করোনাকালে ডিজিটাল প্রতারণা, কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আটক নয় প্রতারক, ছবি: বার্তা২৪.কম

আটক নয় প্রতারক, ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনাকালে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বেড়ে গেছে। এ সুযোগে এজেন্ট বা ব্যাংক ম্যানেজারের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এক কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি জালিয়াত চক্র।

রোববার (৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাসেম।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাব বলছে, দরিদ্র, ধনী, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, সব শ্রেণীর মানুষই তাদের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সম্প্রতি একটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলা করার পর ঘটনাটি নিয়ে মাঠে নামে র‌্যাব। সর্বশেষ শনিবার (৬ জুন) দিনগত রাতে রাজধানী এবং ফরিদপুরের ভাঙায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ১৩ জনকে আটক করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সারওয়ার বিন কাসেম জানান, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে করোনাকালে ঘরবন্দি মানুষ বেশি প্রতারিত হচ্ছেন। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের উপদ্রব বেড়েছে। প্রতারকরা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। একজন মাস্টার মাইন্ড পুরো টিমটি নিয়ন্ত্রণ করেন বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ১৪ লক্ষাধিক টাকাসহ মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড জালিয়াত চক্রের ১৩ জন আটক

তিনি আরও বলেন, হান্টার টিম প্রথমে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে কোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হেল্পলাইন নম্বর ক্লোন করা হয়। এমনকি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বরও ক্লোন করেন তারা। এজন্য নম্বর প্রতি এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। পরে কাস্টমার কেয়ার খুলে (১০ জনের টিম) বসে গ্রাহকদের ফোন দেয়। এর আগে গ্রাহকের মোবাইলে পিন বা কোড নম্বর পাঠিয়ে বলা হয়, দ্রুত কোড দেন, না হলে আপনার মোবাইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। যিনি কোডটি পাঠান, তিনিই ‘ফাঁদে’ পড়েন। প্রতারকরা ব্যাংক ম্যানেজার বা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নম্বর ক্লোন করে ফোন দিয়ে এমনভাবে কথা বলেন যে অনেক গ্রাহক তাদের খপ্পরে পড়ে যান।

গ্রাহকের টাকা পাওয়ার পর দ্রুত সেই টাকা উত্তোলন করে ফেলা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব টাকা তোলে জালিয়াত চক্র। যেমন- ঢাকার টাকা সিলেটে বা চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। আবার অনেক সময় টাকা তোলা না গেলে- টিভি, ফ্রিজ, এসি বা জামা কাপড় কিনে ফেলা হয়।

প্রতারকদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মালপত্র, ছবি: বার্তা২৪.কম

এতো সতর্কতার পরও এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান- যেমন পানের দোকান, সাইকেলের দোকান থেকে তাদের গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। সেই সঙ্গে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নজর রাখেন, যাতে তাদের তথ্য ফাঁস না হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন যে গত দুই মাসে এক কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। তাদের সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান এ র‌্যাব কর্মকর্তা।