১৮১ রানে পিছিয়ে থেকেও ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা ম্যাজিকের মতো করে কাজে লেগে গেল যেন। সাতসকালের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে উইন্ডিজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ, এরপর সে চাপটা ধরে রেখে স্বাগতিকদের মোটে ১৫২ রান তুলতে দিয়েছে সফরকারীরা।
তাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ৬৪ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার প্রথম ফাইফার। তার ক্যারিয়ার-সেরা বোলিংয়ের সঙ্গে মেহেদি হাসান মিরাজের ২ আর শরিফুল-তাইজুল ইসলামের একটি করে উইকেট শিকারের ফলে উইন্ডিজকে অল্পেতে বেধে রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
অল্প বললেও অবশ্য কম নয় লক্ষ্যটা। অ্যান্টিগা টেস্ট জিততে হলে বাংলাদেশকে ৩৩৪ রান করতে হবে। যা করতে হলে রেকর্ডই করতে হবে দলটাকে। টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা ২১৭। জিততে হলে আজ আর আগামীকাল মিলিয়ে তার চেয়ে ১১৭ রান বেশি করতে হবে দলকে।
আজ দিনের শুরুতেই উইন্ডিজকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন। মিকাইল লুইস আর কেসি কার্টিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দুই অঙ্কে যাওয়ার আগেই। এরপরও শরিফুল ইসলাম ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে ফেরান।
মাঝে ৫০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে চোখরাঙানি দিচ্ছিলেন আলিক এথানেজ আর কেভাম হজ। হজকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আবারও ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন। মিরাজ ফেরান ইনিংস সর্বোচ্চ ৪২ রান করা এথানেজকে। একটু পর প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জাস্টিন গ্রিভসকে যখন তাসকিন সাজঘরে ফেরালেন, উইন্ডিজের রান তখন ৯৩, নেই হয়ে গেছে ৬টি উইকেট।
জশুয়া সিলভা একটা প্রতিরোধের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে তাকে বড় কিছু করার আগেই ফেরান তাইজুল। এরপর আলজারি জোসেফও ১৭ রানের ছোট্ট এক ইনিংসে দলের স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন আরও কিছু রান, তাকে ফেরান মিরাজ।
শামার জোসেফকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার তুলে নেন তাসকিন। একটু পর কেমার রোচকেও তিনি ফেরালে উইন্ডিজ অলআউট হয় ১৫২ রানে। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা পড়ে ৩৩৪ রানের।
জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হবে, তা ঠিক। তবে এই মুহূর্তে একটা স্মৃতি অবশ্য সফরকারীদের আশার পালে হাওয়া দিতে পারে। এই রেকর্ডটা এই উইন্ডিজের মাটিতেই গড়েছিল বাংলাদেশ। সেবারও নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে অলরাউন্ডার সহঅধিনায়কের নেতৃত্বেই এই কীর্তি গড়েছিল বাংলাদেশ। সেবারের মতো এবারও কি পারবেন মেহেদি হাসান মিরাজরা?
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৪৬.১ ওভারে ১৫২/১০ (ব্র্যাথওয়েট ২৩, আথানেজ ৪২, দা সিলভা ২২, আলজারি ১৭, রোচ ১২; তাসকিন ৬/৬৪, শরিফুল ১/৯, মিরাজ ২/৩১, তাইজুল ১/২৫)