বেফাকের নিজস্ব তদন্তেও উঠে আসে অনিয়মের কথা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম. ঢাকা
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের লোগো, ছবি: সংগৃহীত

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের লোগো, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বেফাকের সিনিয়র কয়েকজন দায়িত্বশীলের ফোনালাপ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার প্রেক্ষিতে কয়েকজনকে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বোর্ডের সিনিয়র দায়িত্বশীলদের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ রয়েছে বহু আগ থেকেই। ২০১৯ সালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার সময় প্রথমবারের মতো প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। চল্লিশ বছরের বেশি বয়সী প্রতিষ্ঠানটি দোষীদের চিহ্নিত করতে পারলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়। এরই মাঝে, সিনিয়র দায়িত্বশীলদের ফোনালাপের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে কওমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রচণ্ডভাবে ধাক্কা খান।

আরও পড়ুন:

কওমি অঙ্গনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে ধীরে ধীরে
অনিয়মই নিয়ম বেফাকে, মানা হয় না গঠনতন্ত্র!

বার্তা২৪.কম-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, এর আগেও বেফাকে বেশ বড়সড় অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোকে নানা কারণে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। বেফাকের কর্মরত দায়িত্বশীলরা বলছেন, তখন ওইসব অনিয়মের সুরাহা হলে, আজকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না।

ভুয়া চিঠি ছড়ানো হয় মাওলানা মাহফুজুল হকের নামে
ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই সম্প্রতি বেফাকের সহকারী মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকা দুর্নীতির বিষয়ে একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বেফাকের মরহুম মহাসচিব আবদুল জব্বার স্বাক্ষরিত ২০১৬ সালের একটি ‘ইত্তেলা’ চিঠিতে দাবি করা হয়, নারী নীতি আন্দোলনের খরচ বাবদ বেফাকের সাধারণ তহবিল থেকে মাওলানা মাহফুজুল হক অগ্রিম ৭ লাখ টাকা নিলেও তার কোনো ভাউচার জমা দেননি। অবশ্য সেটিকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার হিসেবে দাবি করে ১১ জুলাই বিবৃতি দিয়েছেন বেফাকের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এ জাতীয় কোনো ‘ইত্তেলা’ পত্র কখনও বেফাক অফিস থেকে ইস্যু করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

এদিকে মাওলানা আবু ইউসুফের সঙ্গে বেফাক মহাসচিবের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর বেফাকের পক্ষ থেকে এগুলো মিথ্যা বলে বিবৃতি দিতে বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা জোবায়েরকে চাপাচাপি করেন মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দস। কিন্তু তিনি বিবৃতি দিতে অসম্মতি জানান বলে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।

বেফাকের নিজস্ব তদন্ত কমিটিতেও প্রমাণিত হয় অনিয়ম
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মনীতি না মেনে ভবন নির্মাণে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, মিডিয়া ও প্রশিক্ষণ খরচের নামে বেতন-ভাতা পরিশোধসহ নানা ধরনের অনিয়মের বিষয় উঠে আসে আট আলেমের সমন্বয়ে গড়া কমিটির তদন্তে। পরপর তিন অর্থবছরের আর্থিক হিসাবের অডিট না করানোর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তদন্ত কমিটি প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অনিয়ম তদন্ত করে। এসময় বোর্ডের কয়েকটি আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে। ওই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন- মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহজুফুল হক, মাওলানা নূরুল আমীন, মাওলানা মুনীরুজ্জামান, মাওলানা দিলাওয়ার হোসাইন এবং মাওলানা ইসহাক।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মজলিসে আমেলার বৈঠকে জমা দেওয়া হলেও উল্লেখ করার মতো কোনো শাস্তি কাউকে পেতে হয়নি। এতে তখন সমালোচনার মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পরে অবশ্য নিম্নপদের কয়েকজনকে শাস্তি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়।

ভবন নির্মাণে অনিয়ম
স্টিলের অস্থায়ী ভবন নির্মাণের আগে বেফাক কোনো প্রকৌশলী বা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেনি বলে অভিযোগ করা হয় প্রতিবেদনে। এজন্য ভবন নির্মাণে পাঁচ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এ ছাড়া ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়ার আগে নির্মাণ কমিটির বৈঠক করা হয়নি। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে বেশি দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়, টিনসেড ঘর নির্মাণে মজলিসে আমেলার অনুমতি নেওয়া হয়নি এবং খরচের বিবরণীতে ঘরের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ উল্লেখ করা হয়নি।

