চাঁদের প্রাচীনতম গহ্বরে অবতরণ করেছে চন্দ্রায়ন-৩
পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে প্রাচীনতম গহ্বরে (গর্ত) অবতরণ করেছে ভারতের পাঠানো স্পেসক্রাফট ‘চন্দ্রায়ন-৩’।
এই গহ্বরের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ইজেক্টা’ (Ejecta)। এটি ৩শ ৮৫ কোটি বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে বলে ডেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ‘চন্দ্রায়ন-৩’ থেকে অবতরণ করা রোভার ‘প্রজ্ঞান’ থেকে পাঠানো ছবি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে।
ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ও ভারতের মহাশূন্য গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র বিজ্ঞানীরা রোভার ‘প্রজ্ঞান’ ও স্যাটেলাইটের পাঠানো ছবি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, ভারতের চন্দ্রাভিযানে অংশ নেওয়া চন্দ্রায়ন-৩ চাঁদের সবচেয়ে প্রাচীনতম গহ্বর এলাকায় অবতরণ করেছে।
এটি নেকট্রিয়ান যুগে সৃষ্টি হয়েছে। তার মানে অন্তত ৩শ ৮৫ কোটি বছর আগে এটি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁদ যখন সবেমাত্র গঠিত হচ্ছে, সেসময় এটি তৈরি হয়েছে।
যেভাবে ইজেক্টা গহ্বর তৈরি হয়েছে
ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্ল্যানেটরি সায়েন্স ডিভিশনের সহযোগী অধ্যাপক এস. ভিজিয়ান বলেন, চন্দ্রায়ন-৩ যেখানে অবতরণ করেছে, সেখানে এর আগে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এলাকাটির ভূস্তর গঠন অনেক তাৎপর্য বহন করে।
ইজেক্টা’র যে অংশ দেখা যায়, সে অক্ষাংশের ছবি তুলে পাঠিয়েছে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। এর মাধ্যমে চাঁদের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
এস. ভিজিয়ান বলেন, বালুতে যেভাবে একটি বল ছুড়ে দিলে যে দৃশ্যের অবতারণা হবে, ঠিক সেভাবেই কোনো মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে গ্রহাণু সংঘর্ষ হওয়ার ফলে ‘ইজেক্টা’ সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরু ‘এইটকেন’ ঢালুর গভীরে ইজেক্টা’র অর্ধেকটা ডুবে রয়েছে। এর প্রভাব পরবর্তীতে চাঁদের বিবর্তনে ছাপ রেখেছে।
চন্দ্রায়ন-৩ যেখানে অবতরণ করেছে, সেটির ব্যাসার্ধ ১শ ৬০ কিলোমিটার অর্থাৎ এটির গঠন উপগোলাকৃতি। এখানে চাঁদের বিভিন্ন অংশের মহাজাগতিক বস্তু দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ইসরোর পাঠানো ‘চন্দ্রায়ন-৩’ ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়।