মামলা থেকে বাঁচতে আ’লীগে যোগদান
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা থেকে বাঁচতে বাগেরহাটের রামপালে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কর্মীদের দাবি, বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে নয়, নেতা-কর্মীদের নামে মামলা থাকায় তারা বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মজনু বলেন, ‘রামপাল সদরের ওয়ার্ড পর্যায়ের কিছু কিছু নেতা-কর্মী যারা দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন এবং কোনো পদে ছিলেন না, তারাই হামলা-মামলা থেকে বাঁচতে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন, তবে তারা উপজেলা পর্যায়ের কোনো নেতা-কর্মী নন।’
মঙ্গলবার বিকালে রামপালের ঝনঝনিয়া স্কুল মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সমাবেশে প্রধান অতিথি খুলনা সিটি মেয়র তালুকাদার আব্দুল খালেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এ সময় তালুকদার আব্দুল খালেক তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
বিএনপির নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘটনায় বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। রামপালের স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা নেতৃবৃন্দের দলীয় কর্মকাণ্ড নেয়। দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা কুক্ষিগত করে রেখে ব্যক্তিসুবিধা ভোগ করায় মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
বিগত সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা-হামলার ঘটনায় নেতৃবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা না করায়, খোজ-খবর না নেওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হতে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রামপালের নেতা-কর্মীরা তুহিন গ্রুপ ও মজনু গ্রুপে বিভক্ত। পরবর্তীতে বাগেরহাট জেলা বিএনপি দুই গ্রুপকে এক করে একটি কমিটি করেন। ঐ কমিটিও বেশ কিছুদিন দ্বিধা বিভক্ত থাকায় নেতাকর্মীদের সাথে দূরত্বের সৃষ্টি হয়।
এরপর যুবদল, কৃষকদল, শ্রমিকদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ-সংগঠনগুলো অপূর্ণাঙ্গ থাকায় দলের দুর্বল নেতৃত্বের কারণে বেশ পিছিয়ে পড়ে দলটি। এতে প্রতিপক্ষ রাজনৈকিত দল কৌশলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সহজেই তাদের দলে ভেড়াচ্ছেন।