সোনম কালরা: প্রেম, মানবতা, আধ্যাত্মের প্রতিধ্বনি



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসেসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
সোনম কালরা: প্রেম, মানবতা, আধ্যাত্মের প্রতিধ্বনি

সোনম কালরা: প্রেম, মানবতা, আধ্যাত্মের প্রতিধ্বনি

  • Font increase
  • Font Decrease

সোনম কালরা নামের সঙ্গে মোটামুটি পরিচয় থাকলেও তাঁকে প্রথম ভার্চুয়ালি দেখার অভিজ্ঞতাটি বেশ চমকপ্রদ। 'দ্য পার্টিশান ১৯৪৭ আর্কাইভ' নামের একটি গবেষণা সংস্থার পক্ষে প্রতি রোববার তিনি হাজির হন দেশভাগ নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনায়। সঙ্গে থাকেন কোনও শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, শিল্পী, লেখক, যারা দেশভাগ নিয়ে কাজ করছেন।

জুলাই মাসের প্রথম রোববার সোমন কালরা নিয়ে আসেন হারুন খালিদকে। 'ফুটপ্রিন্ট অব পার্টিশান' বইয়ের লেখক পাকিস্তানি অ্যাকাডেমিশিয়ান আনাম জাকারিয়ার সুবাদে হারুন খালিদ আমার পরিচিত। গবেষণার কাজে বাংলাদেশও ঘুরে গেছেন তাঁরা।

ফলে আমি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনাটি শুনি। এবং 'দ্য পার্টিশান ১৯৪৭ আর্কাইভ' দেশভাগ নিয়ে যে ব্যাপক ভিত্তিক ইতিহাসচর্চা ও তথ্য সংরক্ষণ করছে, তা জানতে পারি। তবে, পার্টিশন নিয়ে আলোচনায় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও পাঞ্জাবের বিষয়াবলী যত প্রাধান্য পায়, পূর্বাঞ্চল তথা বাংলার বিভাজন ততটা পায় না। দেশভাগের আন্তর্জাতিক গবেষণা ও লেখালেখিতে পাঞ্জাবের প্রাধান্য সুস্পষ্ট। সাদাত হাসান মান্টো, খাজা আহমদ আব্বাস, অমৃতা প্রীতম, কৃষণ চন্দর এবং কমলা ভাসিন, ঊর্বশী বুটালিয়া এসব কাজকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

সোনম কালরা

এসব প্রসঙ্গে সোনম কালরার সঙ্গে আলাপ করার শুরুতেই তিনি আমাকে ভীষণভাবে চমকে দিলেন। বললেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে আমার ঐতিহাতিক নিবিড় সম্পর্ক আছে। মুক্তিযুদ্ধে মিত্র বাহিনির সেনাপতি জগজিৎ সিং অরোরা-এর আমি গ্র্যান্ডডটার। শিখ ইতিহাসে বীরোচিত নারীর অভাব নেই, যারা যুদ্ধে, রাজনীতিতে, শিল্পে, সাহিত্যে, সঙ্গীতে প্রভূত অবদান রেখেছেন। সোনম সেই উত্তরাধিকারের আধুনিককালের অনন্য দৃষ্টান্ত। যিনি পরিণত হয়েছেন প্রেম, মানবতা, আধ্যাত্মের প্রতিধ্বনিতে।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের সুপ্রাচীন জনপদগুলোর অন্যতম পাঞ্জাব শুধু পঞ্চনদীর দেশই নয়, মহাভারতের ঘটনাবলীর স্বাক্ষী এবং সিন্ধু সভ্যতার লীলাভূমিও। বাংলার মতো পাঞ্জাবের ললাটেও রয়েছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ক্ষত। বাংলায় রাজনৈতিক ও সশস্ত্রভাবে হিন্দু ও মুসলমানগণ মুখোমুখি হলেও পাঞ্জাবে তা ছিল ত্রিমুখী: হিন্দু, শিখ, মুসলমানদের মধ্যে আবর্তিত। এক পর্যায়ে হিন্দু-শিখ জোট বনাম মুসলিমদের সেই ধর্মীয়-রাজনৈতিক সংঘাত ১৯৪৭ সালের দিনগুলোকে লাশ, রক্ত, আগুনের বিভীষিকায় দগ্ধ করেছিল। খুশবন্ত সিং, সাদাত হাসান মান্টো, কৃষাণ চন্দর প্রমুখ সেসবের অনবদ্য সাহিত্যিক ভাষ্য উপস্থাপন করেছেন।  

