সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা যথেষ্ট বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, যেই আপরাধকে আমরা পাঁচ বছরের সাজার আওতায় এনেছি তার জন্য এটি যথেষ্ট। এ আইনে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে। কারণ ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মৃত্যু হলে এবং তা যদি প্রমাণ হয় ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে।
সোমবার (০৬ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে নিজ দফতরে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বিষয়ে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সংসদে পাস হওয়ার আগে এই আইন কার্যকরের সম্ভবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোন পরিকল্পনা নেই। এটি সংসদেই পাশ হবে। মন্ত্রীসভায় আজকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাো হয়েছে, কিন্তু এটা অর্ডিনেন্স করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংসদে পাশ হলে আরো আলাপ আলোচনার সুযোগ থাকবে।
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর খসড়ার অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি, ইচ্ছেকৃত দুর্ঘটনায় চালক বা সংশ্লিষ্টদের যে শাস্তির দাবি শিক্ষার্থীরা করে আসছে তার সবটাই এ আইনে রয়েছে। সুতরাং এই আইনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, একটা অপরাধে এক পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এভাবে ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে তাকে আর ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আগে আমাদের দেশে ছিল না। এটা এবার এ আইনে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়ে এবং মটরযানের রেজিষ্ট্রেশনসহ যানবাহন নিয়নন্ত্রণের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, মটরযান নির্মাণ, যন্ত্রপাতি বিন্যাস, ওজনসীমা নির্ধারণ এবং পরিবেশ দুষণসহ বেশকিছু ইস্যুতে এখানে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও বীমা ব্যবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রাখা হয়েছে এ আইনে।
তিনি আরো বলেন, চালক সমিতি, মালিক ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে এ আইনে। এ ট্রাস্টি বোর্ডের কাজ হবে তহবিল তৈরি করা। দুর্ঘটনা ঘটলে ইন্সুরেন্সের সমস্যা সমাধানে যে সময় লাগে সেই সময়ে উক্ত তহবিল থেকে দ্রুত সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারে।
আনিসুল হক বলেন, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সড়ক ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত সবগুলো বিষয়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে যা যা প্রয়োজন তা এ আইনে যুক্ত আছে। রাজধানীতে সম্প্রতি বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যের ঘটনায় হওয়া মামলার পুলিশের তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যূনালে স্থানান্তরের দায়িত্ব আমাদের।
বহু বছর ধরে মালয়েশিয়া যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন মো. ইকবাল বাহার। ভাবতেন কোনও মতে সেখানে এক বার যেতে পারলেই সব মুশকিল আসান হয়ে যাবে। অভাব দূর হয়ে আলো ফিরবে সংসারে। তাই নিজের অটোরিকশা বিক্রি করে আর ধার-দেনা করে সেই দেশে বহুবছর ধরে বসবাস করে আসা এক আত্মীয়কে দিয়েছিলেন প্রায় তিন লাখ টাকা। এরপর মাঝখানে কেটে যায় তিনবছর। বহুবার ঘোরানোর পর দশদিন আগে ইকবালের ডাক পড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার। তারপর কয়েক দেশ ঘুরে পৌঁছে যান স্বপ্নের দেশেও।
কিন্তু মালয়েশিয়ায় পৌঁছে জীবিকা তো দূরের কথা, এখন জীবনঝুঁকিতে পড়েছেন ৩৫ বছরের ইকবাল বাহার। মানবপাচারকারী চক্রের ফাঁদে পড়ে পাম বাগানের একটি ছোট্ট গুমটি ঘরে জায়গা হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালীর এই তরুণের। সেখানে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাঁকে আটকে রেখে আরও কয়েক লাখ টাক মুক্তিপণ দাবি করছেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় ইকবালকে ঠিক মতো খাবারও দিচ্ছে না। কিছু বলতে গেলেই বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। দিনে একবার অল্প সময়ের জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দেয় তারা। আর ফোন দেওয়ার সুযোগ পেলেই স্বজনদের ইকবাল শুধু বলছেন একটা কথা, ‘রক্ত বেছে হলেও টাকা পাঠাও। না হয় ওরা বলে দিয়েছে আমাকে মেরে ফেলবে, তারপর লাশ পুতে ফেলবে’।
