শালীহর গণহত্যা দিবস

৪৮ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি শহীদ পরিবারগুলো



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
শহীদ নবর আলীর কবর পরিষ্কার করছেন স্ত্রী আছিয়া খাতুন,  ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

শহীদ নবর আলীর কবর পরিষ্কার করছেন স্ত্রী আছিয়া খাতুন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ২১ আগস্ট শালীহর গণহত্যা দিবস। স্বাধীনতার পর কেটে গেছে ৪৮ বছর। সুদীর্ঘ এ সময়ে সরকারের পালা বদল হয়েছে অনেকবার। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শালীহর গ্রামে পাকবাহিনীর গণহত্যায় শহীদ হওয়া ১৪ পরিবার আজও স্বীকৃতি পায়নি। সেদিন শালীহর গ্রামে পাকবাহিনীর গণহত্যায় ১ জন মুসলমান ও ১৩ জন হিন্দু শহীদ হয়। পাকবাহিনীর ভয়ে হিন্দু শহীদ পরিবারের মৃতদেহ সৎকার করতে না পেরে মাটিতে পুঁতে রাখে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এসব স্মৃতিচিহ্ন। শহীদ পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ তাদের খোঁজ নেয় না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566374327657.jpg

 

শহীদ মধু সূদন ধরের ছেলে সুপ্রিয় ধর বাচ্চু জানান, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও স্বজন হারানো পরিবারগুলো শহীদ পরিবারের রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পাননি। ২০১১ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকির শালীহর বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন। কিন্তু সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করায় বধ্যভূমিটি গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566374270053.jpg

 

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য এইচ এম খায়রুল বাসার বলেন, জেলা পরিষদের অর্থায়নে আমরা গত বছর বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ সংস্কার করে শহীদদের নামফলক স্থাপন করেছি। আগামী অর্থবছরে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৯৭১ সালের ১৬ মে  মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মধুসূদন ধরকে শালীহর গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে যায় পাকবাহিনী। এরপর তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট পাক বাহিনী একটি বিশেষ ট্রেনে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে বিসকা রেলওয়ে স্টেশনে নেমে পড়ে। এরপর বিসকার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সলিম উদ্দিন এবং আল বদর কমান্ডার আব্দুল মান্নান ফকিরের নেতৃত্বে উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত শালীহর গ্রামে হানা দিয়ে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও তাণ্ডব চালায় পাকবাহিনী। গুলির মুখ থেকে কলেমা পাঠ করে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান নগেন্দ্র চৌকিদার। তবে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায় গ্রামের বাসিন্দা ছাবেদ আলী বেপারীকে। এরপর দীর্ঘ ৪৮ বছরে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেদিন গ্রামে ঢুকেই পাকবাহিনী প্রথমেই গুলি করে হত্যা করে নিরীহ কৃষক নবর আলীকে। এরপর একে একে হত্যা করে মোহিনী মোহন কর, জ্ঞানেন্দ্র মোহন কর, যোগেশ চন্দ্র বিশ্বাস, কিরদা সুন্দরী, শচীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, তারিনীকান্ত বিশ্বাস, দেবেন্দ্র চন্দ্র নম দাস, খৈলাস চন্দ্র নম দাস, শত্রগ্ন নম দাস, রামেন্দ্র চন্দ্র সরকার, অবনী মোহন সরকার, কামিনী কান্ত বিশ্বাস, রায় চরণ বিশ্বাসকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/21/1566374142287.jpg

 

শহীদ পরিবারের সদস্য গীরিবালা বলেন, পাঞ্জাবিরা আমার শ্বশুর কামিনী কান্ত বিশ্বাস, কাকা শ্বশুর তারিনীকান্ত বিশ্বাস, কাকী শাশুড়ি কিরদা সুন্দরীকে চোখের সামনে গুলি হত্যা করে। কিন্তু আমার স্বামী জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে ঘুরে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পায়নি। কার্ড পায়নি আমার চাচী শাশুড়ি শহীদ কিরদা সুন্দরীর ছেলে অনিল কান্ত বিশ্বাসও।

শহীদ জ্ঞানেন্দ্র করের ছেলের বউ শীবানী কর বলেন, আমরা মাটির ঘরে থাকি। বাড়িতে নলকূপ ও শৌচাগার না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের লোকজন আমাদের কোনো খবর নেয় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ফারহানা করিম বলেন, মানবেতর জীবনযাপন করা শহীদ পরিবারের সদস্যরা সহযোগিতা চেয়ে যোগাযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

   

১৫৬ উপজেলায় প্রচার শেষ মধ্যরাতে, সোমবার ভোট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা শেষ হবে মধ্যরাত ১২টায়। নির্বাচন কমিশন ইসি জানিয়েছে, এই সময়ের পর কোনো ধরনের প্রচার, মিছিল করতে পারবেনা প্রার্থীরা।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান জানান, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোট গ্রহণ করা হবে। এই ধাপে মোট একহাজার ৮২৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তারমধ্য চেয়ারম্যান পদে ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযাযী, প্রচার শেষ করতে হয় ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা পূর্বে। ১৫৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে ২১ মে সকাল ৮টায়। তার ৩২ ঘণ্টা পূর্বে বলতে রোববার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারের সময় বোঝায়।

