কওমি অঙ্গনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে ধীরে ধীরে

বেফাকে অস্থিরতা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম. ঢাকা
বেফাক কর্মকর্তাদের ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে কওমি অঙ্গনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে ধীরে ধীরে, ছবি: সংগৃহীত

বেফাক কর্মকর্তাদের ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে কওমি অঙ্গনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে ধীরে ধীরে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমবারের মতো কওমি মাদরাসার ছাত্ররা তাদের বোর্ড বেফাকের (বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ) বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে নামতে যাচ্ছে। মহাসচিবসহ অভিযুক্তদের পদত্যাগের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘কওমি ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন। যদিও সংগঠনটির নেতৃত্বে কারা রয়েছেন, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। হতে পারে এটা তাদের কৌশল। তবে, তাদের দাবি সম্বলিত পোস্টার ফেসবুকে তরুণ আলেমরা শেয়ার করছেন।

দাবি মানা না হলে সংগঠনটি শুক্রবার (১৭ জুলাই) বাদ আসর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে মানবন্ধন করবে ও সেখান থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে। কওমি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন আন্দোলন নজীরবিহীন। এতোদিন তারা ধর্মীয় বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করে এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার প্রেক্ষিতে শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ এবং নানা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফসহ তিনজনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে বেফাক। তাতেও ক্ষোভ কমছে না আলেম-উলামা ও ছাত্রদের। তাদের দাবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ফোনালাপে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ পর্যন্ত বেফাকে হওয়া সব অনিয়মের বিচার করতে হবে। শুধু মাওলানা আবু ইউসুফ কিংবা তার সহযোগী নয়, মহাসচিবসহ যারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার করতে হবে।

তবে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটির সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রূদ্ধদার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আপাতত তিনজনকে বহিস্কার করে মহাসচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভিন্ন অভিযোগে অনেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত নজীর থাকলেও একসঙ্গে তিনজনকে অনিয়ম ও বেফাকের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় বরখাস্ত করার ঘটনা এবারই প্রথম। বরখাস্ত তিনজনই বেফাক মহাসচিবের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। তন্মধ্যে পরীক্ষা বিভাগে সঙ্গে কর্মরত ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আবদুল গণী বেফাক মহাসচিবের মাদরাসার শিক্ষক এবং সম্পর্কে মাওলানা আবদুল কুদ্দসের চাচা।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
হাটহাজারী মাদরাসার শুরা সদস্য মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ও মাওলানা নুরুল আমিন যথাক্রমে বেফাকের মহাসচিব ও সহকারী মহাসচিব। হাটহাজারীর হুজুর আল্লামা আহমদ শফীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত। আর সভাপতি আল্লামা শফী হচ্ছেন বেফাকের সভাপতি। এমতাবস্থায় হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন এ দুইজন। এটা নিয়ে আলেম-উলামা ও ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ জন্ম নেয়। এরই প্রেক্ষাপটে ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ও সহকারী প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল আমিনের বিভিন্ন অন্যায়, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কথা প্রকাশ হতে থাকে যোগাযোগ মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের সঙ্গে মাওলানা আবদুল কুদ্দস, মাওলানা নুরুল আমিন, মাওলানা আবদুল গণী, মাওলানা আনাস মাদানী ও মাওলানা ত্বহার কথোপকথনের একাধিক অডিও ভাইরাল হয়।

কী আছে ফোনালাপে?
ফাঁস হওয়া ফোনালাপকে কেন্দ্র করে শুরু হয় তোলপাড়। ওইসব ফোনালাপে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মেধা তালিকা নিয়ে জালিয়াতি, বেফাকের খাস কমিটি বাতিল, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগে তদবির, ছাত্রদের রেজিস্ট্রেশনে অনিয়ম, পরীক্ষার কেন্দ্র নিয়ে অনৈতিক সুবিধাগ্রহণ, স্বজনপ্রীতি, বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা জোবায়েরকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র, বেফাকের নেতৃস্থানীয় একাধিক আলেমের নাম তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ এবং সহকর্মীদের নামে নানাবিধ দুর্নাম রটনাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা প্রকাশ পায়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনেকটা চাপের মুখে তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়।

