সংসদে জাপার ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জাপার সাংগঠনিক সভায়  জিএম কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

জাপার সাংগঠনিক সভায় জিএম কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জনকল্যাণমূলক কোনো কর্মসূচি না দেওয়া এবং সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতারা। পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের মুখের ওপর অনেক শক্ত কথাই শুনিয়ে দিলেন তারা।

তবে প্রায় সবাই আশাবাদী যে জাতীয় পার্টি (জাপা) এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি, জাপার জনপ্রিয়তা রয়েছে। শুধুমাত্র কর্মসূচি না থাকা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অদূরদর্শিতার কারণে অনেকটা বেহাল অবস্থা। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য সংসদে সরকারের অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং জাতীয়, স্থানীয় ইস্যুতে কর্মসূচি দেওয়ার জোর দাবি জানান জাতীয় পার্টির রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভার নেতারা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি পার্টির জন্য নানা সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। কেউ কেউ জ্বালাময়ী বক্তব্য দিতেও ছাড়েননি।

পাবনা জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক কদর আলী মঞ্চে বসা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় মহাসচিব, আমাদের সংসদ সদস্য সংখ্যা মাত্র ২৬ জন হলো কেন? মহাজোট থেকে এতো কম আসন পেলাম কেন? আপনি জেলার নেতাদের কোনো খবর রাখেন? আপনার কাছে কতজনের ফোন নম্বর আছে?’

ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রাজি স্বপন বলেন, ‘কেন্দ্রের কোনো কর্মসূচি নেই, কোনো দিক নির্দেশনা নেই। আজ ঢাকায় আসার ব্যাপারে হতাশ নেতারা। কর্মীদের কথা হচ্ছে, তারা মনে করেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের দালালি করছে। দালালি করতে হলে সরাসরি আওয়ামী লীগের দালালি করব। জাতীয় পার্টি করব কেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জোট করলাম, সংসদ তাদের ছেড়ে দিলে উপজেলা তো আমরা পেতে পারতাম। আমরা কেন পেলাম না? আমাদের নতুন কর্মী তৈরি হচ্ছে না। সম্ভবত আমরাই শেষ প্রজন্ম। আমাদের ছাত্র সংগঠন শক্তিশালী না থাকায় নতুন কর্মী তৈরি হচ্ছে না। এভাবে চললে জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে যাবে।’

‘সংসদে সরকারি দলের চেয়ে জাতীয় পার্টির (বিরোধী দল) সংসদ সদস্যরা উন্নয়নের কথা বেশি বলেন। এটা করলে চলবে না। বিএনপির মাত্র ছয়জন সদস্য সংসদ কাঁপিয়ে দিচ্ছেন। আমাদের সংসদ সদস্যরা পারছেন না কেন? বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ, তাদের আমাদের করে নিতে পারতাম। আমার সে পথে হাঁটছি না। এভাবে পার্টিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়,’ যোগ করেন তিনি।

গাইবান্ধা জেলার সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন শাহীন বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে আমার ২৩০টি আসনে আওয়ামী লীগকে ওয়ার্কওভার দিয়েছি। কিন্তু আমি জনসভা করতে গেলে ওসি ফোন করে নিষেধ করেন। গোবিন্দগঞ্জের প্রার্থীকে এক রকম হুমকি দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। জাপার দুর্গ বৃহত্তর রংপুরে কেন মাত্র ছয়টি আসন। কর্মসূচি দেন, আগামীতে বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনে জাপার প্রার্থীরা জয়ী হবেন। সংসদে আমাদের ২৬ সদস্য বিরোধী দলের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’