এদিকে একই সময় থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য ভোটের এলাকায় নিষেধ থাকবে মটর সাইকেল চলাচল।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ভোটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য মাঠে অবস্থান নিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা৷ কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থায় নিযে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ।

নির্বাচনি আচরণি বিধি প্রতিপালনের জন্য মাঠে রয়েছে ইউনিয়ন প্রতি একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া নির্বাচনি অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ সম্পন্ন করতে নিয়োজিত রয়েছেন ১৫৭ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আমরা আশাকরি আমাদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ছোটখাটো যে সব সমস্যা হয়েছে, সেগুলো যাতে না হয়, সেজন্য প্রশাসন ও পুলিশ অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন প্রথম ধাপের নির্বাচনের চেয়েও সুষ্ঠু হবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হযেছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন আগামী ২১ মে, ২৯ মে তৃতীয ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

;

সিলেট-কক্সবাজার রুটে ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবিতে মানববন্ধন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেট-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে সিলেটবাসী।

রোববার (১৯ মে) বিকাল ৫ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিলেট এবং কক্সবাজার দুটো এলাকাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সিলেট যেমন সুন্দর সিলেটের মানুষজনও সৌন্দর্যপিপাসু ও ভ্রমণ প্রিয়। কিন্তু সিলেট থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম ‘প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত’ কক্সবাজারে যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো ট্রেনে সার্ভিস নেই। যার ফলে সিলেটের মানুষজনকে পরিবার পরিজন নিয়ে কক্সবাজার যেতে প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়। এই ঝামেলা এড়াতে ও স্বল্প খরচে কক্সবাজার যেতে সিলেট-কক্সবাজার রুটে ট্রেন সার্ভিসের কোনো বিকল্প নেই। সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী এটি। এই ট্রেন সার্ভিস চালু হলে সিলেট এবং কক্সবাজারের পর্যটন আরও সমৃদ্ধ হবে, ব্যবসায়িক যোগাযোগও বৃদ্ধি পাবে। তাই এই রুটে ট্রেন সার্ভিস চালু করা এখন সময়ের দাবি।

বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের রেলপথ সেক্টর বরাবরই অবহেলিত। তাই এ ব্যাপারে যারা সংসদ নেতা আছেন তাদেরকে সোচ্চার হতে হবে এবং সিলেটের জনগণের দাবি সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলে ভ্রমণপিপাসু মানুষদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত হবে।

এই মানববন্ধনের সমন্বয়কারী ফটো সাংবাদিক মামুন হোসেন, ফটো সাংবাদিক পল্লব ভট্টাচার্য, সাংবাদিক নাবিল এইচ জানান, সিলেট-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু না হওয়া পর্যন্ত তারা সিলেটবাসীকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করবেন।

গনমাধ্যমকর্মী নাবিল হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবেশ কর্মী ও দৈনিক খবরের কাগজের সিলেট ব্যুরো অফিসের ফটো সাংবাদিক মামুন হোসেন ও ফটো সাংবাদিক পল্লব ভট্টাচার্য।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাসদ মার্কসবাদী সিলেট জেলা আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (ইমজা) সভাপতি সজল ছত্রী, ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্নয়ক আশরাফুল কবির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত, সিলেট ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম, সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন, সিলেট উইমেনস জার্নালিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাকিলা ববি, যুব ইউনিয়নের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিউর রহমান, সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান প্রান্তিক, পরিবেশকর্মী শাহ সিকান্দর শাকির, সমাজকর্মী কয়েস আহমদ সাগর, সংস্কৃতি কর্মী জয়ন্ত কুমার দাস।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মামুন হাসান, মাই টিভির সিলেট প্রতিনিধি মৃণাল কান্তি দাস, ফটো সাংবাদিক এইচ এম শহিদুল ইমলাম, আজমল আলী, রেজা রুবেল, যমুনা টিভি সিলেট ব্যুরো অফিসের ক্যামেরা পার্সন আহমদ শাহীন, ফটো সাংবাদিক এহিয়া আহমদ, কৃতিশ তালুকদার, বার্তা২৪.কম’র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (সিলেট) মো.মশাহিদ আলী, সংস্কৃতি কর্মী ও ডিবিসি নিউজের মাল্টি মিডিয়া রিপোর্টার নয়ন সরকার নিমু, ফটো সাংবাদিক রেজুয়ান আহমদ, সিলেট ভিউ ২৪.কম’র রিপোর্টার নিবেন্দু তালুকদার, দৈনিক শ্যামল সিলেটের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার রুম্মান আহমদ, ডিবিসি নিউজের সাস্ট প্রতিনিধি শাদমান সাবাব, যুক্তধারার সুরাইয়া আহমেদ রিমা।

;

শিশু জায়েদকে দত্তক পেতে ১০ আবেদন, দুটি বিবেচনায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটায় মা জায়েদা খাতুনের মৃত্যুর পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা দেড় বছরের শিশু জায়েদ হাসানকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে সভা করেছে শিশু কল্যান বোর্ড। সভায় দাখিল হওয়া ১০টি আবেদনের মধ্যে ২টি আবেদনকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

