কৃষকের দেয়া ২২ মণ সবজি বিতরণ করবে ‘উই ফর দেম’
এক ঝাঁক উদ্যোমী তরুণ করোনা ক্রান্তিতে দিনে রাতে সমানে লড়ছে। কখনো খাবার হাতে, কখনো বা ওষুধ নিয়ে। নতুবা হ্যান্ড মাইক আর রঙ তুলি নিয়ে ছুটছে ওরা। থেমে নেই ওদের করোনা যুদ্ধ। ওরা সবাই ‘উই ফর দেম’ এর স্বেচ্ছাসেবী।
করোনার প্রভাবে দিশেহারা অসহায় মানুষের জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করছে ওরা। ওদেরকে উৎসাহিত করতে অনেকেই বাড়িয়ে দিচ্ছেন সহায়তার হাত। এবার ‘উই ফর দেম’ টিমকে সাড়ে ২২ মণ সবজি দিয়েছেন এক কৃষক।
রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়ার কৃষক বিপ্লব কুমার এই স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে বিনামূল্যে তার ক্ষেতের ৮ মণ মিষ্টি কুমড়া এবং সাড়ে ১৪ মণ বেগুন দিয়েছেন।
সোমবার (৬ এপ্রিল) সকাল থেকে পালিচড়ার ভুরারঘাট মাধবপুর এলাকার ওই কৃষকের বেগুন ক্ষেতে কাজ করে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবী। ওদের সাথে যোগ হয় স্থানীয় আরও চার তরুণ।
সাড়ে চৌদ্দ মণ বেগুন তোলার পরে মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে চলে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম। সন্ধ্যা নাগাদ প্রায় ৮ মণ মিষ্টি কুমড়া তোলার যুদ্ধ শেষ। তবুও ওদের চোখ মুখে নেই ক্লান্তির ছাপ। ক্ষেত থেকে বস্তায় করে বেগুন আর মিষ্টি কুমড়া নেওয়া হয় গাড়িতে।
অন্যের পেট বাঁচাতে এসব তরুণের হাড়ভাঙা পরিশ্রম দেখে রীতিমত অবাক হন কৃষক বিপ্লব কুমার। তিনি জানান, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সমাজের অনেক মানুষ ঠিক মতো খেতে পারছে না। সেই তুলনায় আমার পরিবার অনেক ভালো আছে। অসহায় দুস্থ মানুষদের কথা চিন্তা করে আমি ক্ষেতের সবজি ‘উই ফর দেম’কে দিয়েছি। তারা ত্রাণ সামগ্রীর সাথে এসব সবজি বিতরণ করবে। ’
এদিকে উই ফর দেম এর প্রতিষ্ঠাতা জীবন ঘোষ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের পরিশ্রমে ক্লান্তি আসলেও চিন্তা শুধু একটাই করোনা যুদ্ধে অসহায়দের পাশে থাকা। আমাদের একটু কষ্টে যদি কয়েকজন মানুষের পেট ভরে তাতে মন্দ হয় না। আমরা সেই চেষ্টা করছি। কৃষক বিপ্লব কুমারের দেওয়া সাড়ে ২২ মণ সবজি অসহায় মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
সংগঠনটি পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সচেতনতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে বলেও জানান জীবন ঘোষ। ব্যক্তিগত অর্থায়নের পাশাপাশি অন্যের মানবিক সহযোগিতায় ‘উই ফর দেম’ স্বেচ্ছাসেবীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো, নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিতকরণে মার্কিং, জরুরি ওষুধ ডেলিভারি সেবা প্রদানসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়ে আসা পর্যন্ত এসব কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা চান সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা জীবন ঘোষ।