নতুন আইনে শৃঙ্খলা ফিরছে সড়কে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
নতুন আইনে শৃঙ্খলা ফিরছে সড়কে, ছবি: সুমন শেখ

নতুন আইনে শৃঙ্খলা ফিরছে সড়কে, ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮। নতুন আইনের প্রায় সব ধারায় বাড়ানো হয়েছে চালক ও পথচারীদের জেল-জরিমানার পরিমাণ।

এদিকে, আইনটি কার্যকরের পর থেকে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। বাড়তি জরিমানার ফলে চালকরাও নিয়ম মেনে সড়কে চলাচল করছেন। দৃশ্যপটও অনেকটা পাল্টেছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তান, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, সাতরাস্তা মোড়সহ বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে এলোমেলোভাবে চলাচল করা গাড়িগুলো ট্রাফিক সিগনাল মেনে নির্দিষ্ট জায়গায় অপেক্ষা করছে। প্রধান সড়কগুলোতে আগের মতো কোনো যানবাহন জেব্রা ক্রসিংয়ের সীমানা অতিক্রম করছে না। চালকরাও অনেকটা সচেতনভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন। আর ট্রাফিক পুলিশ-সার্জেন্টরা এখন ব্যস্ত সচেতনতামূলক প্রচারণায়। সিগনাল পড়লেই সেখানে সার্জেন্টরা চালকদের নতুন আইন সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন। আহ্বান জানাচ্ছেন আইন মেনে চলার।

নতুন আইন সম্পর্কে চালককে ধারণা দেওয়া হচ্ছে, ছবি: সুমন শেখ

রাজধানীর কাজলা ফ্লাইওভারে প্রতিদিন যত্রতত্র গাড়ি দাঁড়ালেও আজকের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। কেউ নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে গাড়ি থামালে ট্রাফিক সার্জেন্টরা তাদের নতুন আইনের শাস্তির বিষয়টি অবহিত করছেন। যাত্রীদেরও জানাচ্ছেন নতুন আইনের শাস্তির বিষয়।

আরও পড়ুন: রাইড শেয়ারিং বন্ধের উড়ো খবরে আতঙ্কে চালকরা

এ বিষয়ে দায়িত্বরত ডেমরা জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট আল মামুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমরা এখন সবাইকে সচেতন করছি। কারণ, নতুন আইন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন না করে প্রয়োগ করলে অনেকটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমরা এখন প্রচারণা করে যাচ্ছি। চালকরাও কিন্তু আমাদের প্রচারণায় আইন মানার বিষয়ে একমত পোষণ করছেন। আশা করছি আইনটি কার্যকর হলে সড়কে অনেকটাই শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। তবে এখন অনেকেই অতিরিক্ত জরিমানার বিষয়টি মাথায় রেখেই গাড়ি চালাচ্ছেন।’

গুলিস্তানে রজনীগন্ধা পরিবহনের বাস চালক শামসুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘নতুন আইন যেহেতু হইছে আমরাও তা মেনে চলব। কিন্তু সবসময় চালকদের দোষী করা হয়, এটি কিন্তু সঠিক না। কারণ, রাস্তায় যে দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে যাত্রী এবং পথচারীদেরও দোষ আছে। অনেক সময় মানুষ হুট করেই দৌড়ে রাস্তা পার হয়। তখন আমাদেরও গাড়ি ব্রেক করতে সমস্যায় পড়তে হয়। সুতরাং সবারই আইন মানতে হবে।’

সিগনালে গাড়ি থামানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ, ছবি: সুমন শেখ

ধানমন্ডিগামী যাত্রী আজিজুল হাকিম বলেন, ‘নতুন যে আইন হয়েছে, সেটা খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু শুধু আইন করলেই হবে না, প্রয়োগ করতে হবে। সবাই সচেতন হলে কিন্তু আর সমস্যা থাকবে না। আইনের বাইরেও সরকারসহ সবাইকে যথযথ পরিকল্পনা করতে হবে। গাড়ি কোথায় থামবে, কোথায় থামবে না সেটাও নির্ধারণ করে দিতে হবে। সরকার যদি সেই শৃঙ্খলা আনতে পারে, আমরাও কিন্তু সেভাবেই মেনে চলব।’

আরও পড়ুন: নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ট্রাফিক সার্জেন্টরা

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের সার্জেন্ট আব্দুল জলিল ও আসাদুজ্জামান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘নতুন আইন কার্যকরে আমরাও যথযাথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে এখন আমরা সচেতনতায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এখন কয়েকদিন যাবত মামলা দেওয়া বন্ধ আছে। আরও কয়েকদিন বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি।’

