ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি
দেশের ক্রিকেট ঠিকভাবে চলছে না-এমন অভিযোগ তুলে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন সাকিব আল হাসানরা। দেশের শীর্ষ পর্যায়ে খেলা ক্রিকেটাররা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়ে দিয়েছেন-এসব দাবি পূরণের নিশ্চয়তা না পেলে জাতীয় দল এবং প্রথম শ্রেণীর সব ক্রিকেটাররা কোনো ধরনের ক্রিকেটে অংশ নেবেন না। ক্রিকেটারদের এমন দাবির পেছনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে বিসিবি।
সমস্যা সমাধানের সুযোগ না দিয়ে ধর্মঘট করাকে ষড়যন্ত্রের অংশ অ্যাখ্যা দিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইঙ্গিত করেন এমন ধর্মঘট দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ফসল।
মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটা সময়ই ক্রিকেটারদের দাবিগুলো উড়িয়ে দেন নাজমুল হাসান। ক্রিকেটাররা সরাসরি মিডিয়ার সামনে দাবিগুলো তোলায় বেশ বিরক্ত হয়েছেন নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘কোনো খেলোয়াড় বলতে পারবে তারা দাবি করেছে আর আমরা সেটা দেইনি? তাদের ২৪ কোটি টাকা বোনাস দিয়েছি। টাকার জন্য তারা খেলা বন্ধ করে দেবে বিশ্বাস করতে পারছি না। তাদের আচরণ অপ্রত্যাশিত-অবিশ্বাস্য।’
নাজমুল হাসান পাপন মনে করেন ক্রিকেটাররা দাবির কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও জানাতে পারতেন, ‘ওদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। আমার চেয়ে বেশি মনে হয় না কেউ যোগাযোগ রাখে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে শুরু করে সবকিছুতে কথা হয়। আমি তো বহুদূর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও ওদের অ্যাকসেস আছে। বলার কিছু থাকলে ওরা বলতে পারত।’
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, ‘টাকার জন্য ধর্মঘটে ক্রিকেটাররা, এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। ধর্মঘটের পেছনে কোনো কারণ আছে। এগুলো একটা পরিকল্পনার অংশ। ক্রিকেটের ইমেজ নষ্ট করতে তারা সফল হয়েছে। ক্রিকেটের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। কিছু মিডিয়াও আছে। একটা লোক আছে যে মিথ্যা কথা বলে, আমি তিনবার প্রমাণ করলাম সে মিথ্যা কথা বলে। কিস্তু তাকে নিয়েই ফোকাস।’
এমন কী সাকিবরা ফোন ধরছেন না এমন দাবিও সংবাদ সম্মেলনে করেন নাজমুল হাসান। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তারা আসে নাই, তারা ফোনও ধরছে না।’
এক প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল হাসান জানান, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ডিস্টেবিলাইজ করতে একটা ষড়যন্ত্র চলছে, এটা অনেকেই জানেন। সরকারের এমন কেউ নাই যে জানে না, কারা করছে তাও আমরা জানি। কে কে করছে তাও আমরা জানি, এমন না যে জানি না। আপনারাও জানেন।’
মিরপুরের শেরেবাংলায় সোমবার ১১ দফা দাবি জানান সাকিব আল হাসানরা। দাবির মধ্যে আছে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়ানো। খেলোয়াড়দের বেতন বৃদ্ধি, বিসিবির গ্রাউন্ডসম্যান থেকে শুরু করে অন্যান্য বেতনভুক্ত কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি। ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান প্রসঙ্গ।
আরও পড়ুন-
হঠাৎ বিদ্রোহী ক্রিকেটাররা, সব ধরনের খেলা বয়কট
যে ১১ দফা দাবিতে ক্রিকেটাররা ধর্মঘটে
ব্যাকফুটে থাকা বিসিবি এখন রক্ষণাত্মক!