অ্যাঙ্গোলায় এখনও ইসলাম স্বীকৃত ধর্ম নয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অ্যাঙ্গোলার মুসলমানরা রাস্তায় নামাজ আদায় করছেন, ছবি: সংগৃহীত

অ্যাঙ্গোলার মুসলমানরা রাস্তায় নামাজ আদায় করছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলা। এটি আফ্রিকার সপ্তম বৃহত্তম দেশ। আফ্রিকার সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্র হওয়ার পরও বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর অন্যতম তারা।

স্বাধীনতার পর টানা ২৭ বছর গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটি ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে।

দরিদ্র এই দেশটি এখনও ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তেল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এলেও মূলত দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

অ্যাঙ্গোলার রাজধানীর নাম লুয়ান্ডা। ১২ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর ৯৩ ভাগই খ্রিস্টান।

অ্যাঙ্গোলায় মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ বলে জানিয়েছেন সেখানকার মুসলিম কমিউনিটির প্রধান ডেভিড আলবার্তো জামেল। ৯ লাখ মুসলিমের বসবাস হলেও দেশটিতে স্বীকৃতি নেই ইসলাম ধর্মের। যদিও ইসলাম বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধর্মস্থানীয় ধর্ম।

আলবার্তো জামেল অনইসলাম ডটনেটকে বলেন, যদিও অ্যাঙ্গোলাতে অনেক আগে থেকেই ইসলামের শিকড় প্রোথিত রয়েছে, কিন্তু ইসলাম দেশটিতে প্রসার লাভ করে ১৯৯০ সালের দিকে পশ্চিম আফ্রিকান দেশ মালি, সেনেগাল ও গিনি থেকে গণহারে অভিবাসনের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, অ্যাঙ্গোলার ধর্ম জাতির বিশেষ বাস্তবতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যার রাজনৈতিক ইতিহাস সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ ও বহু বছরের গৃহযুদ্ধের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও আইনি সংস্কারের গতি এখানে খুবই ধীর। আগের শাসকেরা ইসলাম ধর্ম ইস্যুতে ততটা উদার ছিলেন না। ফলে অ্যাঙ্গোলার মুসলমানেরা আজ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন। বর্তমানে এখানে সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যুগুলোর একটি হচ্ছে ধর্মবিষয়ক আইন।

২০০৪ সালে সেখানে যে আইন করা হয়, তাতে বলা হয় যেকোনো ধর্মকে অবশ্যই রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে। এর কমপক্ষে এক লাখ সদস্য থাকতে হবে এবং দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গায় তাদের উপস্থিতি থাকতে হবে। এ ছাড়া কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে বৈধ করতে হলে ওই ধর্মের লোকদের কমপক্ষে ৬০ হাজার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে।

অ্যাঙ্গোলায় বর্তমানে এক হাজার ধর্মীয় সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র ৮৪টিকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

আলবার্তো জামেল বলেন, ইসলাম এখন এখানকার বাস্তবতা, যা অস্বীকার করা যায় না। এখন তারা ৬০ হাজার স্বাক্ষর গ্রহণের কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি বলেন, আগে এ সংখ্যাটি এক লাখ ছিল। পরে আইন সংশোধন করে তা ৬০ হাজারে নামিয়ে আনা হয়।

২০১৩ সালের দিকে খবর আসে, অ্যাঙ্গোলা সরকার সেদেশে ইসলাম ধর্মকে নিষেধ ঘোষণা করেছে এবং দেশটির মসজিদগুলোও ধ্বংসের কাজ শুরু করেছে। যদিও পরে এ খবরের সত্যতা মেলেনি। কিন্তু এটা বাস্তব, দেশটিতে মুসলমানরা বেশ চাপে আছেন।

   

৬ এজেন্সিকে শোকজ

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের পরও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয় হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য। এরপরও কোনো হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করেনি ৫টি এজেন্সি। আর একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে। ফলে এসব এজেন্সির ১৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। আগামীকাল বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।

একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন না পাঠানোসহ বেশি কিছু অনিয়মের জন্য বেসরাকরি হজ এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ার করার পাশাপাশি হজ ফ্লাইট ডাটা যথাসময়ে এন্ট্রি করার জন্য এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের নিকট থেকে কোরবানির অর্থ না নেওয়ার জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জুম প্লাটফর্মে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা এয়ারপোর্ট সার্ভিসের মহাপরিচালক আবদুর রহমান ঘ্যানামের সঙ্গে সভা শেষে এসব নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাংলাদেশ হজ অফিস, মক্কা ও জেদ্দার কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির মালিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সি কর্তৃক ফ্লাইট ডাটা সঠিকভাবে ও নিয়মিত সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, হজ ফ্লাইট ডাটা এন্ট্রি না দেওয়ার কারণে মদিনা ও জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে কোন ফ্লাইটে কতজন হজযাত্রী আসছে, তারা কোন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী এবং কোন হোটেল বা বাড়িতে তাদের আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া হজযাত্রী ও তাদের লাগেজ পরিবহনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। মোয়াল্লেমের প্রতিনিধিও হোটেল বা বাড়িতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছে না। এ কারণে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না এবং রুট-টু-মক্কার সুবিধা থেকে হজযাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সভায় হজ ফ্লাইট যাত্রা শুরুর পূর্বেই সঠিকভাবে ফ্লাইট ডাটা সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি করার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, হজ প্যাকেজে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের নিকট থেকে হজে গমণের পূর্বে কোরবানি বাবদ অর্থ নিচ্ছেন। হজযাত্রী তার ইচ্ছা মাফিক সৌদি সরকারের ব্যাংকের কূপন ক্রয় করে বা তার নিজের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এজেন্সি কোনোভাবেই কোরবানির টাকা নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি পত্র জারি করেছে। পত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে আরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে হজগাইড বা প্রতিনিধি না পাঠানোর কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু হজ এজেন্সি তাদের হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন পাঠিয়েছে, যা জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছে। এতে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে জেদ্দার সহকারী মৌসূমি হজ অফিসার এবং হজ কাউন্সেলর চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানান, গত ১১ মে ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটযোগে হজপালনের জন্য সৌদি গমনকারী দুই নারী হজযাত্রীর ৪টি সুটকেস ভর্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জর্দাসহ নানাপ্রকার তামাকপাতা থাকায় স্থানীয় কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেগুলো জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ সুটকেসে থাকা মালামাল জব্দ করে খালি সুটকেসগুলো হজ টার্মিনালে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসে হস্তান্তর করে। ওই দুই হজযাত্রী উল্লাস ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস্ (লাইসেন্স নম্বর: ১২৭৭)-এর মাধ্যমে হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে কাষ্টমস্ রুলস্ অনুসরণের পাশাপাশি বর্ণিত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

;

৯৪ দিনে হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের অক্টোবরে সাড়ে ৫ মাসে ৮ বছর বয়সী কিশোর সাফায়াত মুকতাদির প্রান্ত কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাত্র ৯৪ দিনে কোরআন মাজিদের হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর নুসাইব কুদরতি। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী মিরপুরের (রূপনগর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

নুসাইব কুদরতী খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা নিয়ামত আলী কুদরতীর ছেলে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা নিয়ামত আলী। তার আশা, নুসাইব একসময় বড় আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে।

নুসাইব কুদরতীর শিক্ষক হাফেজ কারি ফরহাদ বিন নাসেরী বলেন, ‘মহাগ্রন্থ কোরআন মাজিদের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটছে- আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ছাত্র নুসাইব কুদরতী মাত্র ৯৪ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোরআন মুখস্থ করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহতায়ালা এ শিশুকে দীনের জন্য কবুল করুন।’

তিনি আরও জানান, নুসাইব শুরুতে দুই পৃষ্ঠা করে সবক দিলেও শেষের দিকে দিনে ১০ পৃষ্ঠা করে সবক দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি বাচ্চাকে টার্গেট ফিক্সড করে পড়াশোনা করাই। সেই টার্গেট অনুযায়ী নুসাইব আন্তরিকতার সঙ্গে মেহনত করেছে এবং শিক্ষক তার পেছনে সর্বস্ব ব্যায় করে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের প্রতিটি ছাত্রকে এভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান দিয়ে থাকি।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মামুনুর রশীদ বলেন, এ ছেলেটি পাঁচ বছর বয়স থেকে আমাদের এখানে পড়াশোনা করছে। তার বাবা একজন চাকুরীজীবী। এমন অনেক বাচ্চা আমাদের এখানে আছে। দীন ও ইসলাম শিক্ষা অর্জন করছে। কোরআনে হাফেজ হচ্ছে, পাশাপাশি স্কুলের পড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।

;

সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ৭১ জন, বাড়তে পারে নামের তালিকা