স্বপ্নপূরণের আশায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে পড়ায় ভেঙে পড়েছেন ইকবালের মা-বাবা-স্ত্রীসহ স্বজনেরা। ছোট ছোট চার সন্তান নিয়ে স্বামীর দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম দিন কাটছে স্ত্রী মরজিনা সুলতানার। ইকবালকে কীভাবে মানবপাচারকারী চক্রের ‘কারাগার’ থেকে মুক্ত করবেন তা কোনোভাবেই ভেবে উঠতে পারছে না অসহায় পরিবারটি। এমন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা চেয়ে সেনাবাহিনীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন ইকবালের ছোট ভাই মো. ফোরকান উদ্দীন। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার ও মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের দিকে তাকিয়ে আছে ইকবালের স্বজনেরা।
ইকবালের স্ত্রী মরজিনা সুলতানা জানান, তাঁর খালাতো ভাই রবিউল্লাহ রবি বহু বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী। সে ‘ফ্রি ভিসায়’ আমার স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে একমাত্র জীবিকার মাধ্যম অটোরিকশা বিক্রি ও ধার দেনা করে তার চাহিদা অনুযায়ী তিন বছর আগে আড়াই লাখ টাকা দিই। কিন্তু এত বছর ধরে বারবার মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘোরাতে থাকে, আবার টাকা ফেরত চাইলেও দেয়নি। এক পর্যায়ে আগস্টের শেষেরদিকে ফ্লাইট হবে জানিয়ে ঢাকায় নিয়ে কয়েকদিন রেখে পুনরায় বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এরপর ফ্রি ভিসার পরিবর্তে ট্যুরিস্ট ভিসার ব্যবস্থা করে রবিউল্লাহ। সেই ভিসায় ১৮ সেপ্টেম্বর রওনা হন আমার স্বামী। কয়েক দেশ ঘোরানোর পর তাঁরা ২২ সেপ্টেম্বর আমার স্বামীকে মালয়েশিয়া নিয়ে যান।’
এদিকে মালয়েশিয়া পৌঁছার পর জঙ্গলের পাম বাগানের কয়েকটি অন্ধকার কক্ষে ইকবালসহ ২২ জনকে আটকে রাখে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। এর মধ্যে চাহিদা অনুযায়ী মুক্তিপণ দেওয়ায় ২০জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি দুজনকে এখনো সেই আলোবাতাসহীন কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে ৫-১০ মিনিটের জন্য মোবাইল ফোন দিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়। শুরুতে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে চক্রটি। রোববারের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে ইকবালকে মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলার হুমকিও দিয়ে রেখেছে তারা।
রবি উল্লাহর মাধ্যমে ইকবাল মালয়েশিয়া যাওয়ার সব কাজ করলেও এখন তিনি দায় নিচ্ছেন না। রবির সঙ্গে ইকবালের পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করলে মো. আইয়ুব নামের একজনের মাধ্যমেই তিনি ইকবালকে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সঙ্গে জড়িত ঢাকাভিত্তিক একটি এজেন্সির মালিক মো. জিয়া নামের আরও একজন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এই বিষয়ে রবিউল্লাহ কিছু করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। এরই মধ্যে মো. আইয়ুব ও রবিউল্লাহর পরিচয় পাওয়া গেছে। এখন আইয়ুব নামের এই দালাল চক্রের হেফাজতেই আছেন ইকবাল।
এদিকে মালয়েশিয়ায় দালালের মাধ্যমে যাওয়া আরও কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকরিয়া-পেকুয়াকেন্দ্রীক মানবপাচারকারী চক্রের একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে সেই দেশে। তাঁরা ফ্রি ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এলাকার বেকার যুবকদের টার্গেট করেন। পরে কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়ায় নিয়ে গিয়ে সেখানে চাকরির ব্যবস্থা করার লোভ দেখান। সেই ফাঁদে পড়ে অনেকেই ৩-৪ লাখ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় গিয়েই আটকা পড়েন দালালদের ঢেরায়। এরপর মারধর করে বাড়িতে ফোন করিয়ে আরও কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় দালাল চক্রটি। সেই চক্রের অন্যতম সদস্য আইয়ুব, রবিউল্লাহ রবি ও জিয়া।
এর মধ্যে দালাল চক্রের প্রধান হোতা মো. আইয়ুবের বাড়ি চকরিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাকারা জালিয়া পাড়া এলাকায়। তিনি সেখানকার ছৈয়দ আহমদের পুত্র। চক্রের আরেক সদস্য রবিউল্লাহর বাড়ি পেকুয়ার রাজাখালীর বৈশ্যাঘোনা এলাকায়। তিনি সেখানকার আবুল হাসানের ছেলে।
মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে বসবাস করে আসা একজন তরুণ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ফ্রি ভিসা নামের কোনো ভিসার আসলে অস্তিত্ব নেই। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশের ভিসা প্রক্রিয়া এক এবং প্রত্যেকটি দেশে একই প্রক্রিয়াতে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। এসব দেশগুলোতে ফ্যামিলি ভিসা, ভিজিট ভিসা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা, খাদ্দামা (নারী গৃহকর্মী) ভিসা, তাব্বাক (পুরুষ গৃহকর্মী) ভিসা, ড্রাইভিং ভিসা, কোম্পানির ভিসাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা দিয়ে থাকে। কিন্তু দেশে কর্মসংস্থানের সংকটের কারণে গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত অসহায় মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে ফ্রি ভিসা নামের একধরনের ভিসার উদ্ভাবন করেছে দালালেরা। এসব ভিসা নিয়ে বিদেশ যাওয়া প্রবাসীর কাজের দায়িত্ব নিয়োগকর্তা নেন না। নিজের কাজ নিজেকে সন্ধান করতে হয়। কাজের জন্য সকাল-সন্ধ্যা ঘুরতে হয় রাস্তায় রাস্তায়। পুলিশের হাতে ধরা পড়লে জেল-জরিমানার ভয় তো আছেই, ফিরতে হতে পারে দেশেও।’