পঞ্চগড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক বলেন, ‘জাতীয় পার্টির শিরদাঁড়া শক্ত করতে হবে। আমরা জাতীয় পার্টির জন্য জীবন যৌবন, অর্থ, মেধা সবই শেষ করলাম। পার্টির কাছ থেকে কিছুই পেলাম না। আমরা কী চাই, সেটাও নেতারা বুঝতে চেষ্টা করেন না। আমাদের অবস্থা ভিক্ষা চাই না মা কুত্তা সামলান অবস্থার মতো। পঞ্চগড় জেলা জাতীয় পার্টি সব সময় বঞ্চিত, আজও সবার শেষের টেবিলে স্থান দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ নেতাকর্মীরা হতাশ, আজকের এই সভায় কিছুটা আশান্বিত হলো। আপনারা কর্মসূচি দেন, জেলা, জাতীয় ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেন, মানুষ গ্রহণ করবে। আমি বলেছিলাম, যতদিন এরশাদ বেঁচে আছেন, তার সঙ্গে আছি। আমি এখন ক্লান্ত।’

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খাইরুল আলম বলেন, ‘জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারছে না। সংসদে যথাযথ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করুন। মানুষ আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষুব্ধ। আমাদের ভূমিকা ভালো হলে, মানুষ আমাদের গ্রহণ করবে। কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা গ্রামে যাচ্ছে না। এভাবে দলকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’

কুড়িগ্রাম জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সেন্ট্রাল ঠিক করেন। আমরা তৃণমূল ঠিক আছি। আমরা ট্রেনের বগিতে আছি, বগি ফেলে দিয়েন না। আমি ভোটের সময় দেখেছি, একজন বয়স্ক লোক আমাকে বললেন, একটু আগে ফোনে এরশাদ স্যারের সঙ্গে কথা হলো। পার্টির চেয়ারম্যান তৃণমূলের লোকজনের নাম জানেন। এটা বড়ো যোগ্যতা।’

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা জাপার সদস্য সচিব আব্দুল জলিল বলেন, ‘এক বছর পর চিঠি দিয়ে ডেকে আনেন। অন্য সময় কোনো খোঁজ খবর নেন না। সব জেলায় সাংগঠনিক কর্মসূচি দেন। বিভাগে বিভাগে সাংগঠনিক টিম থাকতে পারে।’

বোচাগঞ্জ উপজেলা জাপার সভাপতি জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘আজকের সাংগঠনিক সভার শুরুর প্রথমে সাংগঠনিক প্রতিবেদন থাকা উচিত ছিল। প্রতিবেদন থাকলে আমরা বুঝতে পারতাম, আমাদের সংঠনের অবস্থা কী। আমাদের পার্টিতে নির্বাচনের ১৫ দিন আগে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়। এটা বন্ধ করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য এখনই প্রার্থী মনোনীত করে তাকে মাঠে নামিয়ে দিতে হবে।’

এজন্য সাংগঠনিক টিম পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে চূড়ান্ত করতে হবে। সাংগঠনিক টিমকে যেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রভাবিত করতে না পারেন। পদ দিয়ে লাভ নেই। কর্মসূচি দেন, আমাদের কাজ দেন, পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে। বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এই সময়ে আমরা এগিয়ে গেলে জনগণ আমাদের কাতারে এসে দাঁড়াবে বলে মনে করেন তিনি।

এ সময় মাইক নিয়ে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা আট বিভাগে আটটি সাংগঠনিক টিম গঠনের চিন্তা করছি। কেউ বলেছেন স্ব-স্ব বিভাগ থেকে টিম করার জন্য, কেউ বলছেন বাইরে থেকে করার জন্য। আপনারা এ বিষয়ে মতামত দিতে পারেন, কোনটা হলে ভালো হয়।’

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূর আলম যাদু বলেন, ‘আমাদের আসনটি জাপার দুর্গ। গত সংসদ নির্বাচনে এ আসন আওয়ামী লীগকে দেওয়া হয়েছে। উপজেলাও যদি দিয়ে দেন, তাহলে দল কীভাবে চলবে। সংসদ সদস্য দিয়েছেন। উপজেলা যদি নিতেন তাহলে দল বেঁচে থাকত। জাতীয় পার্টি সঙ্গে না থাকলে এতিম হয়ে যাবে আওয়ামী লীগ।’

বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমাদের আসনে আলতাফ আলীকে ২০১৪ সালে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি পার্টির কোনো খোঁজ খবর নেননি। ২০১৭ সালে পার্টির চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। তখন পার্টির চেয়ারম্যান আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে ওকে বহিষ্কার করতাম। বিগত নির্বাচনে আমিনুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু একদিন পর হঠাৎ মনোনয়ন বদলে যায়। এভাবে খামখেয়ালীপনা করলে দল চলবে কী করে?’