মাওলানা আবু ইউসুফ আগে থেকেই অভিযুক্ত
ফাঁস হওয়া পাঁচটি অডিও ক্লিপের একটিতে বেফাকের মহাসচিব ও আল হাইয়াতুল উলিয়ার ভারপ্রাপ্ত কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল কুদ্দুস এবং বেফাকের পরীক্ষানিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ, আরেকটিতে বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা আনাস মাদানী ও বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের কথোপকথন রয়েছে। পাওয়া গেছে বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ এবং ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস, বেফাকের পরীক্ষা বিভাগের অতিথি কর্মকর্তা মাওলানা আবদুল গনীর মধ্যকার নানা বিষয়ে কথোপকথন।

সবচেয়ে বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে।কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মেধা তালিকা নিয়ে সিরিয়াল জালিয়াতি, পরীক্ষার মারকাজ নিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ, স্বজনপ্রীতি, মুরব্বি আলেমদের নামে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য এবং সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম। এসব অভিযোগের বিষয়ে অনেক আগে থেকেই মাওলানা আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত দল কাজ করছে। বেফাকের ১০ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটিতে আছেন- মুফতি ওয়াক্কাস, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নুরুল আমিন ও মাওলানা মনিরুজ্জামান। ওইসব অভিযোগের এখন সুরাহা হয়নি। নতুন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বহিস্কার হতে হলো।

জানা গেছে, গঠিত তদন্ত কমিটি বিভিন্ন জটিলতার কারণে বেশি দূর এগুলোতে পারেননি। এ যাবত তদন্ত কমিটির দুটি মিটিং হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রকাশনা বিভাগ,পরিদর্শন বিভাগ, পরীক্ষা বিভাগ এবং হিসাব বিভাগের অনিয়ম খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তদন্ত কমিটির একজন সিনিয়র সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা যথাযথভাবে তদন্ত করতে পারিনি। সঠিক তদন্ত হলে ঘটনা এ পর্যন্ত গড়াতো না। আর বেফাকের অনেকে চান না- এ ঘটনার তদন্ত হোক। বিষয়টি না পারি বলতে, না পারি সইতে।’ মাওলানা আবু ইউসুফ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।

ক্ষোভ দানা বাঁধছে ধীরে ধীরে
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বেফাকের মিটিংয়ে মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দসকে পদত্যাগ করতে বলা হলেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। তাকে সমর্থন করেন মাওলানা আনাস মাদানী এবং মাওলানা সাজিদুর রহমান। মহাসচিব এ সময় বলেন, আমি এভাবে পদত্যাগ করবো না। আমি এখান থেকে কয়েকজনকে নিয়ে গিয়ে হাটহাজারী হুজুরের সাথে কথা বলবো। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) হাটহাজারীতে বেফাকের খাস কমিটির বৈঠক আহ্বান করেও বাতিল করা হয়েছে। বেফাকসূত্রে জানা গেছে, আল্লামা শফী এখন বলতে গেলে সংজ্ঞাহীন। তার এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার মতো সামর্থ্য নেই। মূলত আল্লামা শফীর দোহাই দিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।

বেফাকের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ। একাধিক সহ-সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলমান বিষয়গুলো খুব স্পর্শকাতর। এগুলো নিয়ে মুরব্বিরা কাজ করছেন। এর বেশি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

আগামী পর্বে: অনিয়মই নিয়ম বেফাকে, মানা হয় না গঠনতন্ত্র!