কাগজ ক্রয়ে অনিয়ম
পরীক্ষা বিভাগে কাগজ ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। নিম্নমানের কাগজ কিনে বেশি দাম দেখানো হয়।

মিডিয়ার খরচের নামে অনিয়ম
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে ১ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন এবং ১৭ অক্টোবর বেফাক সভাপতি আল্লামা আহমদ শফীর উপস্থিতিতে রাজধানীর মিরপুরের আরজাবাদ মাদরাসায় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে মানববন্ধনে মিডিয়া খরচ বাবদ ৫৬ হাজার ৯৮০ টাকা এবং সম্মেলনে মিডিয়া খরচ বাবদ এক লাখ ৩১ হাজার ৬৭০ টাকা দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া মহাসমাবেশের যাতায়াত বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা। যেটাকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে তদন্ত কমিটি।

বেতন-ভাতা পরিশোধে অনিয়ম
বেফাকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওভারটাইম, ভাতা পরিশোধের ক্ষেত্রেও অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অগ্রিম বেতন ও ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করেননি। এসব ক্ষেত্রে মজলিসে আমেলার সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেফাকের সাতজন কর্মকর্তা নিয়মিত ছুটি না নিয়ে অফিসে কাজ করেছেন এবং ছুটির ভাতা নিয়েছেন। তবে তাদের কাজ করার বিষয়ে কোনও কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

ঋণে অনিয়ম
বেফাকের অনেক কর্মকর্তা ঋণ নিয়ে তা সময়মতো পরিশোধ করেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে হাফেজ ইলিয়াস ৭২ হাজার ৮১ টাকা ঋণ নিয়ে মাত্র ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। আর মাওলানা ফয়জুর রহমান ৩২ হাজার ৪১০ টাকা ঋণ নেন। তবে তিনি মারা যাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে দায়মুক্তির আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক হিসাবরক্ষক আবদুল মতিন ৯০ হাজার ৬৬৭ টাকা ঋণ নিলেও তা পরিশোধ করেননি।

প্রশিক্ষণ বাবদ খরচে অনিয়ম
মক্তব প্রশিক্ষক মাওলানা আবদুর রহিমের সব কাজ অগোছালো ও অনিয়মে ভরা। তার কাজের কোনও রেজিস্টার রাখা হয়নি। প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ দেখানো হলেও তিনি প্রতিষ্ঠানের কোনও আয় দেখাতে পারেননি। তিনি নিজের ইচ্ছামতো সহকারী নিয়োগ দিতেন। তাদের বেতনও নিজে রেখে দিতেন। এক পর্যায়ে তদন্ত কমিটি হিসাব চাইলে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এছাড়া তার কাছে বেফাকের সর্বশেষ ৩টি প্রশিক্ষণের আয়ের টাকা বকেয়া আছে।

এসব বিষয়ের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে, বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ফোন রিসিভ করেননি। আর সহকারী মহাসচিব মাওলানা নুরুল আমিন ব্যস্ত বলে ফোন রেখে দেন।

আগামী পর্বে: ক্ষুব্ধ তরুণ আলেমরা, চান অভিযুক্তদের শাস্তি

   

কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধে রাস্তায় নামলেন হাজারো মুসল্লি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। আবার রাজনীতির নামে কিশোর-তরুণদের দলে ভিড়িয়ে গড়া হচ্ছে কিশোর গ্যাং। সেই গ্যাংয়ের হাতে কিছুদিন আগেই মারা গেছেন এক চিকিৎসক। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যেও নিয়মিত মারামারির ঘটনাও ঘটছে। দিনের পর দিন এসব চলে আসলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছিলেন না এলাকাবাসী। এবার তাই তারা রাস্তায় নেমে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত থামানোর দাবি জানালেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আবদুর পাড়া আদর্শ সমাজ ও শাপলা শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির ডাকে এ-ব্লক বাস স্ট্যান্ড মোড়ের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। এতে আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের হাজারো মুসল্লি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মাদক সন্ত্রাস বন্ধ ও এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে একটি গণমিছিল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে মাদক সেবন চলছে এলাকায়। তার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবত এই এলাকাটিতে চিহ্নিত কয়েকটি পরিবারের নারী, পুরুষ, যুবক যুবতি প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও কেউ তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয় আবদুরপাড়া সমাজের মুরুব্বি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন সওদাগর বলেন, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আমাদের আবদুর পাড়া এলাকায় দুপুর ২টার সময় আনা খাতুন নামের এক মধ্যবয়সী নারীকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় এলাকাবাসী। বিষয়টি পাহাড়তলী থানাকে অবহিত করা হলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ঐ মহিলাকে মাদকসহ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এলাকাটিতে মাদক বিক্রেতা এবং কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। অসংখ্যবার জানানোর পরেও যারা এটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাই রাস্তায় নেমেছে আজকে।