পরের ঘটনা সবার জানা। আশি দশকে স্বাধীন খালিস্থান আন্দোলন চরমভাবে দমন করা হয় শিখদের ধর্মস্থান ‘স্বর্ণ মন্দির’-এ 'অপারেশন ব্লু স্টার' নামক নির্মম সামরিক অভিযান চালিয়ে। তখন মুখোমুখি হয় একদার মিত্র শিখ ও হিন্দুরা। সংঘাত ও পাল্টা-সংঘাতময় ঘটনাপ্রবাহের প্রতিক্রিয়ায় নিহত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এবং এরই ধারাবাহিকতায় হাজার হাজার শিখ মারা যান। বিশ্বে তিন কোটির বেশি জনগোষ্ঠীর শিখ সম্প্রদায়ের অনেকেই দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যান।       

যদিও এখনো পাঞ্জাবই ভারতের একমাত্র শিখ-প্রধান প্রদেশ, তথাপি বৃহত্তর পাঞ্জাবের বড় অংশ ভাগাভাগির সময় পড়েছে পাকিস্তানে। এমনকি, যে লাহোরকে রাজধানী করে বিশাল শিখ সাম্রাজ্য বিস্তৃত হয়েছিল পেশোয়ার পর্যন্ত, তা-ও এখন পাকিস্তানভুক্ত। অথচ এই শিখ ধর্ম ও সম্প্রদায় অত্যন্ত নবীন। মাত্র পঞ্চদশ শতকে গুরু নানক কর্তৃত প্রবর্তিত, যাতে হিন্দু ভক্তিবাদ ও মুসলিম সুফিবাদের মিশেল আছে।

রবীন্দ্রনাথ বর্ণিত শক, দল, হুন, মুঘল, পাঠান ইত্যাদি যে ভারতের একদেহে লীন হয়েছে, সেখানে পাঞ্জাবি জাতিসত্তা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যাদের মধ্যে হিন্দু, মুসলিম ও শিখ ধর্মের লোক রয়েছে। দেশভাগের পর মুসলিম পাঞ্জাবিরা পাকিস্তানের পাঞ্জাব অংশে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং পাকিস্তানের রাজনীতি, সামরিক বাহিনী ও অর্থনীতিতে প্রবলভাবে বিরাজমান। আর ভারতের পাঞ্জাব মূলত শিখ প্রধান। পাঞ্জাবি হিন্দুরা পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি ইত্যাদি স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করেন।

সোনম কালরা

নতুন ধর্ম সম্প্রদায় হলেও উনবিংশ শতকে উত্তর ও পশ্চিম ভারতে শিখ সাম্রাজ্য প্রবলভাবে বিস্তার লাভ করে রনজিৎ সিং-এর নেতৃত্বে, যা পশ্চিমে আফগানিস্তানের কাছাকাছি পেশোয়ার পেরিয়ে খায়বার পাস এবং কাশ্মীর পেরিয়ে চীন-তিব্বত সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত চলে যায়। তিনি গুজরানওয়ালা থেকে রাজধানী সরিয়ে লাহোরে স্থানান্তরিত করেন। তাঁর মৃত্যুর পর মূলত যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে, আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এবং ব্রিটিশ আক্রমণের মুখে ১৮৪৯ সালে দ্বিতীয় অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে শিখ সাম্রাজ্য পুরোপুরি ভেঙে যায়। তথাপি পাঞ্জাবি ও শিখরা ইংরেজদের সঙ্গেই সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নেতৃত্বের আসন লাভ করে।