নতুন আইনের পর ট্রাফিক সিগনাল মেনে নির্দিষ্ট জায়গায় থামছে গাড়িগুলো, ছবি: সুমন শেখ

উল্লেখ্য, নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সে বছরই সংসদে পাস হয় সড়ক পরিবহন আইন। কার্যকর হওয়া নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে দোষী চালকের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে তা আদালতে উদ্দেশ্যমূলক হিসেবে প্রমাণিত হতে হবে। নতুন আইনে ভুয়া লাইসেন্স ব্যবহারকারী, লাইসেন্স ছাড়া, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো কিংবা যত্রতত্র রাস্তা পারাপারের অপরাধে চালক, হেলপার, মালিক ও পথচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে জেলের পাশাপাশি জরিমানা গুনতে হবে ৫ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। সব অপরাধই নতুন আইনে অজামিনযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

   

আশুলিয়ায় ৩ কথিত সাংবাদিক গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চাঁদা না দিলে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে আশুলিয়ায় ৩ কথিত সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বিভিন্ন কথিত মিডিয়ার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করে আসছিল চক্রটি। পরে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) আশুলিয়া থানা থেকে তাদের ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে তাদের আশুলিয়ার বাইপাইল পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে এক ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মাগুরা জেলার মো. শহীদুল ইসলাম (৩৯), সিরাজগঞ্জ জেলার মো. শাহীন (৩২) ও যশোর জেলার মো. আরমান হোসেন (৩০)। তারা আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া থেকে সাভার, আশুলিয়া ধামরাই এলাকায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে আসছিল।

তাদের কাছ থেকে একটি প্রেস স্টিকার লাগানো একটি মোটরসাইকেল, সত্য প্রকাশ, আইন সমাজ, জে জে বাংলা টিভি সহ ৬টি বিভিন্ন মিডিয়ার পরিচয় পত্র, টোয়েন্টি ফোর বিডি নিউজ ও এম টিভি নামে দুটি ২টি মিডিয়ার বুম, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, সংঘবদ্ধ চক্রটি এলাকার সাধারণ মানুষের বাসায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বা পুনরায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশলে বাড়ির মালিককে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা আদায়ের প্রতারণা করে আসছিলো।

র‍্যাব ৪ সিপিসি ২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাভার-আশুলিয়া আশপাশের এলাকায় ভূয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।

;

রাজশাহীতে জমজমাট ঈদের বাজার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের আগে রাজশাহীতে বেড়েছে কেনাকাটা। শহরের হৃদয়কেন্দ্রিক বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় এক নতুন প্রাণের সঞ্চার করছে। ঈদ উপলক্ষে বাজারে বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের পোশাক, জুতা, গহনা, ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য, যা ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ঈদের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলেছে।

শহরের অলি-গলি, মেইন রোড, শপিং মল এবং লোকাল মার্কেটে সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে কেনাকাটার উচ্ছ্বাস। বিক্রেতারা তাদের দোকানগুলোকে আকর্ষণীয় করে সাজিয়েছেন এবং বিশেষ ছাড়, উপহার, এবং অফার ঘোষণা করেছেন, যা ক্রেতাদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করছে। বাজারের এই জমজমাট পরিবেশ শুধু ব্যবসায়িক লেনদেনকেই বাড়িয়ে তুলছে না, বরং সামাজিক বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে তুলছে।

ঈদে রাজশাহীর বাণিজ্যিক এলাকায় পোশাক বিক্রিতে অভূতপূর্ব বৃদ্ধির সাক্ষী হতে যাচ্ছেন বিক্রেতারা। ব্যবসায়িরা আশা করছেন বিক্র প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বাজারের প্রান্তে প্রান্তে দোকানগুলো নতুন সংগ্রহে সাজসজ্জা করে উপস্থাপন করছে নানা রঙের ও ডিজাইনের পোশাক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার ছুটির দিনেও বেশ সরগরম রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া বাজার। রমজানের প্রথম দশদিন পার হওয়ার পরই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বিপণিবিতানগুলোতে। প্রতি বছরের মতো এবারো ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এগুলোর মধ্যে আলিয়াকাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরাকাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এবার বাজারে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণ নারীদের আলিয়াকাট আর নাইরাকাট জামায়। এছাড়া বাচ্চাদের পোশাক বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ।

১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক। নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটে প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষরা বেশি কেনাকাটা করে থাকেন। এবারও এই মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে।

রাজশাহী আরডিএ মার্কেটের রাজ্জাক ফ্যাশনের দোকানের মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এবারের ঈদে আমরা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বিক্রির লক্ষ্য নিয়েছি। আমাদের কাছে নতুন ডিজাইনের শাড়ি, পাঞ্জাবি, কুর্তা এবং শিশুদের পোশাকের এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। আমরা আশাবাদী, এবারের ইদে আমাদের বিক্রি ৫০০ কোটি টাকার বেশি হবে।

