এমপিদের পিছনে ফেলে নৌকা পেতে মরিয়া নতুন নেতারা!



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে সব কাজ গুছিয়ে এনে তফসিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরকারি দল আওয়ামী লীগ তাদের মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষ করে অপেক্ষায় চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণায়। তবে প্রার্থী বাছাইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে নীতিনির্ধারক নেতারা। সে চ্যালেঞ্জ বাড়িয়েছে দলীয় কোন্দল।

সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে প্রার্থী বাছাইয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বসেছিলেন সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা। এদিন সম্পন্ন হয় রংপুর ও রাজশাহী জেলার ৭২ প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন। তবে তালিকা পেতে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার পর্যন্ত।

এ সভা থেকে চিন্তা বেড়েছে বর্তমান মন্ত্রী সংসদ সদস্যদের। সভা শেষে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'মনোনয়ন থেকে এবার বেশ কয়েকজন বর্তমান সংসদ সদস্য বাদ পড়েছেন। তবে নামগুলো এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।' তাই আশায় বুক বাঁধছেন নৌকার হাল ধরতে চাওয়া নতুন প্রার্থীরা।

এছাড়াও পারিবারিক কোন্দল, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সাথে স্থানীয় নেতাদের মতবিরোধ, ভাইয়ের সঙ্গে ভাই, বাবার সঙ্গে ছেলে, ভাইয়ের সঙ্গে বোন, চাচার সঙ্গে ভাতিজা কিংবা স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়েছেন মনোনয়ন। এ অবস্থায় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা।

তবে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। সে হিসেবে নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এনিয়ে চিন্তার কিছু নেই। দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেলে সব কোন্দল মিটে যাবে। সবাই নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে।

দলটির নেতারা আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে না আসায় ক্ষমতার লড়াইয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল বাড়ছে। এর আগে, স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে কোথাও কোথাও ঘোষণা দিয়ে নৌকার বিরুদ্ধেও কাজ করতে দেখা যায় দলটির নেতাদের। এ অবস্থায় দলীয় কোন্দল প্রভাব ফেলতে পারে আসন্ন নির্বাচনেও।

চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় নেতারা

মাদারীপুর-২ আসন থেকে টানা ৭ বারের সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানকে এবার পড়তে হতে পারে অগ্নীপরীক্ষার মুখে। এ আসন থেকে তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমসহ ৪ কেন্দ্রীয় নেতা।

ফরিদপুর-১ আসনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা। এই আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য মো.আব্দুর রহমান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলের সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম লড়বেন মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে।

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা,সদরপুর,চরভদ্রাসন) আসনে মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য,সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও বর্তমান সংসদ সদস্য যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। এই আসনে আগে কাজী জাফরউল্লাহ মনোনয়ন পেলেও বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন স্বতন্ত্র নির্বাচন করে তাকে হারান। আসনটিতে শেষ পর্যন্ত কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার পর্যন্ত।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। হেভিওয়েট এই মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাথে লড়বেন আরেক হেভিওয়েট কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

মনোনয়ন দৌড়ে পেশাজীবীরা

কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই, নাঙ্গলকোট) আসন থেকে মনোনয়ন চান বর্তমান সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তার বিপরীতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ও এ আসন থেকে সংগ্রহ করেছেন মনোনয়নপত্র। অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতা ও মন্ত্রণালয়ে নিষ্ক্রিয়তায় খুলতে পারে নঈম নিজাম এর ভাগ্য।

বরিশাল-৩ আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১৩ জন। এরমধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে আলোচনার অগ্রভাগে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক। পাশাপাশি নতুন প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের নজরে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ জহির উদ্দিন খসরু।

কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিট প্রত্যাশী ইঞ্জি. মো. আবদুস সবুর। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের প্রেসিডেন্ট। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া। তিনি আসনটি থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত হলেও এবার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে বলেই জানাচ্ছেন ভোটাররা।

বর্তমানদের পিছনে ফেলে এগিয়ে নতুনরা

ঢাকা -১৩ (মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরে বাংলা নগর) আসনে মনোনয়ন যুদ্ধ জমে উঠেছে। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাদেক খান কে চাপে ফেলে মনোনয়ন চান হ্যাভিওয়েট দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বজলুর রহমান।