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন বাবর যখন ভারতে আসেন, তখন গুরু নানক শিখ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে বাবরের সদ্ভাব ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে শিখরা বার বার দিল্লির মুঘল রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে এবং ১৭০৭ সালে শক্তিশালী মুঘল নৃপতি আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর শিখ সম্প্রদায় সংগঠিত হয়ে উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়। শিখদের একাধিক আক্রমণকেও মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়।

নবাগত ধর্ম ও নবীন সম্প্রদায় হয়েও দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশ জুড়ে শিখগণ যে রাজনৈতিক প্রভাব, সামাজিক গতিশীলতা ও সাংস্কৃতিক-প্রত্নতাত্ত্বিক ছাপ রেখেছেন, সোনম কালরা সেসবই আত্মস্থ করেছেন গভীর মমতায় এবং নবতর বিন্যাসে, আন্তর্জাতিক অভিব্যক্তিতে। এবং প্রেমময়তায় বিনির্মাণ করেছেন তিনি ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে।

তিনি শুধু শিখ বা পাঞ্জাব নয়, ব্যাপকভাবে দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের বিক্ষুব্ধ রাজনৈতিক ও সামাজিক স্রোতের সমুদ্র-সমান অস্থিরতায় মরমীবাদের আধ্যাত্মিক চৈতন্যে জারিত করেছেন, যা তিনি আহরণ করেছেন জন্ম থেকে। পারিবারিক বলয়ে তিনি বড় হয়েছেন 'মালেকা-ই-গজল' বেগম আখতারের ধ্রুপদী গান শুনে আর এটা জেনে যে, নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনও উচ্চনীচ ভেদ নেই।

সোনম কালরা

সোনমের জীবনধারায় যে সঙ্গীতময়তা আর মানবিকতার ছাপ অঙ্কিত হয়েছে, তা তাঁকে সুফি মিউজিকের ঘরানায় নিয়ে আসে। তিনি গায়ক ও গীত রচয়িতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন 'দ্যা সুফি গসপেল প্রজেক্ট'। মানবতা, শান্তি, মৈত্রী, আধ্যাত্মের চিরায়ত ধ্বনিপুঞ্জকে আধুনিক প্রকরণগত আঙিকে উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাপী। নিজে গ্রাফিক্স ডিজাইনে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েও মনোনিবেশ করেন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সন্মিলনে।

দর্শক-শ্রোতার ভালোবাসার পাশাপাশি সোনম ভূষিত হয়েছেন বহু সম্মাননায়। বিশ্বের ৩০টি দেশে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন, যার মধ্যে আছে সিডনি অপেরা হাউস এবং এমটিভি'র কোক স্টুডিও। তিনি মঞ্চে একত্রে গান গেয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী স্যার বব গ্যালডফ ও সুফি গায়িকা আবিদা পারভিনের সঙ্গে। তিনি সাইফ আলী খান, কারিনা কাপুর, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সাথে গান করেছেন। গেয়েছেন নিক জেনাসের বিয়ের অনুষ্ঠানেও।

সোনমের জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অনুষ্ঠান ছিল মিশরের পিরামিডের সামনে 'বিশ্ব সুফি শান্তি সন্মেলন'-এ সঙ্গীত পরিবেশনা। গেয়েছেন ইন্দো-আফ্রিকান মিউজিক ভ্যাস্টিভেলে এবং ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের নানা দেশের মরমী সঙ্গীত সন্মেলনে।

গানের মধ্য দিয়ে সোনম তুলে ধরেন সত্য, সুন্দর ও শান্তির বার্তা। মানবতার বুননকে মজবুত করতে জাগ্রত করেন মরমী আবহ এবং আধ্যাত্মিক চৈতন্য। সোনম কালরা পরিণত হয়েছেন প্রেম, মানবতা, আধ্যাত্মের প্রতিধ্বনির ধারাবাহিক প্রবহমান এক শৈল্পিক প্রতীক আর সাঙ্গীতিক দ্যোতনায়।