এদিকে নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী, এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ঈদ উপলক্ষে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি। তিনি বলেন, ঈদ আসতে অনেক সময় এখনও বাকি আছে। আমরা আশা করছি অনেক ক্রেতা হবে। তবে এখন পর্যন্ত ক্রেতা আসলেও তেমন ব্যবসা জমে ওঠেনি। আশা করি শেষ দশ দিনে বেশ ভালো জমে উঠবে।

আরডিএ মার্কেটের একজন ক্রেতা বলেন, এখানে এত বিভিন্ন ধরনের পোশাক দেখে মুগ্ধ হয়েছে। প্রতিটি দোকানে নতুন কিছু আছে, এবং দামের দিক থেকেও মনে হচ্ছে বেশ সুবিধাজনক। বিশেষ করে অফার ও ছাড়ের কারণে আমরা অনেক কিছু কম দামে কিনতে পারছি, যা সাধারণত অন্য সময়ে কিনতে গেলে বেশি দাম দিতে হয়।

বাজারে ঈদের বাজার করতে এসেছে শিশু জয়নব। বাবা আল মামুনের হাত ধরে এসেছে সে। তারও পছন্দ নাইরাকাট জামা। বাবা বলেন, দাম অনেক বেশি। গতবারে চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দুইগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন উৎসব, যত কষ্টই হোক না কেন বাচ্চাদের কিনে তো দিতে হবে। একটা নাইরাকাট জামা কিনেছি ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।

রাজশাহীর আড়ংয়ে শাড়ি কিনতে এসেছেন জাকিয়া ইয়াসমিন জুঁই। তিনি বলেন, রোজার দিনে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতেই আমি সাধারণত এই শো-রুমগুলোতে আসি। তবে এবার ইদের শাড়িগুলোর দাম একটু বেশি। সবমিলিয়ে বেশি দাম হলেও নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আছে। এতেই খুশি আমরা।

রাজশাহীর ইদ উৎসব এবার শুধু বাণিজ্যিক সফলতা নয়, সামাজিক সংহতি ও ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এই উৎসব প্রমাণ করে যে, ঐতিহ্য এবং সামাজিক বন্ধন ব্যবসায়িক সফলতার সাথে কীভাবে সমন্বয় সাধন করে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী। তিনি বলেন, রাজশাহী জেলায় এখনো তেমন কেনাকাটা জমে ওঠেনি। সাধারণত ঈদের শেষ ১০ দিনে বাজার জমে ওঠে। এবারও তাই হবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে শুধুমাত্র জামা-কাপড় ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে।

তিনি বলেন, সরকারি নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক উদ্যোগ নিশ্চিত করা হয়েছে যেন ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই একটি নিরাপদ ও আনন্দদায়ক কেনাকাটার অভিজ্ঞতা লাভ করেন। পুলিশ প্রশাসন বাজার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার করেছে এবং যানজট এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

;

ইফতার ও ঈদ সামগ্রী উপহার পাচ্ছেন ছাগলনাইয়ার ২০ হাজার মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২০ হাজার গরীব অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে ইফতার ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করছে সুলতান আহম্মদ ফাউন্ডেশন। রমজান উপলক্ষে এলাকার গরীব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান মজুমদার। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল ইউনিয়নে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছেন এবং ঈদ সামগ্রী বিতরণ করার কথা রয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে  উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের মুহুরীগঞ্জ হাই স্কুল মাঠে ইউনিয়নের ২ হাজার মানুষের মাঝে রমজানের উপহার দেয়া হয়। এর আগে মহামায়া, পাঠাননগর, রাধানগর ইউনিয়নে ইফতার বিতরণ করে ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান।

ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি মিজানুর রহমান মজুমদার নিজ উপজেলার সকল ইউনিয়নের মানুষদের রমজানের উপহার হিসেবে এ সামগ্রী দিচ্ছেন। রোজা এবং ঈদে উপজেলার ২০ হাজার মানুষকে এ উপহার দেয়া হচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় ৩ টি ইউনিয়ন শেষ করে আজ ঘোপালে বিতরণ করা হয়েছে। আগামীকাল শুভপুর ইউনিয়নে বিতরণ করা হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার সকালে ঘোপাল ইউনিয়নের মুহুরীগঞ্জ স্কুল মাঠে সারি সারি লাইনে দাঁড়িয়ে উপহার গ্রহণ করছেন সাধারণ মানুষরা। সবার হাতেই রয়েছে টোকেন, সেটি জমা দিলেই মিলছে ইফতার সামগ্রী উপহার।

