গৌরীপুরে দর্শক খরায় আশা সিনেমা হলের ব্যবসা লাটে
দেশীয় চলচ্চিত্রের মন্দা দশার কারণে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শ্যামগঞ্জের আশা সিনেমা হল দর্শক খরায় ভুগছে। এই অবস্থাতে হলটি চালাতে গিয়ে ক্রমাগত লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন মালিকপক্ষ।
মালিকপক্ষের দাবি স্যাটেলাইট চ্যানেল, স্মার্টফোন ও প্রযুক্তির কল্যাণে সহজেই বিনোদন সুবিধা পাওয়ায় সিনেমা হল বিমুখ হয়ে পড়ছেন দর্শকরা। পাশাপাশি দেশে ভালো গল্পসমৃদ্ধ সিনেমা তৈরি না হওয়ায় দর্শকরা হলে আসছেন না।
জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শ্যামগঞ্জ বাজারে হলি, তরঙ্গ ও আশা এই তিনটি সিনেমা হল ছিল। সড়ক ও রেলপথে যাতায়াত সুবিধার কারণে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলা শহর ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শকরা এই হলগুলোতে এসে সিনেমা উপভোগ করতেন। কিন্তু চলচ্চিত্রের মন্দাদশায় দর্শক শূন্যতার কারণে প্রায় ছয় বছর হলি ও তরঙ্গ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে শ্যামগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, আশা হলের দেয়ালে ল্যাংড়া মাসুদ ছায়াছবির পোস্টার সাঁটানো। তবে হলের সামনে কোনো লোকজন কিংবা দর্শক নেই। টিকিট কাউন্টারও ফাঁকা। হলের দোতালায় ডিসি কক্ষের আসনে কোনো দর্শক পাওয়া গেল না। তবে নিচতলায় প্রথম শ্রেণির কক্ষের আসনে পাওয়া গেল ৬/৭ জন দর্শক।
দর্শকরা জানান, মান্ধাতা আমলের আসন দিয়েই আশা সিনেমা হলে কোনো রকমের ব্যবসা চালাচ্ছে। দুর্গন্ধ ও ছারপোকা-মশাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে বিনোদন উপভোগ করতে হয় দর্শকদের। কি সিনেমা দেখছি কিছুই বুঝতে পারছি না।
হলের সামনে থাকা চা ও পান দোকানদাররা জানান আগে প্রতিদিন হলে ম্যাটিনি, ইভিনিং ও নাইট এই তিনটি ভাগে সিনেমা দেখানো হতো। কিন্তু এখন একটি শো চলার পর বাকি দুই শো’তে হলটি দর্শক শূন্য থাকছে।
আশা হলের পরিচালক বাহার উদ্দিন দুদু বলেন, ‘ভালোমানের গল্প না হওয়ায় দর্শকরা ছবি দেখতে চায় না। অনেক সময় বিগ বাজেটের ছবির প্রদর্শনী করলে প্রথম শোতে দর্শক হয়। কিন্তু গল্প পছন্দ না হলে দর্শকরা হলের বেঞ্চ চেয়ার ভাঙচুর করে। পরের শোগুলোতে আর দর্শক হয় না। এই অবস্থায় হল চালাতে গিয়ে ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে।’