মোহনপুর উপজেলা জাপার নেতা আমিনুল হক বলেন, ‘সঠিক নেতৃত্বের অভাবে জাপা ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা কাজ করতে দেন না। পার্টিতে বিভাজন সৃষ্টি করেন, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

লালমনিরহাট সদর জাতীয় পার্টির সভাপতি আকবর ইমাম বলেন, ‘খোঁজ না নিয়ে অচেনা অযোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়াই পরাজয়ের মূল কারণ। আগামীতে আগে ভাগেই প্রার্থীদের নামিয়ে দিতে হবে।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারছে না। জাতীয় পার্টি কিন্তু তার চেয়ারম্যানকে ঠিকই জেল থেকে মুক্ত করেছে। এটা রেকর্ড। বিএনপি এবার মাত্র ছয়টি আসন পেয়েছে। আর আমরা ২২ আসনে জিতেছি। এটাও কিন্তু বাস্তবতা। সাংগঠনিক শক্তি ধরে রাখতে না পারলে উপযোগিতা থাকবে না।’

অনেক নেতাই অভিযোগ করেন, যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে। তাতে তারা নজেহাল হচ্ছেন, মান সম্মান হারাচ্ছেন, অর্থ খরচ হচ্ছে। রাতের আঁধারে ভোট কারচুপি ঠেকাতে সোচ্চার হতে হবে।

বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এ সাংগঠনিক সভার শুরুতে জিএম কাদের বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার কথা শুনতে চাই। সে কারণে সবাই তিন মিনিটের মধ্যে বক্তব্য শেষ করতে পারলে ভালো। আপনারা যতক্ষণ কথা বলতে চান, আমি ততক্ষণ আছি। প্রয়োজন হলে বিকেল পর‌্যন্ত সভা চলবে।’

জিএম কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিফলন পাওয়া যায় কাজেও। সবার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। কিছু কিছু নোটও করেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কখনোই এত দীর্ঘ সময় ধরে পার্টির নেতাদের বক্তব্য শোনেননি। আক্ষেপ ঝাড়তে পেরে নেতাকর্মীরা বেশ উৎফুল্ল। বুধ ও বৃহস্পতিবার একই স্থানে পৃথক চার বিভাগের সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

   

বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে: সালমান এফ রহমান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

রোববার (১৯ মে) সন্ধ্যায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

২০০১ এর নির্বাচনেও ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছে উল্লেখ করে সাল্মান এফ রহমান বলেন, গত নির্বাচনেও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছে। আগামীতেও আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, যেভাবে নৃশংসভাবে ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে, তারপরও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ফিরে এসেছেন। ১৯৮৬ সাল থেকে বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে বলিষ্ঠ হাতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। যে দেশের মানুষ তার সব কেড়ে নিয়েছে সে দেশের মানুষের জন্যই তিনি এখনও করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় আমি থাকলে এই দেশে কখনও ফিরে আসতাম না। আমাদের ভাগ্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে আমরা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই তিনি এদেশে ফিরে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার ম্যাজিকের জন্যই আজ বাংলাদেশ এই অবস্থানে এসেছে।

বাংলাদেশে দুইটি চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আমেরিকা আর চীনের জৈব যুদ্ধ- এই দুইটার একটার সাথেও বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও আমরা ভুক্তভোগী। অন্যদিকে প্রযুক্তি নিয়েও একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সামনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আসতে যাচ্ছে। এটার সঠিক ব্যবহার করাও একটা চ্যালেঞ্জ। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে সকলকে অ্যাডভান্স নিতে হবে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দেশের সবাই আওয়ামী লীগ করে না। কেউ বিএনপি করে, আবার কেউ অন্যান্য দল করে। আরেকটা পক্ষ আছে যারা কোনো দলই করে না। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে নিরপেক্ষদের মন জয় করতে হবে।