আবদুর পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার মসজিদের খুৎবায়, এলাকার মিটিং সিটিং এ আমরা মাদক সন্ত্রাস, অসামাজিক কার্যকলাপ এবং সবচাইতে বেশি যেটা আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে সেটা হচ্ছে কিশোর গ্যাং। তাদের অত্যাচারে এবং এসব অপকর্মে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারছে না। উঠতি কিশোর-তরুণদের বাধ্য করে কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হতে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামেও এখানে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদও করেও কিছু হচ্ছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই এলাকাবাসী আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। সন্ধ্যায় পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা আমাদের সমাজের সঙ্গে বসবেন। উনাদেরও আমরা আমাদের এলাকার বিষয়গুলো বলব।

মানববন্ধনে সাংবাদিক মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আব্দুরপাড়া ও শাপলা এলাকায় যেভাবে কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা বাড়ছে এবং যে হারে মাদক ব্যবসা, সেবন ও পতিতা ব্যবসা বেড়েছে-এতে উঠতি শিশু-কিশোর ও যুব-তরুণরা বেশ ঝুঁকিতে আছে। কিছুদিন আগে আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক চিকিৎসককে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই না এই ধরণের ঘটনা আর ঘটুক। যারাই এসবের সঙ্গে জড়িত, তারা যত বড় প্রভাবশালীই হোক এদের আইনের আওতায় আনা ও যেভাবেই সম্ভব তাদের অপরাধকাণ্ড থেকে সরিয়ে আনতে প্রশাসনকেই মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে।

দক্ষিণ কাট্টলীর স্পৃহা ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মো. জমির আলম বলেন, এখানকার যুব সমাজ প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করছে না বলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদের মনোভাব সব সময় রাখেন তাহলে অচিরেই মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে।

মানববন্ধনে শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও যুব সমাজ প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সমাজের সবাই একতাবদ্ধ থাকলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুরুব্বিদের এবং এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের যদি নিরপেক্ষভাবে আমাদের পাশে পাই, তাহলে আমরাই এসব বন্ধ করতে পারব।

স্থানীয় মসজিদের মুসল্লি সরোয়ার জাহান মুকুল বলেন, আমরা পুলিশকে তথ্য দেই। কিন্তু অপরাধীরা তথ্যদাতার তথ্য জেনে যায়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। কয়েকদিন আগে বাইরে থেকে কিশোরদের এনে আমাদের এলাকার এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে গেছে। এভাবেতো চলতে পারে না। ৯৯৯ নম্বরে কল করলেও অপরাধীরা কলদাতার তথ্য পেয়ে যায়। উদাহরণ আকবরশাহ এলাকাটি। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার কারণে সন্তান ও পিতার ওপর হামলা হয়েছে। পিতা মারা গেছেন। অথচ চিহ্নিতরা, অভিযুক্তরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। আমি আজকের এই মানববন্ধনের কথা শুনে নিজ থেকেই এসেছি প্রতিবাদ করতে। সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

;

অস্ত্রের মুখে স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৫



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম,বগুড়া
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ার গাবতলীতে স্বামীকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ত্রীকে (২১) গণধর্ষণ করা হয়েছে। ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নে গোলাবাড়ী-তরনীহাট সড়কের পোড়াদহ এলাকায় এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এসময় স্বামীর ইজিবাইকে করে ওই নারী বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এই ঘটনায় গাবতলী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