এমন উপহার পেয়ে খুশি স্থানীয়রা। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যর উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক রমজানের এসময়ে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। একটি পরিবার এর মাধ্যমে রমজানে ভালোভাবে চলতে পারবে।

রহিমউল্ল্যাহ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমি দিনমজুরের কাজ করি।রোজা আসার পর তেমন একটা কাজ নেই। রোজা রেখে করতেও পারি না। পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছিল, এমন উপহার পেয়ে সত্যিই অনেক বেশি খুশি৷ রোজার মাসে পরিবারের সবাই ভালোভাবে খেতে পারব।

রেহানা পারভিন নামে আরেকজন বলেন, ইফতারের সকল সামগ্রী পেয়েছি, নিজের কেনার সামর্থ্য ছিল না।এমন উপহার পেয়ে বেশ ভালো লাগছে।

এমন উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যাতে সবাই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সে ডাকে সাড়া দিয়ে রমজানে ছাগলনাইয়া উপজেলার ২০ হাজার মানুষকে আমরা  ইফতার সামগ্রী এবং ঈদ উপহার বিতরণ করছি। পাশাপাশি পাশ্ববর্তী উপজেলাতেও এ সহযোগিতা করা হচ্ছে।এছাড়াও ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে  ঈদের ৫ দিন আগে থেকে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি

তিনি বলেন, অতীতেও আমরা সহযোগিতা করতাম সামর্থ্য অনুযায়ী। তবে করোনাকালীন সময়ের পর থেকে নিজ এলাকায় ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা, খেলাধুলা ও সমাজ উন্নয়নে কাজ করছি। ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের এগিয়ে নিয়ে আসতে এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বিতরণ অনুষ্ঠানে ঘোপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাগলনাইয়া পৌরসভার মেয়র এম মোস্তফা, ঘোপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন স্বপন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, ইউনিয়ন পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আইয়ুবের সঞ্চালনায় এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

;

দালালের হাতে জিম্মি ৪, নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে দাবি মুক্তিপণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভাগ্য বদলাতে বিদেশে পাড়ি দিয়ে দালালদের ফাঁদে জিম্মি হয়েছেন চট্টগ্রামের চার যুবক। দালালরা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে যুবকদের তুলে দিয়েছে সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাওয়া হচ্ছে মুক্তিপণের টাকার। ঘটনার শিকার চার জনই চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা।

তারা হলেন- আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. ওয়াসিম (২২), একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৯), আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২০)। এ ঘটনায় বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মি সদস্যদের পরিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ‘উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার চার যুবককে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

অপহৃতদের স্বজনরা জানায়, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম কাউকে মসজিদ, কাউকে হাসপাতাল আবার কাউকে দোকানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে নেন। প্রথমে যুবকদের ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের তুলে দেওয়া হয় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজানের হাতে।

মিজান তিন দিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেন। সাত দিন পর দুবাই থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি মিশর হয়ে তাদের লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে মিজান অন্য দালালের হাতে তুলে দেন চট্টগ্রামের এই চারজনকে। ওই দালালরাই এখন তাদের স্বজনদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করছে। মুক্তিপণ না পেলে অপহৃত যুবকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন।

জিম্মি যুবক বোরহান উদ্দিনের বড় ভাই সালাউদ্দিন বলেন, ‘২০ অথবা ২১ মার্চ আমার ভাইসহ চারজনকে জিম্মি করে দালালরা। এরপর ২৪ মার্চ সকালে মোবাইলে কল করে আমাদের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না হলে আমার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা পর পর হোয়াটসঅ্যাপে কল করে মুক্তিপণ পাঠানোর জন্য তাগাদা দিচ্ছে। কল করে বলে, আমি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিচ্ছি ওই অ্যাকাউন্টে টাকা দাও। টাকার জন্য প্রতিনিয়ত কল দিচ্ছে। মোবাইল বন্ধ থাকলে তখন ভয়েস মেসেজ পাঠাচ্ছে। টাকা কেন দিতে হবে জানতে চাইলে অপহরণকারীরা আমাদের বলে, তোমার ভাইকে আমাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাই এখন ছাড়াতে হলে মুক্তিপণ দিতে হবে।’

সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘মুক্তিপণের জন্য যারা যোগাযোগ করছেন সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলছেন। অপহরণকারীরা সবাই বাংলাদেশেরই লোক। যেসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর জন্য বলা হচ্ছে, সবগুলো চকরিয়া ব্র্যাঞ্চের। তাই আমাদের ধারণা, এই অপহরণের সঙ্গে বাংলাদেশের লোকজনই জড়িত।’

;