কুমিল্লায় মহাসড়কে ময়লার স্তূপ, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের কয়েকটি জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলায় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে ওইসব স্থানগুলোতে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। যাত্রী ও পথচারীরা নাক চেপে চলাচল করছেন।
এদিকে, ওই দু'টি মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিনদিন বাড়ছে। দেখলে মনে হয়, দুইটি মহাসড়ক যেন হয়ে উঠেছে আবর্জনা ফেলার ভাগাড়।
জানা গেছে, মহাসড়ক দু'টির পাশে অবাধে ময়লা ফেলে পরিবেশের মারাত্মক দূষণ করে চলেছে কুমিল্লা চারটি পৌরসভা। এগুলো হলো-চান্দিনা, লাকসাম, দাউদকান্দি ও চৌদ্দগ্রাম। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীরাও ময়লা ফেলেন এসব স্থানে। তবে এসব দেখার যেন কেউ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালতুলী এলাকায়, চান্দিনা উপজেলা পরিষদের রাস্তার প্রবেশ মুখে ধানসিঁড়ি এলাকায়, বুড়িচং উপজেলার নিমসার এলাকায় ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বালুজুরি এলাকায় মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে আছে। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসামে ভাটিয়াভিটা ও ছিলোনিয়া এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব স্থানে জেলার দাউদকান্দি, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাস পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলছে।
এছাড়া জেলার বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার, ময়নামতি ইউনিয়নের নাজিরাবাজার এলাকায় বেশ কিছু বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ময়লা ফেলে লাকসাম এবং চান্দিনা পৌরসভা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লাকসামের ভাটিয়াভিটা ও ছিলোনিয়া এলাকার কোথাও রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। আবার কোথাও আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে খাল, আবার কোথাও রাস্তার পিচের ওপরই আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এই এলাকায় রাস্তার পাশে আবর্জনা পুড়িয়ে দেওয়ায় মরে গেছে শতাধিক গাছও।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিসুর রহমান জানান, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে লাকসামের এসব স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়ছে। এতে সেখানকার পরিবেশ দূষিত হয়ে উঠছে। লাকসাম পৌর কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে মহাসড়কের ওপর ও পাশে ময়লা ফেলছে। পৌরসভার উচিত নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে লাকসাম পৌরসভার প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আবর্জনা ফেলার জন্য আমরা একটি জমি নিয়েছি। সেটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্থানটি ঠিক হয়ে গেলে আর মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলা হবে না।’
এদিকে, চান্দিনা পৌরসভার প্রকৌশলী মো. শাহিনসার হোসেন বলেন, ‘চান্দিনা পৌরসভার আবর্জনা ফেলার একটি স্থান রয়েছে। তবে মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
সড়ক ও জনপদ বিভাগ, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘মহাসড়ক আমাদের জাতীয় সম্পদ। এর সৌন্দর্য রক্ষায় সবার সচেতন থাকা প্রয়োজন। মহাসড়কের পাশে ময়লা না ফেলতে বাজার কমিটি ও পৌরসভাকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমরা এই বিষয়ে ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’