গ্রেফতার ৫ জন হলেন- গাবতলী উপজেলার মহিষাবান মধ্যপাড়ার রাব্বি, আব্দুল অহেদ, হৃদয়, কাউছার ও মহিষাবান চকমড়িয়া গ্রামের নুর আলম ওরফে নিশাদ। তাদের বয়স ২১ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে বলে পুলিশ জানায়।

মামলা ও থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী গাবতলী উপজেলার মহিষাবান দহপাড়ার বাসিন্দা হলেও তার পুরো পরিবার বগুড়া শহরের লতিফপুর কলোনী এলাকায় বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজিবাইক চালক স্বামীর সাথে ওই নারী সারিয়াকান্দি উপজেলার প্রেম যমুনার ঘাটে ঘুরতে যান। সন্ধ্যা নাগাদ সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তারা গোলাবাড়ী-তরনীহাট সড়কের পোড়াদহ এলাকায় পৌঁছালে তাদের ইজিবাইকের গতিরোধ করে একদল যুবক। এরপর ধারালো অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে পার্শ্ববর্তী ইছামিত নদী সংলগ্ন সিঙ্গারবিল নামক স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা ইজিবাইকের মধ্যে স্বামীকে আটকিয়ে রেখে ওই নারীর মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সেখানে ফেলে রেখে ওই যুবকরা পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল ফোনে বিষয়টি তারা স্বজনদের জানালে ওই এলাকার কিছু লোক গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

গাবতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুস শুকুর জানান, বিষয়টি থানা পুলিশ অবহিত হওয়ার পরপরই সেখানে অভিযান শুরু করে। অভিযানে ওই ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার(১৯ এপ্রিল) এই ঘটনায় মামলা দায়ের হলে আটক ৫ জনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

;

কুষ্টিয়ায় বিল দখল করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিল দখল নিতে গিয়ে শাহেদ ইসলাম (২২) নামে জেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শাহেদ ইসলামকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শাহেদ ইসলাম কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সমর্থক ও শহরতলীর মোল্লা তেঘরিয়া এলাকার মহিবুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের জলমহাল (বিল বোয়ালিয়াবিল) দখলকে কেন্দ্র করে বোয়ালিয়া এলাকার বিলের বৈধ দাবীকৃত রাজিব ও মতিনের লোকজনের সঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সমর্থকদের গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় সাহেদ নামে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী। এসময় দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বোয়ালিয়া এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী রাজিব ও মতিন দীর্ঘদিন ধরে জলমহাল (বিল বোয়ালিয়াবিল) দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল। আমরা একটি মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা পেয়েছি। তাই আজ সকালে আমরা সেখানে গিয়ে আনন্দ উল্লাস করছিলাম। এ সময় হঠাৎ করেই রাজিব ও মতিনের লোকজন আমাদের লক্ষ্য করে অতর্কিত গোলাগুলি করলে শাহেদ ইসলাম নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে নিয়ে আমরা হাসপাতালে রয়েছি।

এ বিষয়ে রাজিব ও মতিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাদের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুতপা রায় বলেন, সাহেদ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এখন তিনি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি মারামারির খবর শুনে এলাকা পরিদর্শন করেছি। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে কিনা এটি আমার জানা নেই।

;

মসজিদের ফ্যানে ঝুলছিল খাদেমের মরদেহ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় দীঘিরপাড় শাহী জামে মসজিদের ভেতরে আকবর আলী শাহ (৬০) নামে এক খাদেম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আকবর আলী শাহের বাড়ি দীঘিরপাড় গ্রামে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে পুলিশ খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।

পাগলা থানার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ খায়রুল বাশার ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আকবর আলী শাহ দীর্ঘদিন যাবত পাঁচবাগ ইউনিয়নের দিঘীরপাড় শাহী জামে মসজিদে খাতেম হিসেবে কাজ করতেন। মসজিদে ভেতরে রাতযাপন করতেন তিনি। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন আকবর আলী শাহ। সকালে এলাকাবাসী মসজিদের ভেতরে ফ্যানে আকবর আলী শাহ লাশ ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পাগলা থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেন। দাম্পত্য জীবনে আকবর আলী শাহ ৫ সন্তানের জনক।

পাগলা থানার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ খায়রুল বাশার জানান, এখনও আত্মহত্যার কোনো কারণ জানা যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

;