   

নারীরাই সমাজের স্থপতি



ফাহমিদা নবী
নারীরাই সমাজের স্থপতি

নারীরাই সমাজের স্থপতি

  • Font increase
  • Font Decrease

নারীর জাগরণে অনেক পিছিয়ে আছি বললে ভুল হবে। যদি বলি, তবে প্রযুক্তির যুগে এসে সে কথা বলার কোন মানে হয় না। নারীও তাঁর অধিকারে এগিয়ে যাচ্ছে সাহস এবং শক্তিশালী মানসিকতার বদৌলতে। কেন পিছিয়ে থাকবে?

১৯০৮ সালের শ্রম আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণাটি। বাংলাদেশে বেগম রোকেয়া আমাদের নারীদের জাগরণের জন্য যখন পথ দেখালেন তখন থেকে অদ্যাবধি অবস্থানকে শক্ত এবং শক্তিশালী করবার দুর্নিবার পথ চলা কিন্তু থেমে নেই। তবুও আমরা আজো পিছিয়ে কেন? যে জাতি নারীদের সম্মান করতে পারে না, সে জাতির উন্নতি অসম্ভব।

নারীরাই সমাজের প্রকৃত স্থপতি। নারীকে চিন্তা চেতনার শর্তে জীবনযাপন করার জন্য যথেষ্ট সাহসী হতে হবে। আমাদের দেশে আত্মসচেতনতার অভাব রয়েছে বলেই নারীদের মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে; সবসময় এবং বারংবার। নারী সমাজকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করে রাখা হচ্ছে। এ শক্তি কাজে লাগিয়ে সমাজসেবার সুযোগ করে দিতে হবে। নারীদের মেধা ও শ্রমশক্তিকে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করতে হবে। আর তা করতে হলে সমাজ সম্পর্কে তাঁর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন।

নারী দিবস মানেই আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া সৃষ্টিতে-কৃষ্টিতে সমতায় সেরা নারী যেন কোনভাবেই ভেঙে না পড়ে।

আমার তো মনে হয় নারী ফিনিক্স পাখি! সে যেভাবে বারবার পড়ে গিয়ে আবার উঠে দাড়ায়। নিজের কিশোরবেলা থেকে শুরু করে সংসার, বিয়ে, সন্তান থেকে পরিবার পুরো সমাজ সংসারে তার চলাচল ভীষণ ইতিবাচক। তাঁর তো সময় নেই নেতিবাচকতায় চোখ রাখবার! থাকুক যতই বাধা তার ধৈর্যের কমতি নাই। হাসিমুখে সব কিছুতে তাঁর অংশগ্রহণ এক বিস্ময়।

সত্যি বলতে কী নারী মানেই “মা”। তাই নারী সব কিছুরই উদাহরণ। মাকে কখনো কঠিন হতে হয়, কখনো কোমল, কখনো বা সংসার কৌশলী, বুদ্ধিমত্তায় পারদর্শী।

নারীদের বলতে চাই জীবনে সংগ্রাম থাকবেই কিন্তু পিছিয়ে পড়া যাবে না। এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে কথা বলতে, না বলতে, সাহসে পথ চলতে শিখতে হবে। নিজেকে ভালোবাসতে হবে।

আমাদের দেশে নারীদের অংশগ্রহণ এখন সর্বত্র। শুধু সাহস আর মানবিকতা পথটাকে আরেকটু চিনে চলতে হবে। কারণ অমানবিকতা আনাচেকানাচে চিরকালই দেখি।

আরেকটা বিষয়কে প্রাধান্য দিতেই হবে যা মানবিক আচরণ। কিছু সংশোধন হওয়া প্রয়োজন। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই যদি সবাই এক সমতায় তবে এখনো পিতার সম্পত্তি বণ্টনে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না কেন? বিশাল সমস্যা এখানেই রয়ে গ্যাছে। এই সমঅধিকারের প্রতিকার যতদিন না হবে বৈষম্যের ফাঁকটা রয়েই যাবে। এবং মেয়েদের উপর অত্যাচার কখনোই কমবে না।

