কর্মহীন সাড়ে ৬ হাজার পরিবারকে গুড নেইবারসের খাদ্য সহায়তা
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া ও খাদ্য সংকটে থাকা দেশের সাড়ে ৬ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে দাতা সংস্থা গুড নেইবারস বাংলাদেশ।
দেশের ১১টি জেলায় ১৪টি প্রজেক্ট অফিসের মাধ্যমে এই সহায়তা প্রদান করে কমিউনিটি একশন টিম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সংস্থাটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুড নেইবারসের অর্থায়নে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৬০২টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল ও লবণ। এছাড়া জীবাণুনাশক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাবান ও ডিটারজেন্ট পাউডার বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ওই সব সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ গুড নেইবারস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এম মাঈন উদ্দিন মইনুল বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের শুরুতেই আমরা এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান, মাস্ক বিতরণ ও হাত ধোয়ার বুথ স্থাপনসহ বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। এরপর জরুরী খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কমিউনিটি একশন টিম ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম চলমান থাকবে। দ্রুতই দ্বিতীয় পর্যায়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।’
করোনা পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে সমাজের সকল বিত্তবানদের সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মো. মনজুর রহমান (৫০) ও মোছা. মাহবুবা (৩৯) নামে দুই জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে পৌর শহরের আমতলী মোড় বঙ্গবন্ধু সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন- সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন- ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের গোবিন্দনগর বিসিক এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. মনজুর রহমান ও পঞ্চগড় জেলার নতুনবস্তি এলাকার মো. ময়নুল হকের মেয়ে মোছা. মাহবুবা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ জানান, দুপুরে একই মোটরসাইকেলে করে মো. মনজুর রহমান ও তার সহকর্মী মোছা. মাহবুবা বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় পিছন থেকে একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে তারা দুজনে গুরুত্ব আহত হন। তাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের দুজনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ঘাতক ট্রাকটি পালিয়ে গেছে। ভিকটিমের মোটরসাইকেলটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এবিষয়ে থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রামে তরমুজের দোকানে ভোক্তা অধিকারের হানা, ২ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
জাতীয়
মূল্য তালিকা না থাকা ও বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করায় চট্টগ্রামে দুই দোকানিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিচালক মো. ফয়েজ উল্লাহর নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আজ নগরীতে তরমুজ বিক্রির প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। তদারকিকালে মূল্য তালিকা সংরক্ষণ না করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।
তারা ক্রয় রশিদ ও বিক্রয় রশিদ দেখাতে পারেনি। মূল্য তালিকা সংরক্ষণ না করলে বিক্রেতারা ইচ্ছা মতো দাম নেন। বাজারে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আমরা একজন ভোক্তার কাছে তথ্য পেয়েছি, একটু আগে তার কাছ থেকে এক পিচ তরমুজ ৮০০ টাকা চেয়েছেন।
দীর্ঘ এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে)। ফলে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে জিকে খাল। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ পাম্পটি অকেজো হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় পানিপ্রবাহ। এতে এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমির চাষে সেচ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয়ভাবে স্যালোমেশিন দিয়ে পানি উঠালেও তাতে কৃষকের খরচ ও দুর্ভোগ দুটোই বেড়েছে।
এদিকে জিকে সেচ প্রকল্পের অকেজো পাম্প দ্রুত সচলকরণের দাবিতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মানববন্ধন করেছে কৃষক জোট। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পানি শূন্য জিকে খালের মধ্যে অবস্থান নিয়ে এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে অংশ নেন সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কয়েকশ' কৃষক। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচি থেকে এ অঞ্চলে প্রত্যেক কৃষকের বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন কৃষক জোটের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষক জোটের সভাপতি এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস উষা, মহাসিন আলী, কৃষক জোটের প্রকল্প সমন্বয়কারী মশিউর রহমান, প্রকল্প কর্মকর্তা আসমা হেনা চুমকি প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আলমডাঙ্গা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষকেরা বোরো মৌসুমে ধান চাষে জিকে খালের পানির ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। এই অঞ্চলের কৃষকদের দিনের পর দিন অবহেলা করা হচ্ছে। তারা ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না। অতিকষ্টে তাদের ফসল ফলাতে হয়। মৌসুমের শুরুতেই সেচ পানির সংকট রয়েছে। দীর্ঘদিন সেচ পাম্প নষ্টের অজুহাতে কৃষকদের দুর্ভোগে ফেলে হয়রানির অভিযোগও করেন বক্তারা।
জানা যায়, গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলায় পানি সরবরাহ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রতি বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাস দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পদ্মা নদী থেকে তিনটি পাম্পযোগে এ চারটি জেলায় পানি সরবরাহ করা হয়। বাকি দুই মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাম্প বন্ধ রাখা হয়।
পাম্প দিয়ে ওঠানো পানি চার জেলায় ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে যায়। জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান এবং শাখা খালগুলোতে পানি থাকলে সেচ সুবিধাসহ আশপাশের টিউবওয়েল ও পুকুরে পানি স্বাভাবিক থাকে। পদ্মায় পানির স্তর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি পাম্পে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ২৮ হাজার ৩১৬ দশমিক ৮৫ লিটার পানি সরবরাহ হয়ে থাকে।
তিনটি পাম্পের মধ্যে ২০১৭ সালে প্রথমটি ও ২০২১ সালে দ্বিতীয়টি যান্ত্রিকত্রুটির কারণে অকেজো হয়ে পড়ে। এরপর মাত্র একটি পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়। কিন্তু সেটিও চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি যান্ত্রিকত্রুটির কারণে অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে বোরো মৌসুমের শুরুতেই পানি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামের কৃষক আশাদুল হক জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতে পানি না পাওয়ায় দেরিতে ধান রোপন করা হয়েছে। এ বছর সেচ খালের আওতাধীন ৯ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু হঠাৎ পানি শূন্য হয়ে গেছে খালটি। ধানি জমিতে দেখা দিয়েছে ফাটল। বিকল্প হিসেবে ডিজেল চালিত স্যালো মেশিনের সাহায্য পানি দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতিদিন ৫শ' টাকার তেল কিনতে হচ্ছে। এ বছর পানির অভাবে ধানের ফলন কম হবে, খরচও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষকদের ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা যান্ত্রিক পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে জিকে সেচ প্রকল্পের তিনটি পাম্পই যান্ত্রিকত্রুটির কারণে অকেজো হয়ে রয়েছে। সবশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিন নম্বর পাম্পটি অকেজো হয়ে যায়। ফলে বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ। তিনি আরও বলেন, আমরা পাম্পগুলো সচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে কাজ চলছে। তবে কবে নাগাদ এটি সচল হবে তা এখনি বলা সম্ভব না।
চলতি মৌসুমে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন সম্ভাবনা নেই। কারণ পাম্পটি চালু হলেও পদ্মা নদীতে বর্তমানে পানির লেভেল মোটামুটি অনেক কম। সব মিলিয়ে হয়ত এ মৌসুমে চালু করা সম্ভব হবে না।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরও ৩১ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৯ হাজার ৪৯৩ জনের। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ২১৯ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮৮৫টি পরীক্ষাগারে ৬০২টি নমুনা পরীক্ষায় ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ২৮ জনই ঢাকার রোগী। বাকি তিনজন চট্টগ্রামের। করোনা শনাক্তের হার ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তদের মধ্য থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ লাখ ১৬ হাজার ৪১৪ জনে। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।