ট্যুরিস্ট ভিসায় নিয়ে যাওয়াও ইকবালের এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর দ্বিগুণের বেশি টাকা দেওয়ার পরও তাঁকে মুক্তিপণের জন্য আটকে রেখেছে দালালচক্র। এখন দালালচক্রের সেই মুক্তিপণের টাকা দেওয়া ইকবালের পরিবারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
ইকবালের শ্বশুর ইউসুফ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ধার দেনা করে বহুকষ্টে মেয়ে জামাই মালয়েশিয়া গেছে। যাওয়ার সময় আমার মেয়েকে এক টাকাও দিয়ে যেতে পারেনি। যে তিন লাখ টাকা রবিউল্লাহকে দেওয়া হয়েছে সবই ধার-দেনার। এখন মেয়ে চার নাতি-নাতনিকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে।’
একদিকে জীবনঝুঁকিতে স্বামী, অন্যদিকে মুক্তিপণের টাকা জোগাড়ের দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ইকবালের স্ত্রী মরজিনা সুলতানা। ইকবালের মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়িরাও ভেবে পাচ্ছেন না তাঁকে কীভাবে মুক্ত করবেন।
ইকবালের ছোট ভাই মো. ফোরকান উদ্দীন সেনাবাহিনীর কাছে এই বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে আমার ভাই মালয়েশিয়া গিয়েছেন। এখন সেখানে গিয়ে দালালের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন। আমার ভাই যেন দ্রুত মুক্তি পেয়ে সেই দেশে কাজ করে যেতে পারেন সেজন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার ও মালয়েশিয়া অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করছি।’
দালালচক্রের সদস্য রবিউল্লাহ রবির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইকবালের বিষয়ে কোনো দায় নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী মুক্তিপণ দিলেই ছাড়া পাবেন ইকবাল। আর এই বিষয়টি দেখছেন আইয়ুব, আমি না।’ এরপর ফোন কেটে দেন রবিউল্লাহ।
ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন দেশের ১২৮ জন তরুণ-তরুণী। এবার দেশের ৬৪ জেলায় ডিজিটাল জগতের ঝুঁকি ও নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ করবে এই ‘যুব অ্যাম্বাসেডর’রা।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) 'সাবধানে অনলাইনে' শীর্ষক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশ নেন যুব অ্যাম্বাসেডররা। মানিকগঞ্জের এইচআরডিসি ভবনে ওই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগো ফাউন্ডেশন এবং জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম টিকটক।
ইন্টারনেট আধুনিক জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর সাথে রয়েছে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, হয়রানি এবং সাইবার অপরাধের মতো নানা ঝুঁকি। বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪৬৫ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৮৩৪ মিলিয়নে পৌঁছেছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ায় নিরাপদ অনলাইন ব্যবহার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, জাগো ফাউন্ডেশন এবং টিকটক যৌথভাবে 'সাবধানে অনলাইনে' যুব অ্যাম্বাসেডর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করে।
প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ১২৮ জন যুব অ্যাম্বাসেডরদের ডিজিটাল জগতের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যুব অ্যাম্বাসেডররা নিজেদের কমিউনিটিতে এই জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে পারবেন, যা একটি নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
ক্যাম্পের মূল লক্ষ্য ছিল অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, ইতিবাচক ও কার্যকর যোগাযোগের দক্ষতা উন্নয়ন, এবং টিকটকের ইন-অ্যাপ সুরক্ষা ফিচারগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি সচেতন ও দায়িত্বশীল ডিজিটাল প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা হয়েছে, যারা নিজেদের কমিউনিটিতে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রচার চালাবে।
জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ বলেন, আধুনিক যুগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে, ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে বিভিন্ন নিরাপত্তা জনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাই জাগো ফাউন্ডেশন এবং টিকটকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সচেতনতামূলক 'সাবধানে অনলাইনে' ক্যাম্পেইন। বাংলাদেশে তরুণ তরুণীদেরকে অনলাইনে নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করতে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ইতিবাচক দিক ছড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার এই ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনের বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা দেশের তরুণদের মধ্যে অনলাইন ভিত্তিক নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে সক্ষম হব। একই সঙ্গে ধন্যবাদ টিকটক কে এই চমৎকার উদ্যোগটিতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমরা এই প্রশিক্ষণে অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত হতে পেরেছি এবং আমাদের নিজ নিজ কমিউনিটিতে এই জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। অনলাইনের ঝুঁকি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়ে আমরা নিজেদের এবং অন্যদেরকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হব।
সাবধানে অনলাইনে প্রকল্প ম্যানেজার মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে তরুণরা দিনের একটি বড় অংশ পার করছে অনলাইনে। তাদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা গত দুই বছর ধরে 'সাবধানে অনলাইনে' ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছি। এই বছর আমরা বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ২৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করব এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি করব।
সাবধানে অনলাইনে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে নিরাপদ ও দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। টিকটকের সহায়তায় এবং জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের কার্যক্রমে, এই ক্যাম্পেইন বাংলাদেশে একটি নিরাপদ এবং ইতিবাচক অনলাইন পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে আমাদের কম শব্দযুক্ত দেশে থাকতে হবে। অনেক ড্রাইভার হর্ন বাজিয়ে পাশের মানুষকে বিরক্ত করেন। হর্ন বাজানোর আগে ভাবতে হবে, এটি জরুরি কিনা। আমরা যদি বাস, ট্রাক বা গাড়িতে অপ্রয়োজনীয় হর্ন না বাজাই, তাহলে অনেক মানুষের স্বাস্থ্যহানি রোধ করা সম্ভব।’
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পরিবেশ অধিদপ্তরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রশিক্ষকদের শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, রেড লাইট থেকে গ্রিন লাইটে আসলেই সব গাড়ি হর্ন বাজানো শুরু করে। এটা উচিত নয়। হর্ন বাজানোর আগে ভাবতে হবে, এটি জরুরি কিনা। সকল ড্রাইভারকে হর্ন না বাজানোর জন্য সচেতন করতে হবে। বিশেষ করে, বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়ার সময় রিকশায় যে শব্দ হয়, তাতে অনেক সময় কানের সমস্যা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্মে উচ্চস্বরে নয়, নিচু করে কথা বলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এমনভাবে কথা বলতে হবে যাতে মানুষের বিরক্তির কারণ না হয়। আমরা মনে করি যে যত জোরে কথা বলতে পারি, সে তত শক্তিশালী। কিন্তু আসলে যুক্তিপূর্ণ কথা বলাই আসল ক্ষমতা। আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে পরিবর্তন আনলেই সমাজে ও রাষ্ট্রে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের পরিচালক প্রমুখ।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সরকারী আলিমুদ্দিন কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মছির উদ্দিন দুলালকে ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার তাকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া সুফিয়া পাম্প এলাকা থেকে ৪০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল ও ৫ কেজি ৩ শত গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেফতার করেন।
পুলিশ সুত্রে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ৪০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল ও ৫ কেজি ৩ শত গ্রাম গাঁজাসহ মছির উদ্দিন দুলালকে গ্রেফতার করেন তারা। পরে তাকে পুলিশে সোর্পদ করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন র্যাব।
মছির হোসেন দুলাল লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এবং ওই উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রুবেল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শরিফ বলেন, ‘রংপুর র্যাব-১৩ শুক্রবার মাদকসহ মছির উদ্দিন দুলালকে আটক করে। ওই দিন রাতে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’