পুরোনো এক ইস্যুতে ফের বিশ্ব ক্রিকেট উত্তাল। দ্বি-স্তরের টেস্ট কাঠামো নিয়ে দুই ভাগ ক্রিকেট বিশ্ব। চলতি জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের বৈঠকে বসবেন আইসিসির কর্তা ব্যাক্তিরা। তখনই হয়তো এনিয়ে সিদ্ধান্তে আসবে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
সেই সভায় আইসিসি প্রেসিডেন্ট জয় শাহের সঙ্গে থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মাইক বাইর্ড ছড়াও ইংল্যান্ড ও ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রিচার্ড থম্পসন। বিগ থ্রির তিন বিগ বস দ্বি-স্তরের টেস্ট কাঠামো নিয়ে আলোচনা করবেন।
বলা হচ্ছে নতুন এই কাঠামোতে প্রথম ভাগে বিগ থ্রি মানে বিশ্ব ক্রিকেটের তিন মোড়ল ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড থাকবে। আরও চার দেশ পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাও যোগ দিতে পারে। স্তরের আরেক দিকে থাকবে বাকি ৫ দেশ। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ছাড়াও আছে জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড।
বিগ থ্রির দলগুলোকে বড় রকমের বাণিজ্যিক সুবিধা দিতেই এমন পথে হাঁটতে চাইছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। কিন্তু দ্বিতীয় স্তরে থাকা দলগুলোর সামনে কমে আসবে টেস্টে ভালো করার সুযোগ। ম্যাচের সংখ্যাও কমবে।
আর এ কারণেই ক্লাইভ লয়েডের মতো কিংবদন্তিরা আপত্তি জানাচ্ছেন। ক্যারিবিয় লিজেন্ডের মতো প্রতিবাদ উঠছে বাংলাদেশ থেকেও। বাংলাদেশের টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ মুমিনুল হক এনিয়ে কথা বললেন।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দেখুন এটা আমার জন্য হতাশার। আমি কোনো দলকে ছোট বা বড় বলছি না, আমি জানি না আমরা দ্বিতীয় স্তরে ভালো খেললেও প্রথম স্তরে উঠতে পারব কি না।’
মুমিনুল আরও যোগ করেন, ‘এক্ষেত্রে আমার তো মনে হয় টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা কমে যাবে। এটা টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্য বেশ হতাশার। আমি মনে করি না আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে এটা। সত্যি বলতে যদি আমরা ভালো দলের বিপক্ষে খুব বেশি ম্যাচ না খেলি, তাহলে আমাদের খেলার মানও উন্নত হবে না। বড় ও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি না হয়ে নিজেদের মধ্যে নিয়মিত খেলতে থাকলে একই মানে থেকে যাবো আমরা।’
মুমিনুল আশঙ্কা করছেন এমনটা হলে বাংলাদেশের মতো দেশে টেস্ট ক্রিকেট তার মর্যাদা হারাবে। আগ্রহ হারাবেন ক্রিকেটাররা। তিনি বলছিলেন, ‘যখন আপনি ভালো দলের বিপক্ষে খেলবেন, আপনি চেষ্টা করবেন কী করে নিজের উন্নতি করা যায়। এমনটা হলে টেস্ট ক্রিকেটের মানও কমে যাবে, মূল্য কম দেওয়া হবে, খেলোয়াড়রা সাদা বলের ক্রিকেটের দিকে ঝুঁকবেন।’
টেস্ট খেলুড়ে ১২ দলের মধ্যে এই বিভক্তির বড় কারণ আর্থিক ইস্যু। দেখা যাচ্ছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডই নিজেদের মাটিতে টেস্ট আয়োজন করে লাভের মুখ দেখেছে। আর এই সুযোগটা নিতে আইসিসিকে চাপ দিচ্ছে তিন মোড়ল!