্তারা এখানে এসে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে টাকা পরিশোধের ঘোষণা না দেয়া পর্য়ন্ত আমরা সড়কেই অবস্থান করব।'
এদিকে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অবরোধের খবর জানতে পেরে অনেক পরিবহন চালক বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, 'শ্রমিকেরা ডিইপিজেডের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সড়ক ব্যবহারকারী যানজট এড়াতে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন।'
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, 'লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করছেন। এর আগেও তারা একই দাবিতে সড়ক অবরোধ করলে আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। আজকেও বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।'
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (বেপজা) এর জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ জানান, করোনাকালীন সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস এর শ্রমিকদের পাওনাদী পরিশোধের জন্য কাজ করছে বেপজা কর্তৃপক্ষ। কারখানাটি নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে। বিক্রয় প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করে দেয়া হবে।