পৃথিবীর কোন দেশে এই বৈষম্যতা নেই বলেই নারীরা অনেক সাহসে এবং সমতার অংশগ্রহণের নিশ্চিত থাকতে পারে।

আমরা কেন পিছিয়ে থাকব। সমবণ্টন নিশ্চিত হোক। নারীর এগিয়ে যাওয়া আর রুদ্ধ হবে না।

আমি সব সময় মুগ্ধ হই আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে দেখে। কী প্রাণবন্ত হয়ে নারীদের অগ্রগতিতে তিনি কতটা ভূমিকা রাখছেন! প্রতি মুহূর্তে তিনি চান মেয়েরা এগিয়ে আসুক সাহসী হোক। তিনি এ ব্যাপারেও কাজ করছেন শুনেছি। আশা করি অবশ্যই পিতার সম্পত্তিতে ছেলেমেয়ের সমঅধিকার হবে। কাজেকর্মে, শিক্ষায় সমাজ সংসার জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখুক সমতায়। সেজন্য সুযোগ সুবিধায় নারীদের সম্মানকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা কেন পিছিয়ে থাকব?

সকল নারীদের জন্য শুভ কামনা; আত্মবিশ্বাসে পথ চলা সফল হোক।

ফাহমিদা নবী: সংগীত শিল্পী

;

‘নারীবাদী’ শব্দের উৎপত্তি এবং এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক



নারীশক্তি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নারী ক্ষমতায়নের বিশ্ববাসী / ছবি: বিং এআই

নারী ক্ষমতায়নের বিশ্ববাসী / ছবি: বিং এআই

  • Font increase
  • Font Decrease

‘নারীবাদী কিনা?’ প্রশ্নে পুরুষ কিংবা নারী- অনেককেই অপ্রস্তুত হতে দেখা যায়। কারো উত্তরে থাকে দ্বিধা। হাস্যকর হলেও সত্য, কেউ কেউ উত্তর দেয়,‘আমি নারীবাদী নই, তবে আমি সমতায় বিশ্বাসী।’ সমাজে অধিকাংশ মানুষের কাছে ‘নারীবাদী’ শব্দটার অর্থ সম্পূর্ণ পরিষ্কার নয়। বর্তমান সমাজে মানুষ নারীদের সমান অধিকারের দাবীর কথা শুনে হাসে। কিছু মানুষের মতে, নারীরা বরং বেশিই পাচ্ছে। বর্তমান সমাজচিত্র দেখে অনেকে মনে করেন, নারীবাদের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে বরফখণ্ড ভাসতে দেখে, পানির নিচে তার আকার বোঝা যায় না। নারীবাদী  শব্দের সূচনা যখন হয়েছিল, তখন সমাজের চিত্র একদম ভিন্ন ছিল।

নারীবাদ মানেই পুরুষের সমান অধিকার আদায়ের মানসিকতা। যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে-মানুষ হিসেবে নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার প্রাপ্য, সেই নারীবাদী। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান সময়ের অনেক নারীবাদীদের মধ্যে পুরুষ বিদ্বেষী ভাব ফুটে ওটে। এই আচরণ কোনোভাবেই নারীবাদী হওয়ার প্রমাণ নয়!    