   

‘বিএনপি নির্বাচন বানচালে সফল হলে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হতো’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে সফল হলে দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হতো বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণকে নিয়ে তা ব্যর্থ করে দিয়েছে।

তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, বিদেশি প্রভুদের তোষণ, অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং নির্বাচন বানচালের সংবিধানবিরোধী অপরাজনীতি ছেড়ে শুদ্ধ রাজনীতি চর্চায় ফিরে আসুন। গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করুন।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি।

;

সম্পদের হিসাব জমার বাধ্যবাধকতা বাতিল হলে দুর্নীতি উৎসাহিত হবে: টিআইবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর সংশোধন করে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ উদ্যোগের ফলে দেশের প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীকে জবাবদিহিতা থেকে দায়মুক্তির পাশাপাশি দুর্নীতি সুরক্ষিত ও উৎসাহিত হবে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ উদ্যোগ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রহিত করে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের খসড়া সংশোধনী যাচাইয়ের পর এটি এখন প্রশাসনিক উন্নয়নবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হবে।

সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধি বাতিলের ফলে অসাধু সরকারি কর্মকর্তাদের আরও বেশি করে দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি চাকরিজীবী (আচরণ) বিধিমালার প্রস্তাবিত সংশোধনী সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ও শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা ঘোষণার ঠিক উল্টো। প্রথমে প্রতি বছর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও সরকারি কর্মচারীদের অনীহার মুখে পরবর্তীতে শিথিল করে তা পাঁচ বছর পর পর দেওয়ার বিধান করা হয়। এবং সেই বিধানও সঠিকভাবে পালনে অনাগ্রহ ছিলো। চাকরির শুরুতে সম্পদের বিবরণী দিলেও, পাঁচ বছর পর পর হিসাব হালনাগাদের বাধ্যবাধকতা গুরুত্বই দেন না সরকারি কর্মচারীরা। এখন এই বাধ্যবাধকতা সরিয়ে দেওয়ার অর্থ হলো প্রকান্তরে সরকারি কর্মচারিদের দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠতে ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করা। কেননা, সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার মতো কোনো বিধান না থাকলে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নির্ভয়ে দুর্নীতি, এর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুযোগ বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। একই সঙ্গে প্রাপ্য সেবা পেতে সরকারি অফিসে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে, অবৈধ অর্থ লেনদেন বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এবং সর্বোপরি সুশাসিত সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিতের স্বপ্ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব সরাসরি নিয়মিত জমা ও হালনাগাদের পরিবর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে দেওয়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন থেকে নেওয়ার যে যুক্তি, বাস্তবে তা অর্থহীন। কারণ, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। আইনের ৩০৯(২) এবং ৩০৯(৩) ধারা অনুযায়ী, কোনো কর্তৃপক্ষ কোনও সরকারি কর্মচারীকে এই আইনের অধীনে কোনো ট্যাক্স রিটার্ন, অ্যাকাউন্ট বা নথি উপস্থাপন, সাক্ষ্য বা প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপনের আদেশ দিতে পারে না। অর্থাৎ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুর্নীতি বা বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ আহরণের অভিযোগে কোনো ব্যক্তির আয়কর বিবরণী আদালতের নির্দেশ ছাড়া দেখতে পারবে না। ফলে জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়ার বদলে এই সংশোধনীর মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীরা নতুন সুরক্ষা লাভ করবেন।

২০০৩ সালে গৃহীত জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদ (আনকাক) এ জনপ্রতিনিধিসহ সকল সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রতি বছর দাখিল ও তার বছরভিত্তিক পর্যালোচনার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, ২০১২ এর মাধ্যমে এ অঙ্গীকারের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এ অবস্থায় এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আরো এক দফা প্রশ্নের মুখে পড়বে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ আনকাক-এর সদস্য দেশ, অথচ সরকারি কর্মচারীদের আচরণবিধিতে এমন সংশোধনীর উদ্যোগ নেওয়া বৈশ্বিক আদর্শিক চর্চা ও আনকাক-এর দুর্নীতিবিরোধী মূল নীতির সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। একইভাবে, “জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, ২০১২” যা প্রণয়নে সরকারি কর্মকর্তারাই মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তাকেও পদদলিত করা হবে। অসাধু কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সুরক্ষা ও বিচারহীনতা প্রদানের স্বার্থে এ আত্মঘাতী উদ্যোগ থেকে সরে আসার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।

