স্বর্ণালঙ্কারের লোভে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে শ্বাসরোধে হত্যা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

খোরশেদ আলম ওরফে আরমান হোসেন

খোরশেদ আলম ওরফে আরমান হোসেন

ঢাকার আশুলিয়ায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের লোভে হনুফা বেগম (২৮) নামের এক ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে খোরশেদ আলম ওরফে আরমান হোসেন (২৭)।

হত্যার পর ওই নারীর কাছে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় আসামি খোরশেদ আলম। পরবর্তীতে ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারির পর আসামিকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

রোববার (২৮ জুন) বিকেলে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, নিহত হনুফা বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি গত ১৩ জুন ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি থেকে তার ছোট ভাই রুহুল আমিনের আশুলিয়ার বাগান বাড়ির বাসায় যান। গত ২০ জুন সকাল ১০টার দিকে নিহতের বড় বোন মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। পরবর্তীতে ওই বাসার ভাড়াটিয়া ছাকিয়াকে ভিকটিমের বড় বোন হনুফা বেগমের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার কথা বললে ভাড়াটিয়া গিয়ে মৃতদেহ দেখতে পায়।

নিহতের বড় ভাইসহ তার আত্মীয়-স্বজনরা বাসায় এসে জানতে পারে অজ্ঞাতনামা আসামি ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে গেছে । এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. রনি (৩৬) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানা এলাকা হতে আটক করে।

বিজ্ঞাপন

এসময় তার কাছ থেকে নিহত হনুফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল উদ্ধার করে।

গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের বরতা দিয়ে র‍্যাব জানায়, সে পেশায় একজন গার্মেন্টসকর্মী। সে গত ৫ জুন আশুলিয়ার জিরাবো বাগান বাড়ি এলাকার রুহুল আমিন মীরার বাসায় গার্মেন্টসকর্মী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়। সে গার্মেন্টসকর্মীর আড়ালে মূলত চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। নিহত হনুফা বেগম তার ভাইয়ের বাসাটি দেখাশোনা করায় আসামির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নিহতের কাছে বিল্ডিং মেরামত ও রং করার জন্য তার কাছে নগদ কিছু টাকা আছে বলে জানতে পারে। এছাড়াও হনুফার কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন দেখতে পায়। নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সে হনুফাকে টার্গেট করে।

খোরশেদ আলম আশুলিয়া এলাকায় নিজেকে আরমান বলে পরিচয় দেয় এবং তার বাড়ি রাঙামাটি বলে জানায়। সে আশুলিয়া এলাকায় এই মিথ্যা পরিচয় দিয়ে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি নেয়। সে বর্ণিত হত্যাকাণ্ডের পর তার ব্যবহৃত সিমকার্ডটি ফেলে দেয় এবং একই দিন সে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানাধীন তার ২য় স্ত্রীর বাবার বাড়িতে অবস্থান নেয়। ভিকটিমের নিকট হতে ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণালঙ্কার একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে ইতিপূর্বে বিভিন্ন এলাকায় আলাদা আলাদা নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছে। কিছুদিন চাকরি করার পর তার পরিকল্পনা অনুযায়ী সে মালিকের বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে তার অগোচরে কৌশলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে আসছিল।