স্বপ্ন দেখাচ্ছে শান্ত-মাহমুদউল্লাহর ব্যাট
সবুজে ছোঁয়া রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের উইকেট। পেস বোলারদের দিয়েই বাংলাদেশকে কাবু করার পরিকল্পনা করেছিল পাকিস্তান। সেই কৌশলে প্রথম দিনের লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত সফল স্বাগতিকরা। অনেকটাই বেকায়দায় পড়ে গেল মুমিনুল হকের দল।
শুক্রবার লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় টাইগারদের ১ম ইনিংসে সংগ্রহ ৩৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান। নাজমুল হােসেন শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে স্বস্তি নিয়ে লাঞ্চে গেল দল।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই ম্যাচে শুরুতেই পথ হারায় বাংলাদেশ। ২ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ৩। চটজলদি বিদায় নেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারানোর পর বাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে টেনে তুললেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
তাদের দৃঢ়তায় রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ। প্রথম দিনে প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে ৩২ রান করে দল। জুটি যখন জমে উঠল তখনই মুমিনুলকে ফেরান শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৫৯ বলে ৩০ রানে ফেরেন অধিনায়ক। সম্ভাবনা জাগিয়ে ফেরেন মুমিনুল। আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাভার ড্রাইভ করেন অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে।
বিদায়ের আগে শান্তর সঙ্গে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। অভিষিক্ত শান্তর (১০৪ বলে ৪৪) সঙ্গে জুটি গড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১৭)। তাদের ব্যাট স্বপ্ন দেখাচ্ছে টাইগারদের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পথ হারায় বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারেই ফিরে যান দুই ওপেনার। সাইফ হাসানের পর বিদায় নেন তামিম।
বাংলাদেশ দলকে পেস আক্রমণে বিপাকে ফেলার কৌশলে শুরুতেই সফল আজহার আলি। নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি আর মোহাম্মদ আব্বাসের গতি-বাউন্স-সুইংয়ে শুরুতেই হোঁচট বাংলাদেশের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় সংগ্রহে ৩ রান যোগ হতেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর একই রানে আরেকটি উইকেটের পতন!
রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই লড়াইয়ে টেস্ট অভিষিক্ত সাইফ হাসান ফিরলেন শূন্য রানে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে দুঃস্বপ্নের অভিষেক হলো সাইফের। ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান না করেই শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে কুপোকাত তিনি। এরপর মোহাম্মদ আব্বাস ফেরান তামিমকে। এই ওপেনার করেন মাত্র ৩ রান।
সিরিজের প্রথম টেস্টের একাদশে ফিরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন। ছিটকে গেছেন সৌম্য সরকার, আল-আমিন হোসেন ও নাঈম হাসান।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফের পাকিস্তানের মাঠে টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাঠে এ পর্যন্ত চারটি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা। হেরেছে সব কটিতেই। সব মিলিয়ে দেশটির বিপক্ষে ১০ টেস্টে লড়েছে টিম টাইগার্স। কিন্তু ৯টিতে হার দেখেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। একটি টেস্ট ড্র।
রাওয়ালপিন্ডির মাঠে এর আগে কখনোই টেস্ট খেলেনি বাংলাদেশ। অবশ্য এই মাঠের ইতিহাস স্বস্তি দিচ্ছে না আজহার আলির দলকেও। সর্বশেষ ২৩ বছরে এখানে টেস্ট জিততে পারেনি স্বাগতিকরা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা টেস্ট দলটা ধরে রেখেছে পাকিস্তান। একাদশে আছেন লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। বোলিং আক্রমণে ইয়াসিরের সঙ্গী তিন পেসার মোহাম্মদ আব্বাস, নাসিম শাহ আর শাহিন শাহ আফ্রিদি।