;

খুলনায় ইঁদুর মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বউ-শাশুড়ির মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনার দাকোপ উপজেলার হরিণটানা গ্রামে ধান ক্ষেতে ইঁদুর মারার জন্য বৈদ্যুতিক সংযোগের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বউ ও শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায় , ধান ক্ষেতে ইঁদুর মারার জন্য বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে রাখে। ঘটনার দিন শাশুড়ি চপলা গাইন (৬৫) ধানক্ষেতের আইলে সবজি তুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এবং চিৎকার করেন। তার চিৎকার শুনে তাকে রক্ষার জন্য ছেলের বউ টুম্পা গাইন (৩৬) এগিয়ে আসেন। তিনিও কোন কিছু না বুঝে তার শাশুড়িকে স্পর্শ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে ঘটনাস্থলে দু’জনের মৃত্যু হয়।

নিহত চপলা লাউডোব ইউনিয়নের হরিণটানা গ্রামের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন গাইনের স্ত্রী।

দাকোপ উপজেলার লাউডোব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ যুবরাজ জানান, ধানক্ষেতে বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকায় ক্ষেতের আইলে সবজি তুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে আমি জেনেছি।

দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হক জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

;

কিশোর গ্যাংয়ের ১৪ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোর গ্যাং

কিশোর গ্যাং

  • Font increase
  • Font Decrease

কিশোর গ্যাং রিংকু গ্রুপ ও অনিক গ্রুপের মূলহোতা রিংকু ওরফে আরএম রিংকু এবং হাসিবুল হাসান অনিকসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। রাজধানীর মিরপুর মডেল থানা ও পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ধারালো চাপাতি, ছুরি, ক্ষুর, হেরোইন ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে র‍্যাব-৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিয়াউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতাররা হলেন- রিংকু ওরফে আরএম রিংকু (৩০), তানভীর মাহমুদ সাজ্জাদ (২৮), মো. ছাব্বির হোসেন (২৯), মো. রাজিব হোসেন (২৮)৷ এছাড়াও রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে রিংকু গ্রুপের আরও ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন- মো. হাসিবুল হাসান অনিক (২৬), মো. শহিদুল ইসলাম (২৯), মো. জামাল শিকদার ওরফে রবিন (৩২) ও মো. বেলাল হোসেন (২৭)। তাছাড়াও রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে ‘অনিক গ্রুপ’র দুজন সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় বেশকিছু কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। এরমধ্যে কিশোর গ্যাং রিংকু ওরফে আরএম রিংকু’ লিডারসহ ২০ থেকে ৩০ জনের সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা মিরপুর-২ এর আশেপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক সেবন ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, ‘রিংকু’ গ্রুপের লিডার রিংকু ওরফে আরএম রিংকুর বিরুদ্ধে মিরপুর, ফরিদপুর নগরকান্দা থানায় মাদক, দস্যুতা, চুরি, মারামারি এবং খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত ৪টি মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাজধানীর পল্লবী এলাকায় বেশকিছু কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। এরমধ্যে কিশোর গ্যাং ‘অনিক গ্রুপ’র লিডারসহ ২০ থেকে ৩০ জনের সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা পল্লবী থানাধীন বাউনিয়াবাদসহ আশেপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক সেবন ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, অনিক গ্রুপের লিডার মো. হাসিবুল হাসান অনিকের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় ৪টি মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চিহ্নিত এসব বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অত্যাচারে স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ ও অসহায় হয়ে পড়েছে।

এএসপি জিয়াউর রহমান আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং অনিক গ্রুপ ও রিংকু গ্রুপ’র লিডার মো. হাসিবুল হাসান অনিক ও রিংকু ওরফে আরএম রিংকু তাদের সহযোগীদের নিয়ে এলাকায় চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করে আসছিলো। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাধারণ লোকজনকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে গুরুতর আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।

তাছাড়াও ফুটপাতের দোকানদাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদেরকেও মারধর করে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

;