কমেছে কৃষি পণ্যের দাম, হতাশ কৃষক
এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় কমেছে সব ধরনের কৃষি পণ্যের দাম। মাঠ থেকে ফসল ওঠার পর ভালো দাম পায়নি কৃষকরা। আর মৌসুম শেষ হতে চললেও দাম না বাড়ায় হতাশ তারা।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বোরো মৌসুমে ৯৩ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। বোরো উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৪ হাজার ২৪৫ টন (চাল)। আউশ ধানের চাষ হয় ৩১ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২২ হাজার ৫৯২ টন।
এদিকে বোরো ধান ওঠার পর থেকে দাম কমতে শুরু করে। এক সময় প্রতি মণ মোটা ধানের দাম সাড়ে ৫শ টাকায় নেমে আসে। এরপর সরকারের বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরু হলে সব ধানের দাম মণ প্রতি একশ টাকা করে বাড়ে। এর কিছু দিন পর ফের দর পতন হয়।
আউশ ওঠার পর বোরো ধান মণ প্রতি ৬শ টাকা থেকে সাড়ে ৬শ টাকা দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে আর বি আর-২৮ ধান প্রতি মণ ৭শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আগাম চাষ করা নতুন আমন ধান সবে কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে আমদানি বাড়লে দাম আরও কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে কৃষকরা।
অপরদিকে এ বছর জেলায় পেঁয়াজের চাষ হয়েছিল ৭ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ২২ হাজার টন পেঁয়াজ। নতুন পেঁয়াজ ওঠার পর দাম কমে যায়। তখন প্রতি মণ পেঁয়াজ ৭শ টাকা থেকে ৮শ টাকা দামে বিক্রি হয়। মাঝে এক সময় দাম বেড়ে ১৮শ টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। এরপর দাম কমতে থাকে।
বর্তমানে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৮ থেকে ৯শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশের অন্যতম প্রধান পেঁয়াজের হাট শৈলকুপায় মণ প্রতি ৭শ থেকে ৯শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মোল্লা জানান, তিনি প্রতি বছর পেঁয়াজ চাষ করেন। এ বছর সাড়ে ৩শ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল তার। তবে এ বছর পেঁয়াজ চাষ করে লোকসান হয়েছে।
এবার জেলায় রসুনের চাষ হয়েছিল ২৪১০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ২০ হাজার ১৯৮ টন রসুন। বর্তমানে প্রতি মণ রসুন ৫-৬শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর ডালেরও দর পতন হয়েছে। সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে মসুর চাষ হয়। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার টন। জমি থেকে মসুর ডাল ওঠার পর প্রতি মণের দাম ছিল ২২শ থেকে ২৪শ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ১৭শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লোকসানের মুখে পড়েছে। অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারাতে বসেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ জানান, কৃষি পণ্যের বাজারের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকেন।