এইচএসসিতে ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ
নরসিংদীর পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে বাধ্যতামূলক এই টাকা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ফরম পূরণের সাথে হোম ভিজিটের নামে অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ।
জানা যায়, চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি বিজ্ঞান শাখায় ২ হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২ হাজার ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী বিষয়ে এবং চর্তুথ বিষয়ে ব্যবহারিক থাকলে বিষয় প্রতি আরও ১৪০ টাকা যুক্ত হবে। কিন্তু এ কলেজে সুকৌশলে নির্ধারিত ফি নেওয়ার পরও বিবিধ নাম দিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আরও ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
এ বছর ওই কলেজ থেকে ১০৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে বলে জানান কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে অতিরিক্ত বিবিধ নাম দিয়ে কিভাবে টাকা নিচ্ছেন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ পাঠান। তিনি দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের হোম ভিজিট বাবদ ২০০০ টাকা,পরীক্ষায় পাস করার পর প্রশংসাপত্রসহ সনদের জন্য ১০০০ টাকা ও বাকি টাকা নতুন বিল্ডিং নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে নেয়া হচ্ছে ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, 'কলেজ থেকে এইচএসসি ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও হোম ভিজিটের নামে অতিরিক্ত টাকা রশিদের মাধ্যমে নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কষ্ট হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবিকৃত টাকা রশিদের মাধ্যমে জমা দিয়েছি। কিন্তু টাকাগুলো কোন খাতে কত টাকা আমাদের বলা হয়নি। এছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অভিভাবকরা ।'
জানতে চাইলে পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ পাঠান জানান, 'এটি প্রাইভেট কলেজ। এখানে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ নেই। বিবিধ নামে যে টাকা আদায় করা হয়েছে, সেগুলো হোম ভিজিট, প্রশংসাপত্র ও কলেজ উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।'
এদিকে পলাশ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিলন কৃষ্ণ হালদার জানান, 'নির্ধারিত টাকার বাহিরে অতিরিক্ত কোনো ধরণের টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। আর হোম ভিজিটের নামে টাকা আদায় করারও কোন বিধান নাই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস
দেশের ৫ জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া এক পূর্বাভাসে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল এবং ময়মনসিংহ জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বাড়তি অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এ অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ভারতে গিয়ে চার দিন ধরে নিখোঁজ বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
পরিবারের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) জানানো হয়েছে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১৬ মে) থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে স্বজনদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এ নিয়ে স্বজনেরা উদ্বিগ্ন।
আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস রবিবার বিকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যান। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান।
মুমতারিন ফেরদৌস ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবা ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। বিষয়টি জানাতে তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন।
ডিবি মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ভারতে একটি বাংলাদেশি মুঠোফোন ও একটি ভারতীয় মুঠোফোন ব্যবহার করেন। নম্বর দুটি কখনো বন্ধ আবার কখনো খোলা পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। আনোয়ারুল আজিমের কী হয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে।’
আনোয়ারুল আজিমের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, গত ১২ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। ১৪ মে পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তবে ১৬ মে সংসদ সদস্যের মুঠোফোন থেকে আবদুর রউফের কাছে ফোন আসে। তিনি ফোন ধরতে পারেননি। পরে আবার তিনি ফোন করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পান। এর পর থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১৪ সাল থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তিনি।
র্যাব হেফাজতে মৃত্যু, নান্দাইল থানার এসআই প্রত্যাহার
র্যাব হেফাজতে সুরাইয়া খাতুন (৫২) মৃত্যুর ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) রাতে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে নান্দাইল থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ মে) রাতে নান্দাইল মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, নান্দাইলে গৃহবধূ রেখা আক্তার (২০) মৃত্যু মামলার আসামি তার শ্বশুর আজিজুল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই নাজমুল হাসান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই আসামিকে নান্দাইল মডেল থানায় ডেকে নেন এসআই নাজমুল। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কিছুক্ষণ পরে তাদের ছেড়ে দেন। থানার সামনে আসতেই র্যাবের একটি দল আজিজুল ইসলামকে ছেড়ে দিয়ে সুরাইয়াকে আটক করে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এর পর শুক্রবার সকালে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়া খাতুনকে মৃত ঘোষণা করে।
এ মৃত্যুর ঘটনায় সুরাইয়া খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম র্যাবের হেফাজতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন শনিবার দুপুরে সুরাইয়া খাতুনের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয় উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামে।
নান্দাইল মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মজিদ জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসআই নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছেন। এর চাইতে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. শামীম হোসেন বলেন, বিভিন্ন কারণে তাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করেন, কাজের প্রতি তার আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। তাই, তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।