ভিআইপি চোর, ৮০ লাখ টাকা হজম করতে ২০ লাখ টাকা খরচ
রাজধানীর কোতয়ালী থানা এলাকার ইসলামপুরের ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখার সামনে থেকে ৮০ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ৬০ লাখ টাকা উদ্ধারসহ চার চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশ বলছে, ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৬০ লাখ টাকা পাওয়া গেলেও বাকি ২০ লাখ টাকা চোর চক্রের সদস্যরা বিভিন্নভাবে খরচ করে ফেলেছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম।
এঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. হান্নান ওরফে ব্রিফকেস হান্নান ওরফে রবিন ওরফে রফিকুল ইসলাম, তার সহযোগী মো. মোস্তফা, মো. বাবুল মিয়া ও মোছা. পারভীন।
এই চক্রের মূলহোতা হান্নানের বিরুদ্ধে ৩০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
এদিকে চুরি হওয়া বাকি ২০ লাখ টাকা সম্পর্কে ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, তারা (চোর চক্রের সদস্যরা) বিভিন্নভাবে তা খরচ করেছে। মূলত ৮০ লাখ টাকা হেফাজত করতেই তা খরচ করেছে।
পুলিশের এই যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, গত ১০ মে রাজধানীর পুরান ঢাকায় বিভিন্ন শাখা থেকে উত্তোলন করা ন্যাশনাল ব্যাংকের ৮০ লাখ টাকার একটি বস্তা গাড়ি থেকে খোয়া যায়।
দিনে-দুপুরে ঘটে যাওয়া ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। দায়ের করা ওই মামলাটি কোতয়ালী থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তিনি বলেন, তদন্তের এক পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চোর চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৬০ লাখ টাকা ও দুটি বিদেশি পিস্তল।
যেভাবে চুরি হয় ন্যাশনাল ব্যাংকের টাকা:
গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গ্রেফতারকৃত হান্নান ও তার সহযোগীরা মূলত টানা দলের সদস্য। ১০ মে দুপুরে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা নিয়ে যখন ব্যাংকের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন সিকিউরিটি গার্ড ইসলামপুর শাখায় টাকা আনতে ওপরে ওঠে, তখন একজন সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার গাড়িতে ছিল। এ সুযোগে হান্নানসহ তার অপর সহযোগীরা সেখানে এসে সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভারের সঙ্গে ভাব জমিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা-বার্তা বলতে থাকেন। টাকা আনতে দেরি হচ্ছে দেখে তারা গাড়ির ড্রাইভারকে ওপরে পাঠায়। ড্রাইভার ওপরে উঠলে হান্নানের সহযোগীরা সিকিউরিটি গার্ডকে বিভিন্ন কথা-বার্তায় অন্যমনস্ক রাখে। আর হান্নান গাড়ির দরজা খুলে টাকার বস্তা নিয়ে কোনো দিকে দৃষ্টিপাত না করে রিকশা নিয়ে আরমানিটোলার একটি বাসায় চলে যায়। পরবর্তী সময়ে তার সহযোগীদের ২৫ হাজার করে টাকা দিয়ে বাকি টাকা সে নিজের কাছে রেখে দেয়। পরে তার ভাগের টাকা রক্ষা করতে বিভিন্নভাবে ২০ লাখ টাকা খরচ করে সে।