উনবিংশ শতাব্দীতে প্রথমবার ফেমিনিজম বা নারীবাদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছিল। ফ্রান্সের দার্শনিক চার্লস ফুরিয়ে ১৮৩৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শব্দটির ব্যবহার শুরু করেন। এরপর ১৮৭২ সালে  ফ্রান্স এবং ১৮৯০ সালে নেদারল্যান্ডসে ফেমিনিজম এবং ফেমিনিস্ট শব্দ দু’টির ব্যবহার হয়। পরবর্তীতে যা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়।

বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা ভোটের অধিকার আদায়ে এবং নারী-পুরুষ সমান ক্ষমতায়নের আন্দোলন শুরু করে। এই  আন্দোলন হয়েছিল কারণ, কর্মক্ষেত্রে সম্মান এবং আয়ের দিকে নারীরা ছিল পুরুষদের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে।  সমান অধিকার ছিল না বলেই, তা ছিনিয়ে নিতে বার বার আন্দোলনে নামতে হয়েছে নারীদের ।

স্রষ্টা পৃথিবীতে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ-কে পাঠিয়েছেন। অথচ বিবেক-বুদ্ধিবান মানব সমাজেই একপক্ষকে অপর পক্ষ থেকে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হয়েছে। ব্যাপারটা কেমন বেখাপ্পা নয় কি?

একটা সময় নারীদের নিজ ইচ্ছায় ঘর থেকে বের হওয়ার অধিকারও ছিল না। শিক্ষাগ্রহণ বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া ছিল স্বপ্নাতীত। ভারতীয় উপমহাদেশে এক সময় স্বামীর মৃত্যু হলে, জীবিত নারীদের তাদের সাথে পুড়িয়ে মারা হতো। নারীর ইচ্ছা না থাকলেও পরিবারের সকলে মিলে তাকে এই নিয়ম মানতে বাধ্য করতো। সম্রাট আকবর তার রাজত্বকালে, নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সতীদাহ প্রথা বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। এছাড়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে চালু হয়ে বিধবা বিবাহ আইন। ১৮৫৬ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা নারীদের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার ছেলেকে এক বিধবা কন্যার সাথে বিয়ে দিয়ে।

তৎৎকালীন এই অসমতার চিত্র, ইউরোপের অনেক লেখকের কলমে ফুটে উঠেছিল প্রাচ্যের বর্বরতা হিসেবে। তারা নারীদের প্রতি আচরণের কারণে, প্রাচ্যকে অনুন্নত বিবেচনা করতো। অথচ পশ্চিমের আচরণ যে নারীদের প্রতি খুব সম্মানজনক ছিল, নাও কিন্তু নয়!

ইংল্যান্ডের বাজারে একসময় বউ বিক্রি হতো। নারীদের লাল লিপস্টিক দিয়ে সাজ ছিল নিষিদ্ধ। কেবল দেহ ব্যবসায়ী নারীরাই লাল লিপস্টিকের ব্যবহার স্বাধীনভাবে করতে পারতেন। ১৮০০ সালের দিকে ঝগড়া করার অপরাধে এক ইউরোপীয়ান তার স্ত্রীর মুখে বেড়ি পড়িয়ে রাস্তায় হাঁটিয়েছিলেন। এমনকি নারী আন্দোলন এবং জাগরণের শুরুই হয়েছিল খোদ পশ্চিমের দেশগুলোতেই।  

সব মানুষেই নিজের জীবন স্বাধীনভাবে কাটাতে চায়। কেউই  পরাধীন থাকতে চায়না বিধায়, কালের বিবর্তনে বিশ্বজুড়ে বার বার বিদ্রোহ এবং আন্দোলন হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েও লড়ে গেছে স্বাধীনতার জন্য। বর্তমান সমাজ নারীর প্রতি যথেষ্ট নমনীয় হলেও, শুরু থেকে এমনটা ছিল না। সেই কারণেই নারীরা আন্দোলন করে অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে।    

;

'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'। বার্তা২৪.কম

'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'। বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক। তিনি ছিলেন উদার, অসাম্প্রদায়িক ও জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব। কিশোরগঞ্জের সমাজ প্রগতি ও জনসেবায় তিনি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মরণোত্তর সম্মাননা পদক প্রদানকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

কিশোরগঞ্জের সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্য বিষয়ক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবী নূরজাহান বেগমকে ১ম শাহ্ মাহ্তাব আলী ফাউন্ডেশন পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী অষ্টবর্গ শাহ্ বাড়িতে নবনির্মিত নান্দনিক স্থাপত্য শাহ্ মাহ্তাব আলী কালচারাল কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

