মধুর প্রতিশোধেই ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
এমন একটা ক্ষণের অপেক্ষায় ছিলো যেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স!
টুর্নামেন্টে আগের দু’বারের মোকাবেলায় দু’বারই রংপুরের কাছে বাজেভাবে হারে কুমিল্লা। তৃতীয় দেখায় জিতলো দাপট দেখিয়ে। গ্রুপপর্বে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলো সেই সঙ্গে ৮ উইকেটের এই জয়েই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নাম লেখালো ষষ্ঠ বিপিএলের ফাইনালে।
গেলবারের চ্যাম্পিয়ন রংপুর অবশ্য ফাইনালে খেলার দ্বিতীয় আরেকটি সুযোগ পাচ্ছে। ৬ ফেব্রয়ারি, বুধবার রাতে ঢাকা ডায়নামাইটস ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচে জয়ী দল হবে ফাইনালে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ।
মিরপুরের উইকেটে ১৬৫ রানকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট মানতেই হচ্ছে। তামিম ইকবালকে পাওয়ার প্লে’তে মাশরাফি ফেরালেও এভিন লুইস ও এনামুল হক বিজয়ের দ্বিতীয় উইকেট জুটি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ফাইনালের সুবাস এনে দেয়। এই দুজনের জুটিতে ৬৩ বলে ৯০ রান কুমিল্লার জয়ের টার্নিংপয়েন্ট। ২ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারিতে এনামুল ৩২ বলে ৩৯ রান করে আউট হয়ে গেলেও এভিন লুইস একপ্রান্ত আঁকড়ে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তুলে আনতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখেন। ১৫ বলে হার না মানা ৩৪ রান করে শেষের দিকে তাকে চমৎকার সঙ্গ দেন শামসুর রহমান।
এই ম্যাচে ক্রিস গেইল ঘুম ভেঙ্গে উঠেছিলেন। তবে আরেকবার উইকেটে পুরোমাত্রায় সেট হওয়ার পর ‘বড়কিছু’ করতে পারলেন না। ১ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারিতে গেইলের নামের পাশে ৪৪ বলে ৪৬ রানের ইনিংসকে ‘বিশালকিছু’ বলার উপায় যে নেই। অথচ শুরুটা হয়েছিলো তার দুর্দান্ত। রংপুরের প্রথম ৫০ রানের মধ্যে ৪২ রানই ছিলো গেইলের। যেভাবে খেলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিলো পেছনের সব ব্যর্থতা এই ম্যাচেই পুষিয়ে দিতে জেগেছেন তিনি। একটা ক্যাচ মিসের সুযোগও পান। মেহেদি হাসান মিডউইকেটে গেইলের সহজ ক্যাচ হাতে নিয়েও ফেলে দেন। তবে ক্যাচ মিসের সেই অপরাধবোধ বেশি সময় তাড়ায়নি মেহেদি হাসানকে। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলেই গেইলের প্রাইজ উইকেট তুলে নেন।
৬৭ রানে শুরুর তিন উইকেট হারানো রংপুর রাইডার্সকে সামনের পথ দেখান দলের দুই বিদেশি। রাইলি রুশো ও বেনি হাওয়েলের পঞ্চম উইকেট জুটিতে যোগ হওয়া ৭০ রান রংপুরের ইনিংসকে রাঙিয়ে তুলে। আফ্রিদির বলে ১৯ রানে সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়ে ওয়াহাব রিয়াজ যেন রুশোকে সামনে বাড়ার সুযোগ করে দিলেন। ৪৪ রান করে রুশো যখন থামলেন ততক্ষনে রংপুর রানের রথে চড়ে বসেছে!
ম্যাচের আগে আলোচনার বাইরে থাকা বেনি হাওয়েল ছয় নম্বরে নেমে দলের সেরা ব্যাটসম্যানের ট্যাগ নিয়ে ফিরলেন। ৫ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে ২৮ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করে হাওয়েল দলের স্কোরকে ১৬৫ রানে পৌছে দিলেন। যে স্কোরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফিল্ডারদের ভুলে ভরা ফিল্ডিংয়ের ‘কৃতিত্বও’ কম কিছু নয়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রংপুর রাইডার্স: ১৬৫/৫ (২০ ওভারে, গেইল ৪৬, রুশো ৪৪, হাওয়েল ৫৩*, সনজিত সাহা ১/১৪, মেহেদি হাসান ১/২৮, সাইফুদ্দিন ১/৪২, ওয়াহাব রিয়াজ ১/৪৯)। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৬৬/২ (১৮.৫ ওভারে, তামিম ১৭, লুইস ৭১*, এনামুল ৩৯, শামসুর ৩৪*, মাশরাফি ১/৪৩, শফিউল ১/২১)। ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা: এভিন লুইস।