মনে হচ্ছে সামনের নির্বাচন অনেক দূরে, কিন্তু না চোখের পলকে সময় শেষ হয়ে যাবে। সময়ের মধ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান সালমান এফ রহমান।

এছাড়াও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ্যাড. কামরুল ইসলাম, আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, ঢাকা-১৯ এর সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

;

'বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনে এই সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১০ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন। এখন বলা হয় ৩ মাসের আমাদানি করার মতো অর্থ থাকলেই নাকি যথেষ্ট। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি আমদানি ব্যয় আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন ৭/৮ মিলিয়নের জায়গায় ৪/৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনেক বড় বড় কথা বলেন, তাকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিলো জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে আসেন। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছালে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

;

দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত: চুন্নু



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত।

শনিবার (১৮ মে) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র ওপর মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ, আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি সফল হতে পারছে না। এই দুটি দলের বিকল্প হিসেবে সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে বেছে নিতে চায়। আগামী দিনে জাতীয় পার্টির উজ্জল ভবিষ্যত আছে। তাই, জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব ডাঃ রাকিব। পেশাজীবী পরিষদের লেহাজ উদ্দিন, সাংবাদিক নিশাত শাহরিয়ার, অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম, মোঃ নুরুজ্জামান, সোয়াইব ইফতেখার, ডাঃ মোঃ আজীজ বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ মোঃ আবু ওয়াহাব।

;

সরকার বয়কটে ইসরায়েল-ভারতের পণ্য বয়কট হবে: আলাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ‘ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য’ মন্তব‌্য করে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মুয়াজ্জিন হোসেন আলাল বলেছেন, এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েল ও ভারতের পণ্যকে বয়কট করা হবে। তাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটি’-এর উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে এক নাগরিক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলাল বলেন, ‘দ্য হিন্দুস্থান টাইমস’-এ একটি খবর দেখলাম, ভারত থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্র বহর ইউরোপের একটি দেশ স্পেন তাদের বন্দরে রাখার অনুমতি দেয়নি। তারা ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে সেই জাহাজকে।

একই সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশকেও স্পেন বলেছে, ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং তারা নিজেরাও বন্ধ করেছে। অথচ আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ যেখানে লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে একটি মানচিত্র অর্জন করেছে, সেখানে ইসরায়েলের থাবা প্রায় বসেছে। তা না হলে রাতের বেলায় গোপনে ইসরায়েল সংস্থার বিমান কীভা‌বে অবতরণ করে! ভারত থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে, সমর্থন করা হচ্ছে। স্পেনের মতো একটি দেশ এর প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করছি না!

তিনি বলেন, ভারত এত বড় আমাদের প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র অথচ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের জনগণের মন থেকে তারা উঠে গেছে। ফেলানি তো কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল না অথচ তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলেছে। তাকে কেন কাঁটাতারে ঝুলতে হয়েছিল! প্রতিদিন ‘গরু পাচারকারী’ আখ্যা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সীমান্তে হয় কি না আমাদের জানা নেই, একই অবস্থা আজ ইসরায়েল করছে ফিলিস্তিনিদের ওপর!

যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মিয়ানমারের গণহত্যার বিপক্ষে আমাদের পক্ষে গাম্বিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারে, তাহলে আমরা কেন আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারবো না! আজ এ সরকার ভারতকে তোষামোদ করে নিজে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিশ্বের সব মানবতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং, আমরা মনে করি, ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েলকে পূর্ণ বয়কট করা হবে; ভারতীয় পণ্যকেও বয়কট করা হবে। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

এ সময় সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

;