বাংলাদেশে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এলো ‘বেস্ট এইড’
ট্রাফিক জ্যাম উপেক্ষা করে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডাক্তারের চেম্বারে অপেক্ষা না করে আপনি যদি একদম নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পান তাহলে ভাবুন তো কেমন হয়?
ঢাকায় এমনই একটি ডিজিটাল সেবা নিয়ে এসেছে ‘বেস্ট এইড’ নামক স্বাস্থ্যসেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান। সময় সচেতনতার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশে সেবাটি প্রচুর জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চার তরুণ উদ্যোক্তার প্রচেষ্টায় ‘বেস্ট এইড’ থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের মানুষ। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি মূলত ঢাকার বাইরের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সেবার উদ্দেশ্য নিয়েই যাত্রা শুরু করেছে। যারা সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া হিজড়া সম্প্রদায় ও পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ফ্রি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
বেস্ট এইড কিভাবে কাজ করছে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর সাদেকুল ইসলাম শাওন জানান, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় ডিজিটাল প্লাটফর্ম এই বেস্ট এইড। প্রতিষ্ঠানটি মূলত অনলাইনে (স্কাইপে) বাংলাদেশ এবং ভারতের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কনসালটেন্সি দিয়ে থাকে। কোন রোগী যদি প্রাথমিকভাবে কোনো ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিতে চান তাহলে আমাদের দেওয়া হটলাইন (+৮৮০১৫৩৩৪৪৩১১৮) নম্বরে ফোন দিয়ে জানাবে। পরে আমাদের এখান থেকে কোনো একজন ডাক্তার রোগীকে ফোন দিয়ে তার পুরো সমস্যা শুনবেন। তিনি যদি কোনো সমাধান দিয়ে দিতে পারেন তাহলে রোগীকে টাকা খরচ করে আর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে না। আর যদি জুনিয়র ডাক্তার মনে করেন তার সমস্যাটি নিয়ে সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কনসালটেন্সি করা প্রয়োজন তাহলে তিনি সিনিয়র ডাক্তারের কনসালটেন্সি সময়টা রোগীকে জানিয়ে দিবেন। পরবর্তীতে রোগী এবং ডাক্তার নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনে থাকবেন এবং রোগীকে সঠিক পরামর্শ নিবেন। কনসালটেন্সি শেষ হবার পর কনসালটেন্সি প্রেসক্রিপশন আকারে রোগীর মোবাইলে কিংবা মেইলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
‘বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যদি কোনো পরীক্ষা করাতে পরামর্শ দেন তাহলে রোগী তার নিকটতম যেকোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করিয়ে আমাদের মাধ্যমে ডাক্তারকে দেখাতে পারবেন এবং তৎক্ষণাৎ পরামর্শ পেয়ে যাবেন। এখানেই আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি না। পরবর্তীতে রোগীর নিয়মিত ফলোআপ করবেন আমাদের ডাক্তারগণ। যাতে করে রোগী সঠিক সেবা পেয়ে সুস্থ থাকতে পারেন।
আবার ডাক্তার যদি মনে করেন এই রোগীকে সরাসরি দেখার প্রয়োজন রয়েছে তাহলে আমাদের অফিসে নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তার এবং রোগী দুইজনই এসে প্রাইভেট কনসালটেন্সি নিয়ে চলে যেতে পারবেন। এই পুরো সেবাটিই রোগীরা পাচ্ছেন মাত্র ৫৯৯ টাকায়। যদিও ভারতের প্রফেসর ডাক্তারের সঙ্গে কনসালটেন্সি ফি ১৫০০ টাকা।
সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটিতে এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মা ও শিশু ইন্সটিটিউট, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, পাবনা মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এর প্রায় ১০ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডিজিটাল প্লাটফর্মে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ভারতীয় ৮ জন ডাক্তার এই প্রতিষ্ঠানটিতে যুক্ত রয়েছেন। তাছাড়া ঢাকার ৬টি মেডিকেল কলেজের ১৩জন ইন্টার্নশিপ ডাক্তার তাদের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় পরিবর্তন আনার জন্য।