বরিশাল-৫ (সদর) বর্তমান সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। জোড় গুঞ্জন আছে আসনটি তে এবার মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এছাড়া এ আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও নিয়েছিলেন মনোনয়নপত্র। তবে পরে জমা দেননি বলে জানান তিনি।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আবারও মনোনয়ন তুলেছেন-বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহধর্মিণী আয়েশা আকতার জাহান ডালিয়া।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া -৫ (নবীনগর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ম্যানেজিং ডিরেক্ট এবাদুল করিম বুলবুল। এখানে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান। এছাড়া জোটের খেলায় আসনটি হাতছাড়া হতে পারে তার। এখান থেকে মনোনয়ন চান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ। জোর গুঞ্জন রয়েছে আওয়ামী লীগ এবার জোটের প্রার্থীর জন্য আসনটি ছেড়ে দিবে। এর আগে ২০১৪ সালেও জাসদের প্রার্থী শাহ জিকরুল আহমাদের জন্য আসনটি ছেড়েছিল দলটি।

ফেনী-১ (ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া) আসনে বর্তমান সাংসদ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এর সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। তবে আসনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও চাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে জোটের হিসেব নিকেশ না থাকলে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ই পেতে পারেন নৌকা প্রতীক।

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে নৌকা প্রতীক চান আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এছাড়াও তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও পিলখানা হত্যা মামলারও তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ। এছাড়াও আসনটি থেকে পুলিশের সাবেক আইজিপি, সাবেক সাংসদ ও শিল্পপতি সহ আরও অনেক হেভিওয়েট আছেন মনোনয়ন দৌড়ে। তাই কপাল পুড়তে পারে বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ এর।

মনোনয়ন ঘিরে কোন্দল

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য (সংসদ সদস্য) আফাজ উদ্দীন আহমেদের তিন ছেলে। তারা হলেন, বড় ছেলে অধ্যাপক নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস, মেজো ছেলে আরিফ আহমেদ বিশ্বাস ও ছোট ছেলে অ্যাডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন বিশ্বাস। মনোনয়ন লড়াইয়ে ছাড় দিতে চান না কেউ কাউকে।

ঠাকুরগাঁও-২ (বালিয়াডাঙ্গী-হরিপুর) আসনটি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন একই পরিবারের চার সদস্য। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল। তার বড় ছেলে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন,মেজো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী এবং ভাতিজা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জুয়েল।

পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসন থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর পরিবারের চার সদস্য নিয়েছেন মনোনয়নপত্র। তাদের মধ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্যের দুই ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ, সাকিবুর রহমান শরীফ, বড় মেয়ে মাহজেবিন শিরিন পিয়া ও জামাতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টু আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র জমা দেন।

ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী সেলিম ও তার দুই ছেলে সুলাইমান সেলিম, ইরফান সেলিম। গুঞ্জন আছে, দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়া ও ভূমি দখলের অভিযোগ থাকায় তার দুই ছেলের পক্ষেও কিনেছেন মনোনয়ন। আসনটি কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চান না তিনি।

সংসদ সদস্য হতে পদত্যাগ

কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু ও ঈদগাঁও) সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সোহেল সরওয়ার কাজল। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।

সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে মনোনয়ন পেতে শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ (আল-আমিন) পদত্যাগ করেছেন। এ আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য জয়া সেন গুপ্তা। এছাড়াও আরও পাঁচজন নৌকা পেতে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে মনোনয়নের আশায় পদত্যাগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও। আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদেও আছেন।

এছাড়াও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। প্রার্থীরাও তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণে করছেন নানা কসরত। সব হিসেব নিকেশের শেষ করতে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার পর্যন্ত। আপাতত অপেক্ষা সে পর্যন্ত।

   

দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত: চুন্নু



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত।

শনিবার (১৮ মে) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র ওপর মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ, আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি সফল হতে পারছে না। এই দুটি দলের বিকল্প হিসেবে সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে বেছে নিতে চায়। আগামী দিনে জাতীয় পার্টির উজ্জল ভবিষ্যত আছে। তাই, জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব ডাঃ রাকিব। পেশাজীবী পরিষদের লেহাজ উদ্দিন, সাংবাদিক নিশাত শাহরিয়ার, অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম, মোঃ নুরুজ্জামান, সোয়াইব ইফতেখার, ডাঃ মোঃ আজীজ বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ মোঃ আবু ওয়াহাব।

;

সরকার বয়কটে ইসরায়েল-ভারতের পণ্য বয়কট হবে: আলাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ‘ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য’ মন্তব‌্য করে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মুয়াজ্জিন হোসেন আলাল বলেছেন, এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েল ও ভারতের পণ্যকে বয়কট করা হবে। তাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটি’-এর উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে এক নাগরিক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলাল বলেন, ‘দ্য হিন্দুস্থান টাইমস’-এ একটি খবর দেখলাম, ভারত থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্র বহর ইউরোপের একটি দেশ স্পেন তাদের বন্দরে রাখার অনুমতি দেয়নি। তারা ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে সেই জাহাজকে।