শিশুটিকে দত্তক দেয়ার বিষয়টি উচ্চ-আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশুটির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা করেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশুকল্যাণ বোর্ড।

জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাইয়ুম বলেন, সভায় শিশু জায়েদকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে আবেদনকারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা দিক গুরুত্ব দিয়ে দুইটি আবেদন বিবেচনায় রাখা হয়েছে। শিশু জাহিদের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে। আজকের সভার বিষয়ে উচ্চ-আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, তার মামা রবিন মিয়ার আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। তিনি একজন ভ্যান চালক। তার আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। এ কারণে তিনি সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জাহিদকে নিজের কাছে রাখতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সেই মর্মে ইতোমধ্যে তিনি লিখিত একটি অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন। এরপর শিশু কল্যান বোর্ডের আহবানে দশটি পরিবার জায়েদকে দত্তক নিতে আবেদন করেছিল। এর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা দিক গুরুত্ব দিয়ে দুইটি আবেদন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

সভায় ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

দত্তক দেয়ার বিষয়ে শিশুটির মামা রবিন মিয়া বলেন, জায়েদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি চাই আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।

সূত্রমতে, গত ৯ মে রাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন জায়েদা খাতুন (৩০) ও তার দেড় বছর বয়সী শিশুপুত্র জায়েদ হাসান। সেখানে গত ১০ মে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জায়েদা। তবে তখনও জায়েদার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জায়েদার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বিছানায় দেড় বছরের স্বজনহীন অজ্ঞাত শিশুর কান্নাকাটি ও চিৎকারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন খবর জানতে পেরে গত ১১মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান নিহত জায়েদার ভাই রবিন মিয়া।

পরে রবিন মিয়া ওইদিন বোনের মরদেহ বুঝে পেলেও শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে এসে রবিন মিয়া শিশুটিকে লালন পালন করতে প্রথমে সম্মতি জানালেও পরে তিনি অসম্মতি জানান। এরপর জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, সড়কে নিহত জায়েদা খাতুনের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দোররাবাজার উপজেলায়। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। গত ৯ মে দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাস্টাবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তারা আহত হলে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

;

আয় কমলেও ৫ বছরে লিপটনের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথমবার সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুই নির্বাচনী হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ৫ বছরে তার আয় আগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ কমলেও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

হলফনামায় উল্লেখিত তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৬ টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৯২ টাকায়। সে হিসেবে ৫ বছরের ব্যবধানে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ২ দশমিক ১৯ গুণ।

২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৬৪ লাখ ৩৬ হাজার ১২১ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হলফনামায় বার্ষিক আয় ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৩ টাকা দেখানো হয়েছে। যা আগের আয়ের ৪ ভাগের ১ ভাগ প্রায়।

২০১৯ সালের হলফনামায় শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো আয় ছিল না লিপটনের। নিজের একমাত্র আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা থেকে ওই টাকা বার্ষিক আয় হিসেবে দেখিয়েছিলেন তিনি।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৩ টাকা দেখানো হয়েছে। আয়ের খাত হিসেবে কৃষি খাতে বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৩ টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে। একই হলফনামায় প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় হিসেবে শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭০ টাকা ও চাকরি থেকে ১২ লাখ ২০ হাজার ৫৭২ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের হলফনামায় লিপটন দেখিয়েছিলেন স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমির (অর্জনকালীন মূল্য) মূল্য ১ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা, অকৃষি জমি ৮ লাখ ২৪৯ টাকা ও যৌথ মালিকানাধীন ১ কোটি ৫০ টাকার দালান।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর সম্পদের মধ্যে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের (অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য) কৃষিজমির মূল্য ২ কোটি ৮৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকা, অকৃষি জমির মূল্য ১ কোটি ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৫৪৯ টাকা, পৈত্রিক সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ৪৩ শতকের দালান ও দৃষ্টি পুল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের ফ্যাক্টরির ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮ হাজার ৩৯৪ টাকা।

এবারের হলফনামা অনুযায়ী, লিপটনের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৩ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকা, শেয়ার, বন্ড ও ঋণপত্রে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান ধাতু ২১ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ৮৫ হাজার টাকার দেখানো হয়েছে। একই হলফনামায় তার স্ত্রীর নামে নগদ, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র বাবদ ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে।

২০১৯ সালে দাখিলকৃত হলফনামায় দেখা গেছে, লিপটন অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩৫ হাজার ২৩৭ টাকা, বন্ড, শেয়ার ও ঋণপত্র ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৮৫ হাজার টাকা, একটি করে পাজেরো ও কার ৪০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছিল। এছাড়া ২১ লাখ টাকার ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার দেখানো হয়েছিল। একই হলফনামায় স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না থাকলেও ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছিল।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

লিপটন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়ন বোর্ডেও পছন্দের প্রার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু মহাজোটকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হন তিনি।

পরে ২০১৯ সালে সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন লিপটন। বর্তমানে তিনি ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

;