দিনাজপুর পশুর হাট ভারতীয় গরুর জন্য নিষিদ্ধ
দিনাজপুরে কুরবানির পশুর হাট সপ্তাহ খানেক আগে শুরু হয়েছে। রোববার ( ১৯ আগস্ট) থেকে জমে উঠেছে পশুর হাট। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এ জেলায় কোনো প্রকার ভারতীয় গরু হাটে উঠছে না এবং উঠবেও না।
সরেজমিনে দেখা গেল হাটগুলোতে পশুর চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বিক্রিও হচ্ছে। তবে ভারতীয় গরু নেই বলে জানিয়েছেন খামারি, বিক্রেতা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দিনাজপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো. শাহিনুর রহমান শনিবার বার্তা২৪.কমকে জানান, কোনো প্রকার ভারতীয় গরু আসছে না। হাটে ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। আমরা জেলা প্রশাসক ও বিজিবি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কোনো প্রকার ভারতীয় গরু প্রবেশে সতর্ক আছে তারা ।
খামারি আব্দুর রহিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি এবার ২৫টি ষাড় লালন পালন করেছি। ২০টি গরু ঢাকার পার্টি কিনে নিয়েছে এক সপ্তাহ আগে। ভারতীয় গরু নেই। এবার খামারিরা ভাল দাম পাচ্ছে। দামও বেশি নয়।
বদিউল আলম একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী। তিনি বলেন আমি কয়েকদিন ধরে আশপাশের হাট থেকে বারোটি ষাড় কিনে রেল বাজার হাটে বিক্রি করতে এসেছি। সব দেশি গরু। আসলে চাইলে ইন্ডিয়ান গরু পাচ্ছি না। বেশির ভাগ বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতাও খুশি, আমিও বেচে খুশি।
দিনাজপুরের একজন ক্রেতা বলেন, গরুর দাম আয়ত্বের মধ্যেই আছে। তবে বড় গরুর সংখ্যা এবারের হাট গুলোতে কম। জানলাম বড় গরু সব ঢাকার পার্টি কিনে নিয়ে গেছে।
প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান দিনাজপুরের কুরবানির পশুর পরিস্থিতি তুলে ধরে বিস্তারিত বার্তা২৪.কমকে বলেন, এবার দিনাজপুর জেলায় ১১ হাজার ৫৩২ টি খামার ও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ৬০ হাজার জন ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬৮ টি গরু ও মহিষ এবং ৬২ হাজার ২১২টি ছাগল ও ভেড়া আসন্ন কুরবানির জন্য প্রস্তুত করেছে। তবে দিনাজপুর জেলায় চাহিদা মাত্র ৮৫ হাজার গরু ও ৩৫ হাজার ছাগলের। বাকি পশু প্রতিদিন ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে।
তিনি বলেন,গত বছর বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা বাধ্য হয়ে অপেক্ষাকৃত কমদামে গরু-ছাগল বিক্রি করেছিলেন। তবে এবার এখান থেকে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় কুরবানির গরু পাঠানো হচ্ছে। খামারিরা এবার জানিয়েছেন তারা এবার ভাল দাম পাচ্ছেন। সামনের হাটগুলোতেও পাবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার ৬৬টি পশুর হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশি গরু উঠেছে। খামারিরা তাদের গরু-ছাগল হাটগুলোতে আনছেন। জেলার প্রধান পশুর হাট সদর উপজেলার শিকদারগঞ্জ, ফাসিলাডাঙ্গা, রেলবাজার, করিমল্লাপুর, কাহারোল উপজেলার কাহারোল বাজার, জয়নন্দ ও ছোট গড়েয়া, বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ, মাহেরপুর ও সুলতানপুর, চিরিরবন্দরের আমতলী, রানীরবন্দর, ঘুঘুড়াতলী, বীরগঞ্জের কবিরাজহাট ও ঝাড়বাড়ী, খানসামার পাকেরহাট, কাচিনিয়া, পার্বতীপুরের যশাইহাট, আমবাড়ী ও ভবানীপুর, বিরামপুরের বিনাইল, বিজুল ও কাটলা, নবাবগঞ্জের দাউদপুর, ভাদুরিয়া ও আফতাবগঞ্জ, বিরলের খোশালডাঙ্গী, কালিয়াগঞ্জ, মঙ্গলপুর ও ধুকুরঝাড়ী হাটে প্রতিদিন ব্যাপকসংখ্যক দেশি গরু-ছাগলের আমদানি হচ্ছে।