এখনো টিকে আছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কবুতরের মাটির হাঁড়ি
এক সময় মাটির ঘরের কার্নিশে মাটির হাঁড়িতে ঝাঁক বেঁধে কবুতর বসে বাকবাকুম ডাক শোনাত। কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই ডাক এখন সচরাচর শোনা যায় না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে কয়েকটি গ্রামে কিছু সৌখিন মানুষ তাদের শখের বসে এখনো কবুতর পালছেন। তাদের কল্যাণেই আজও টিকে আছে মাটির দোতলা ঘরের কার্নিশে কবুতরের মাটির হাঁড়ি।
উপজেলার দিব্বস্থলী গ্রামের উলিয়াম বাসকি, হাঁকরইল গ্রামের মিলন আলী, আমজোন গ্রামের শফিকুল ইসলাম শখের বসে কবুতর পালন শুরু করেন। তাদের মাটির ঘরের দোতলার কার্নিশে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা রয়েছে শ’খানেক মাটির হাঁড়ি। কবুতর ওই হাড়িতে যেন সহজেই প্রবেশ করতে পারে সেজন্য হাঁড়ির নিচে লম্বা বাঁশ বাধা রয়েছে।
সবাই জানান, কবুতর পালন করলে ঘরবাড়ি, বাড়ির চালা নোংরা করে ফেলে। তারপরও শখ বলে কথা।
কবুতরকে খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন সরিষা, কাউন ও খুদ ছিটিয়ে থাকেন তারা। কিন্তু বর্তমানে ফসলে কীটনাশক প্রয়োগে ও মহামারিতে মারা যায় অনেক কবুতর।
নাচোল সদর ইউনিয়নের আমজোয়ান গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, তার বাবার অসুখের সময় এক জোড়া কবুতরের বাচ্চা বহু খুঁজে ১০০টাকা জোড়া হিসেবে কিনেছিলেন। তারপর থেকে ৩ জোড়া গোলা, ২ জোড়া গিরবাজ কবুতর পালতে থাকেন। বিগত ১৫ বছর যাবত কবুতর পালন করে আসছেন। তার বাড়িতে এখন ৫ জাতের প্রায় দেড়শ’ কবুতর আছে।
দিব্বস্থলী গ্রামের আদিবাসী উলিয়াম বাসকি জানান, দোতলা মাটির বাড়িতে প্রায় ২০০ কবুতর পালন করছেন। তার স্ত্রীর জন্য কবুতর কিনতে গিয়ে বহু হয়রানির পর নিজেই কয়েক প্রজাতির কবুতর পালন শুরু করেছেন।
হাঁকরইল গ্রামের মিলন জানান, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কবুতর কিনেছিলেন। এখন শখের বসে কবুতর পালন করছেন। বর্তমানে তার বাড়ির দোতলার কার্নিশে প্রায় ১০০ মাটির হাঁড়ি টাঙানো রয়েছে।