মুফতি এনায়েতুল্লাহ অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রীয় খরচে পবিত্র হজ পালনের সুযোগ সীমিত করার সিদ্ধান্ত বছর না ঘুরতেই পাল্টে গেল। এ বছর সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ৭১ জন। তবে সূত্রে জানা গেছে, নামের তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। নতুন তালিকায় সাংবাদিক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরকারের আর্থিক সহায়তায় হজপালনে যাওয়া ব্যক্তিদের নামে ইতিমধ্যে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বর্তমান বিচারপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। এতে সরকারের খরচ হবে প্রায় তিন কোটি টাকা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে তারা আগামী ৬ জুন সৌদি আরব যাবেন। হজ শেষে তাদের দেশে ফেরার কথা আগামী ১০ জুলাই। সরকারি খরচে হজে যাওয়া ব্যক্তিরা বিমানের টিকিট বাবদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা জমা দেবেন। এর বাইরে প্রত্যেক হজযাত্রীকে নিজ দায়িত্বে কোরবানি (দমে শোকর)-এর খরচ বাবদ আটশত সৌদি রিয়াল পৃথকভাবে সঙ্গে নিতে হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইট ভাড়ার বাইরে সব খরচ সরকার বহন করবে। এমনকি হজে যাওয়ার আগে সবাইকে খাবার বাবদ ৩৫ হাজার টাকা করে হজ অফিস থেকে নগদ প্রদান করা হবে। এভাবে একেকজনের পেছনে সরকারের খরচ হবে প্রায় চার লাখ টাকা।

প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ বছর রাষ্ট্রীয় খরচে যারা হজে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ২৩ জন। আরও রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. কুদ্দুস খান ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান। তালিকায় প্রবীণ রাজনীতিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মো. মঞ্জুরুল আহসান খানের নামও রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, গাড়িচালক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন তালিকায়। তাদের মধ্যে চার দম্পতি রয়েছেন। রয়েছেন ভাই-বোনও।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। ইতোমধ্যে হজযাত্রার ফ্লাইট শুরু হয়েছে এবং ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গমন করেছেন।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ প্রায় পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ধার্য করা হয়। আর, বেসরকারিভাবে সর্বনিম্ন প্যাকেজ প্রায় পাঁচ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

২০২৩ সালে সরকারিভাবে হজ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছিলো ছয় লাখ ৮৩ হাজার টাকা। বেসরকারি প্যাকেজে খরচের সর্বনিম্ন সীমা ছয় লাখ ৭২ হাজার টাকা স্থির করা হয়।

রাষ্ট্রীয় খরচে যারা হজে যাচ্ছেন

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুরের মো. আ. করিম, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. নুরুল ইসলাম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম, নড়াইলের শেখ নওশের আলী, রাজবাড়ির মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, গাইবান্ধার মো. তাজুল ইসলাম সরকার, কুমিল্লার বাহার উদ্দিন রেজা (বীর প্রতীক) ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম, গোপালগঞ্জের মো. ফিরোজ ফকির, বরিশালের আল্লামা হারুন-অর-রশিদ, ঝালকাঠির তাজুল ইসলাম চৌধুরী, রংপুরের আনোয়ারা বেগম, মো. ফজলাল রহমান, ঝিনাইদহের মো. নুরুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের মো. আবদুস সবুর ফারুকি, মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী বিউটি বেগম।

নাম রয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মো. মঞ্জুরুল আহসান খান, নেত্রকোনার মো. কামরুজ্জামান ও গোপালগঞ্জের খান ইবনে আসিফের।