পদকপ্রাপ্ত সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের পক্ষে তাঁর বড় ছেলে, মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বার্তা২৪.কম এর অ্যাসোসিয়েট এডিটর ড. মাহফুজ পারভেজ পদক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ‘জীবনের ধ্রুবতারা: আমার মা নূরজাহান বেগম ও কিশোরগঞ্জের স্মৃতি’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার প্রদান করেন।

পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাহ্ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার। এতে পদক প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন। পদক প্রদান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. গোলাম হোসেন।

এতে সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সি‌নিয়র আইনজীবী বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা না‌সির উ‌দ্দিন ফারুকী, সিনিয়র আইনজীবী, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, জেলা পাব‌লিক লাই‌ব্রে‌রির সাধারণ সম্পাদক মু আ ল‌তিফ, সি‌নিয়র সাংবা‌দিক আলম সা‌রোয়ার টিটু, সহকারী অধ্যাপক মো. সেলিম, ফ্রন্টিয়ার্স রিপোর্টার্স সোসাইটির সভাপতি মিনহাজ শিহাব ফুয়াদ, সমাজকর্মী লুৎফু‌ন্নেছা চিনু প্রমুখ। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ এবং বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআনখানি ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, কিশোরগঞ্জের বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ.এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্য বিষয়ক সমীক্ষাধর্মী মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবন কীর্তির ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা ছাড়াও বিভিন্ন জনহিতকর ও সমাজসেবামূলক কাজ করছে।

এছাড়া সমাজসেবী নূরজাহান বেগম বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসাসহ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। গত ১০ জানুয়ারি এই মহীয়সী নারী পরলোকগমন করেন। তাঁর কর্ম ও স্মৃতিকে অম্লান রাখার জন্য শাহ্ মাহ্তাব আলী ফাউন্ডেশন তাঁকে মরণোত্তর পদকে ভূষিত করেছে।

;

‘প্রতিবন্ধী নারীদের বাধা দূর করতে একসঙ্গে সাইরেন বাজাতে হবে’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), অ্যারো ও সিএনএস এর যৌথ উদ্যোগে ‘প্রতিবন্ধী নারী ও কিশোরীদের প্রতি সহিংসতা রোধ’ বিষয়ক একটি কর্মশালা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডিআরইউ সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় বেলা ১১টায় ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

এ সময় তিনি বলেন, বহুমুখী প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন প্রতিবন্ধী নারীরা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং স্পিকারসহ শীর্ষ পর্যায়ে নারী ক্ষমতায় থাকলেও নারীরা এখনও তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। এই নারীরাই যখন প্রতিবন্ধী হয় তখন তারা আরো নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন।


নারীদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না এমন মন্তব্য করে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, রাস্তাঘাটসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্ট থাকলেও মানুষের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবন্ধীদের নিয়েও পর্যাপ্ত পরিমানে প্রকল্প নেই। আমার মনে হয়, রাষ্ট্র একটা ভুল মডেলের দিকে যাচ্ছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সবাইকে একসঙ্গে বাঁশি এবং সাইরেনটা বাজাতে হবে, আওয়াজ এক সঙ্গে করতে হবে।

এসময় তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিকে এ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একটি সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে সরকার, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ এগিয়ে আসলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

কর্মশালাটিতে প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি ও ইউএন উইমেন বাংলাদেশ প্রকল্প সমন্বয় বিশেষজ্ঞ তুশিবা কাশেম মূল বিষয়ের উপরে আলোচনা করেন এবং অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়াও বক্তব্য দেন ডিআরইউ’র তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ।

অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, আপ্যায়ন সম্পাদক মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান ও কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, কার্যনির্বাহী সদস্য সোলাইমান সালমান, সুশান্ত কুমার সাহা, মো: আল-আমিন, এসকে রেজা পারভেজ ও মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ) উপস্থিত ছিলেন।

;