চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আবাসিক হল খোলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি দুই নম্বর গেট ঘুরে আবার ষোলশহরে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীদের দাবি, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বহিরাগত ছাত্রদলের হামলায় তাদের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। সবাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় যারা জড়িত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে, শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রশাসন হোস্টেল খোলার জন্য রাজি হয়। কিন্তু ছাত্রদল হোস্টেল না খোলার জন্য চাপ দেয় প্রশাসনকে। এ জন্য প্রশাসন তালিকা প্রকাশ করেনি। বুধবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেটিকে কেন্দ্র করে ঝামেলা করে ছাত্রদল। বহিরাগতদের নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তারা। এ সময় তারা হোস্টেলের জানালা–দরজা ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে অন্তত ৮ আহত হন।
সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষার্থী ইবনে হোসাইন, চবি সমন্বয়ক ফজলুল হক শ্রাবণ, আবু ওবায়দাহ, আদনান শরিফ, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক সমন্বয়ক ফাহিম, শিক্ষার্থী আল আমিন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মিনহাজ উদ্দীন, আহমেদ সাঈদ, আরমান শাহরিয়ার, তৌহিদুল ইসলাম, মহসিন কলেজ সমন্বয়ক এজিএম বাপ্পীসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কেরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আবাসিক হল খোলা নিয়ে গতকাল কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। আমরা বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি শুক্রবার শিক্ষার্থীদের সমাবেশকে সমর্থন দিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি হামলা ও দখলে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান। নিজে ঢাকা থাকায় এই সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলেও ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে জানান তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ছাত্রবাসে উঠাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
প্রায় ১৫ বছর পর বুধবার (২০ নভেম্বর) দুটি ছাত্রাবাসের জন্য নির্বাচিত ছাত্রদের তালিকা প্রকাশ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। তালিকায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রবাসে উঠতে যান। এ সময় সেখানে অতর্কিত ঢুকে পড়েন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তারা শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে বাধা দেন। কারও কারও ওপর আঘাত করেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বেশ কিছু জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়।
তবে ছাত্রদলের অভিযোগ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রাবাসে বৈষম্যহীনভাবে ফরম বিতরণের করা ও সময় দেওয়া এবং হলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কলেজ প্রসাশন ও ছাত্রশিবির যৌথভাবে সিট বণ্টন করার প্রতিবাদ করেছেন তারা।
তবে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে এসে তাদের হলে উঠতে বাধা দিয়েছে। প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালান। এমনকি হলের ফরমও নিতে দিচ্ছে না কাউকে।