দেড়শও তুলতে পারল না বাংলাদেশ

  • নেয়ামত উল্লাহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

যা শঙ্কা ছিল, তাই সত্যি হলো। ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হলো ১৪৯ রান তুলতেই। ফলো অন এড়াতে ১৭৭ রান প্রয়োজন ছিল দলের। সেটা থেকে ২৮ রান দূরে থাকতেই গুটিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তবে সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশকে ফলো অন করাচ্ছে না ভারত।

ফিচারড ফটোর ছবিটা জাকির হাসানের। তার ব্যাট প্যাডের ফাঁক গলে বলটা গিয়ে ভেঙেছে স্টাম্প। একজন স্বীকৃত ব্যাটারের জন্য বিষয়টা বেশ বিব্রতকর। বিষয়টা যখন একটা ইনিংসে একাধিকবার হয়, তখন তা দলের জন্যও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। বাংলাদেশ আজ সে পরিস্থিতিতেই পড়েছে। এর আগে পরে আরও যা হয়েছে, তার ফলে জাকিরের এই ছবিটা হয়ে গেছে বাংলাদেশের পুরো ইনিংসেরই প্রতীকী দৃশ্য।

বিজ্ঞাপন

ইনিংসের শুরুটাই এমন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল অবশ্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দারুণ একটা ৯৩ রানের ইনিংস খেলা সাদমান ইসলাম আজ ভুলে গেলেন তার অফ স্টাম্পটা কোথায় আছে। যশপ্রীত বুমরাহর ডেলিভারি লিভ করে চেয়ে দেখলেন বলটা তার অফ স্টাম্প ভেঙে দিয়েছে। ইনিংসের তখন একটা ওভারও শেষ হয়নি।

এরপর মধ্যাহ্ন বিরতির আগে জাকির হাসান ওভাবে উইকেট দিয়ে এলেন আকাশ দীপকে, পরের বলে মুমিনুল হকও একই রকমভাবে নিজের উইকেটটা খোয়ালেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মোহাম্মদ সিরাজের বলে ক্যাচ দিলেন স্লিপে।

বিজ্ঞাপন

পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের ১০ উইকেটের ভেতর আনপ্লেয়েবল ডেলিভারিতে আউট হয়েছেন স্রেফ মুশফিকুর রহিমই। দলের সেরা ব্যাটারকে আউট করতে তাই বুঝি করতে হতো প্রতিপক্ষের সেরা বোলার বুমরাহকে। তিনি অ্যাঙ্গেল বের করতে চেয়েছিলেন নিজের অবস্থান একটু বদলে, মুশফিকও সেটার জবাব দিচ্ছিলেন দারুণ দক্ষতায়। এরপরই বুমরাহ বের করলেন এক মোক্ষম অস্ত্র, লেট সুইং! তাতেই সর্বনাশ হলো মুশফিকের। এক টেস্ট আগে ১৯১ করা তিনি আউট হলেন দুই অঙ্কে পা দেওয়ার আগেই।

মুশফিকের ওই আনপ্লেয়েবল ডেলিভারিতে আউট হওয়ার বিষয়টা ঢাকা পড়ে গেল সাকিব-লিটনের আউটের ধরনে। দুজনেই চরম অবিমৃশ্যকারিতার পরিচয় দিয়ে আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটু শট খেলে। সাকিবের সঙ্গে জুটি যখন জমে যাচ্ছিল, তখন লিটন সুইপ খেলে উইকেট দিলেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। দুটো আউটকে কাণ্ডজ্ঞানহীনতার দাঁড়িপাল্লায় রাখলে সাকিবের আউটটার ওজনই বুঝি বেশি ভারি হবে। লিটন যখন বিদায় নিচ্ছেন, তখন তিনি ওপাশে দাঁড়িয়ে, দেখেছেন এমন পরিস্থিতিতে কী করা যাবে না। সাকিব তার থেকে শিক্ষা নিলেন, আউটের ধরনটাকে আরও একটু বাজে রূপ দিলেন রিভার্স সুইপ খেলে।

৯২ রানে ৭ উইকেট খুইয়েই বাংলাদেশের নিয়তি নির্ধারিত হয়ে গেছিল। ওখান থেকে ম্যাচে ফিরতে হলে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো মেহেদি হাসান মিরাজকে। তিনি চেষ্টা করেছিলেন বটে, ৫২ বলে ২৭ রান করেছেন, ওপাশে টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়েছেন। শেষমেশ সঙ্গীর অভাবে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। তার ইনিংস তাই পাসমার্ক পেয়েই যাবে। যেমন যাবে আনপ্লেয়েবল ডেলিভারিতে আউট হওয়া মুশফিকের ছোট্ট ইনিংসও।

মিরাজ-মুশফিকের এসব ইনিংসকে পাস মার্ক দিয়ে দিতে হচ্ছে বাকিদের আউটের ধরন দেখে। ওই সব ছুঁড়ে দিয়ে আসা, টেকনিকের ভুলে খুইয়ে বসা উইকেটই তো বাংলাদেশকে ম্যাচের কক্ষপথ থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে ঠেলে দিয়েছে!