মৌসুমি সবজি চাষে সফল কুষ্টিয়ার আইয়ুব আলী
মৌসুমি সবজি চাষ করে সফলতা এনেছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী। দীর্ঘদিন ধরে অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করলেও বছর তিনেক হলো অন্যের থেকে জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার সবজির আবাদ শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, সবজি বাগানে পরির্চযায় ব্যস্ত আইয়ুব আলী। তার বাগান ঘুরে দেখা মেলে কচু, ঢেঁড়স, মরিচ, বেগুন, শসা, ডাঁটা শাক, পুইশাকসব বিভিন্ন মৌসুমি সবজি।
কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তার পৈতৃক কোনো সম্পত্তি না থাকায় কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। ৫ সন্তানের জনক আইয়ুব আলী একটা সময় আটা-ময়দার ব্যবসা করতেন। কিন্তু এক ছেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। আরেক ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর ব্যবসা ছেড়ে আবার নেমে পড়েন কৃষি কাজে।
কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, এলাকার সৈয়দ মেম্বারের (ইউপি সদস্য) সবজি বাগানে দৈনিক হাজিরায় কাজ করতাম। কয়েরবছর কাজ করার পর বছর তিনেক আগে বাড়ির সাথেই তিন বিঘা জমি অন্যের কাছ থেকে লিজ নিয়ে সবজি চাষ শুরু করি। এখন সেই জমিতেই হরেক রকম সবজি চাষ শুরু করেছি।
চলতি মৌসুমে প্রায় একবিঘা জমিতে ডাঁটা শাক থেকেই তিনি ৬০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এছাড়াও ১০ কাঠা জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষ করে প্রায় ২ হাজার কেজি কুমড়া বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেছে। আবার সেই জমিতে শসা, পুইশাক, মরিচ ও বেগুন চাষ শুরু করেছে। এছাড়াও আরও ৫ কাঠা জমিতে কচুর আবাদ করেছে। তার মধ্যে সাথি ফসল হিসেবে ঢেড়শ চাষ করেছে।
তিনি বলেন, এই ৫ কাঠা জমিতে ইতিমধ্যে ৭ হাজার টাকার ঢেঁড়স বিক্রি করেছি। আর একমাস পরেই কচু উত্তোলন করবো। ফলন ভালো হবে বলেও আশা করছেন তিনি।
তবে তার আক্ষেপ, কোনো কৃষি কর্মকর্তাই তার কাছে আসেনা। পরামর্শও তিনি পান না কোনভাবেই। তাই নিজের চেষ্টা থেকেই এসব সবজির আবাদ করে চলেছেন। তার দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি আরও সফল হবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কৃষককে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে আমরা সবজির আবাদ করতে উৎসাহ দিয়ে থাকি। প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ বিভিন্ন উপকরণও বিতরণ করা হয়। কৃষক আইয়ুব আলীর মিশ্র এই সবজি বাগানের কথা আমি জানার পর বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সে অনেক ভালো করেছে। একই জমিতে নানান জাতের সবজি চাষ করে সে এখন লাভবান হচ্ছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে নানা ধরনের দিকনিদের্শনামূলক পরামর্শসহ যা যা সহায়তা প্রয়োজন তা দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।