একই সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশকেও স্পেন বলেছে, ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং তারা নিজেরাও বন্ধ করেছে। অথচ আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ যেখানে লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে একটি মানচিত্র অর্জন করেছে, সেখানে ইসরায়েলের থাবা প্রায় বসেছে। তা না হলে রাতের বেলায় গোপনে ইসরায়েল সংস্থার বিমান কীভা‌বে অবতরণ করে! ভারত থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে, সমর্থন করা হচ্ছে। স্পেনের মতো একটি দেশ এর প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করছি না!

তিনি বলেন, ভারত এত বড় আমাদের প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র অথচ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের জনগণের মন থেকে তারা উঠে গেছে। ফেলানি তো কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল না অথচ তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলেছে। তাকে কেন কাঁটাতারে ঝুলতে হয়েছিল! প্রতিদিন ‘গরু পাচারকারী’ আখ্যা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সীমান্তে হয় কি না আমাদের জানা নেই, একই অবস্থা আজ ইসরায়েল করছে ফিলিস্তিনিদের ওপর!

যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মিয়ানমারের গণহত্যার বিপক্ষে আমাদের পক্ষে গাম্বিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারে, তাহলে আমরা কেন আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারবো না! আজ এ সরকার ভারতকে তোষামোদ করে নিজে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিশ্বের সব মানবতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং, আমরা মনে করি, ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েলকে পূর্ণ বয়কট করা হবে; ভারতীয় পণ্যকেও বয়কট করা হবে। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

এ সময় সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

;

সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশে এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের ধারাবাহিকতা এবং স্থায়িত্বতায় দেশে এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা কেউ বলি না, আজকের বাংলাদেশের এতো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কেন? সরকারের ধারাবাহিকতা এবং স্থায়িত্বতার কারণে। এর কারণেই বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই কারণে বিশ্বের বিস্ময়ে রূপান্তরিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি আপনজন এই দেশের জনগণ। হতাশা কবলিত বাংলাদেশে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।

 সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমা করেছেন এটা সত্যি নয়: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, এটা সত্যি নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (১৭ মে) বিকালে তেজগাঁওয়ের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরের পর আমাদের বিভিন্ন সামরিক বাহিনীর ১১শ' অফিসারকে নাস্তা খেতে খেতে ফাঁসি দিয়েছিলো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকে বলেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, এটা সত্যি নয়। ১১ হাজার স্বাধীনতা বিরোধী কারাগারে ছিলো, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এদের মুক্তি দিয়েছিলো। যার মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলো ৭১৩ জন। এদের মুক্তি দিয়েছিলো জিয়াউর রহমান। এই ইতিহাস ভুলে গেছেন? কথায় কথায় আজকে বলেন, কারাগার। আমি কি মিথ্যা বলেছি? জিয়াউর রহমান কি করেছিলো এর প্রমাণ আছে।

বিএনপি ২৮ অক্টোবর পালিয়ে গিয়ে এখন বেসামাল হয়ে এখন প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, আমি তাদের বলতে চাই, মুক্তির কথা বলেন, লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য দলের ৬২ হাজার নেতাকে জেলে রেখেছিলো। আপনাদের কতজন নেতা জেলে আছে? ৩ হাজার আমাদের নেতাকর্মীর ও সরকারি অফিসারদের গুম করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

আমাদের নাকি প্রতিবেশী দেশ নিয়ন্ত্রণ করে, ফখরুল সাহেব শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি জয় বাংলার চেতনা। দেশি বিদেশি কোন শক্তি নয়। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে দেশের জনগণ, সংবিধান। এই সংবিধানের বাইরে আমরা যাবো না।

যত ষড়যন্ত্র করুক, বিদেশি শক্তির নামে হুমকি ধমকি দিতে পারেন। তিনি কোন বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না, শুধু বাংলাদেশের জনগণকে পরোয়া করেন।

শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পৃথিবীর সূর্য, আশার বাতিঘর, স্বপ্নের ঠিকানা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। গত ৪৪ বছরের সবচেয়ে বিচক্ষণ, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক, সবচেয়ে জনপ্রিয়, সবচেয়ে সফল কূটনীতিক এর নাম শেখ হাসিনা।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এড. কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এড. কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

;