আর নাম রয়েছে- সংসদ ভবনের অভ্যর্থনাকারী মো. সাজ্জাদ হোসেন, কমিটি শাখা-৮ এর মো. জজ মিয়া, রংপুরের হাফেজ মো. রফিকুল ইসলাম ফারাজী, টাঙ্গাইলের মো. মোন্তাজ আলী, টাঙ্গাইলের কে এম ইমদাদুল আলম (শামিম), গোপালগঞ্জের মো. আ. মান্নান খাঁন ও তার স্ত্রী মাকসুদা আক্তার, গোপালগঞ্জের হাবিবুর রহমান, রংপুরের মো. জয়নাল আবেদীন প্রধান, ঢাকা মিরপুরের মো. আ. মালেক, গাইবান্ধার মো. তোফাজ্জল হোসেন, জয়পুরহাটের মোছা. মাহফুজা বেগম, নাটোরের মো. মারুফ হোসেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসলাম উদ্দিন, প্রেস উইংয়ের মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, অফিস সহায়ক পারুল পারভীন, ব্যক্তিগত সহকারী মো. আজহারুল হক, সহকারী সচিব মীর এমদাদ হোসেন, সহকারী সচিব মোসা. আমেনা খানম, গাড়িচালক মো. আবুল কালাম, গাড়িচালক মোছা. মমতাজ বেগম, উচ্চমান সহকারী মোসা. ছালমা বেগম, ওয়ার্ক চার্জড লাইনম্যান মো. মাইনুদ্দিন, সহকারী সাইন অপারেটর মো. মিজানুর রহমান, ওয়ার্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট মো. আবুল কাশেম, পাওয়ার মেশিন অপারেটর আবু তাহের, সহকারী সচিব মো. মোতাহের হোসেন ও তার স্ত্রী মোসা. হাফেজা আক্তার, পুলিশ পরিদর্শক মো. লুৎফুর রহমান, বার্তাবাহক ফখরুদ্দিন আহমেদ, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর খন্দকার আজিজুর রহমান ও মো. সাজিদুর রহমান, পরিছন্নতা কর্মী গোলাপ মিয়া, মো. আব্দুল মান্নান, এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর উচ্চমান সহকারী মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গাড়িচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন ও তার স্ত্রী রওশন আরা বেগম, মুন্সিগঞ্জের এ কে এম মজিবুর রহমান, ধানমন্ডির অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. জাকির হোসেন, সর্বপ্রাপ্ত সচিব মো. কুদ্দুস খান, নাটোরের বর্ষিয়ান নেতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মোল্লার দুই সন্তান সুলতানা পান্না ও মো. মেহেদী হাসান, কুমিল্লার মো. মকবুল হোসেন, জামালপুরের ফারুক আহমেদ, বরগুনার মো. আব্দুল আলীম (বাবুল), ময়মনসিংহের মো. রফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালীর মো. আব্দুস সাত্তার আকন, খুলনার বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান, পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান।

২০২৩ সালে রাষ্ট্রীয় খরচে হজ করেন মাত্র ২৩ জন

প্রতিবছরই কয়েক শ মানুষকে রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনের জন্য পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় ২০২২ সালে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫৪ জনকে হজে পাঠানো হয়েছিল।

২০২৩ সালে রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়ে। আবেদনকারীদের মধ্যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব ও তাদের গানম্যান, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নাম থাকায় এটা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি রাষ্ট্রীয় খরচে পছন্দের লোক পাঠাতে কোটা দাবি করেছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যরা। তাদের বেশির ভাগ সদস্যই নিজ সুপারিশে অন্তত দুজন করে হজে পাঠানোর সুযোগ চেয়েছিলেন। ফলে সরকারি টাকায় হজে যেতে আবেদনকারীদের নানামুখী চাপ, সমালোচনা ও তদবিরে জেরবার হয়ে উঠেন ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে হজের খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাওয়ার লাগাম টানে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী মাত্র ২৩ জন রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যান। তবে, তাদের বিমান ভাড়া বাবদ এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা পরিশোধ করতে হয়।

আইনে কী আছে?

রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রী পাঠানোর বিষয়টি বিদ্যমান হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনা বিধিমালাতেই আছে। বিধিমালার ২৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনীয়সংখ্যক অসচ্ছল ব্যক্তিকে হজ করিবার উদ্দেশ্যে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করিতে পারিবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এই সহযোগিতার পরিমাণ নির্ধারণ করিতে পারিবে।’ এর ভিত্তিতেই প্রতিবছরই কয়েক শ মানুষ রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাচ্ছেন। কয়েক দশক ধরেই এই চর্চা চলে আসছে।

হজ ব্যবস্থাপনা বিধিমালায় অসচ্ছল মুসলমানদের এই সুযোগ দেওয়ার বিধান থাকলেও অসচ্ছলরা সুযোগ পান খুবই কম। মূলত সরকারের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ কিছু মানুষ প্রতিবছর সরকারি খরচে হজে যান।

সরকারি খরচে হজের বিধান

কেউ রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালন করলে তার হজ আদায় হবে বলে অভিমত দিয়েছেন ইসলামি স্কলাররা। উত্তরা বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাষ্ট্রীয় খরচে কেউ হজ করলে তার ফরজিয়ত আদায় হয়ে যাবে। কেননা হজের জন্য সক্ষমতা শর্ত। আর হজের যাবতীয় খরচ সরকারের পক্ষ থেকে তার নামে বরাদ্দ করা হয়। আর তখন তিনি সেই সম্পদের মালিক হয়ে যান। অবশ্য সক্ষম মুসলিম ব্যক্তির জন্য নিজের উপার্জিত পবিত্র সম্পদ দ্বারা হজ করাই উত্তম বলে তিনি মত দেন।

;