অভিমানে জার্মানিকে বিদায়ই বলে দিলেন ওজিল

  •   সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম  
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকমাস ধরেই একটু একটু করে জমেছিল অভিমানের মেঘ। অবহেলায় মনটা বিষন্ন হয়ে উঠেছিল। এবার সেই অভিমানের মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ল। নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলেন না মেসুত ওজিল। জার্মানিকে বিদায় বলে দিলেন ক্ষুদ্ধ এই বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার। এখন আর্সেনালের হয়ে ক্লাব ফুটবলেই শুধু দেখা যাবে খেলা গড়ার এই কারিগরকে!

রোববার রাতে আচমকাই এই কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন ওজিল। এছাড়া অন্যকিছু যেন করারও ছিল না তুর্কি বংশোদ্ভুদ এই জার্মান ফুটবলারের। তার জাতিসত্বা প্রসঙ্গটা নিয়ে এতোই জলঘোলা হচ্ছিল যে যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাইতো বিদায় বেলায় আবেগী এক খোলা চিঠিতে ধর্মপ্রাণ এই মুসলিম ফুটবলার লিখে গেলেন, 'দেখুন আমি খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাই গত কিছুদিনের ঘটনার কারণে আমি আর জার্মানির জার্সি গায়ে দিতে চাইছি না। আমার মনে হয়েছে আমি বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছি। অসম্মান করা হয়েছে আমাকে।'

বিজ্ঞাপন

অথচ বয়স তার মাত্র ২৯। ইচ্ছে করলেই বছর চারেক খেলে যেতে পারতেন দেশের হয়ে। কিন্তু আত্মসম্মানের ওপর তো আর কিছু নেই। এ কারণেই বিদায় বলেই ফেললেন ওজিল।

ঘটনার সুত্রপাত রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে। লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ানের সঙ্গে একটি ছবিতে একসঙ্গে দেখা যায় তাকে। তারপরই বিষয়টা রাজনৈতিক রঙ পায়।

বিজ্ঞাপন

তুর্কি রাস্ট্রনায়ক এরদোয়ানকে স্বৈরাচারী বলে মনে করে জার্মানি। ওজিলের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের (ডিএফবি) প্রধান রেইনহার্ড গ্রিনডেল বলেন, ‘সম্প্রতি সময়ে স্বৈরাচারী অবস্থানে যাওয়া এরদোয়ানের সঙ্গে ছবি তোলা ভালো কোনো ব্যাপার নয়।’

ব্যস, এরপর থেকেই শুরু হয় তার প্রতি অবহেলা। রাশিয়া বিশ্বকাপে একাদশে তার জায়গাটাও হাতছাড়া হয়ে যায়। অবস্থা এখন এমনই হচ্ছিল যে দল জায়গা পাওয়া নিয়ে অসহায়ের মতো তাঁকিয়ে থাকতে হচ্ছিল তাকে। যদিও সেই ছবি প্রসঙ্গে ওজিল নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছিলেন এভাবে, ‘এটার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। শুধুই আমার পূর্বপুরুষের দেশ তুরস্কের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সম্মানে ছবিটি তুলেছিলাম।’ বলা দরকার, ওজিলের বাবা-মা দুজনই তুরস্কের। তারা একসময় পাড়ি জমান জার্মানিতে। সেখানেই অভিবাসী নাগরিক হয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। 

পারফরম্যান্সের কারণে নয়, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে দলে কোনাঠাসা হয়ে পড়েন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই ফুটবলার। ২০০৯ সালে জার্মানির হয়ে অভিষেক। এরপর ৯৩ ম্যাচ খেলে ওজিল করেছেন ২৩ গোল। অনাকাংখিত এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই শেষ হল এই মিডফিল্ডারের আর্ন্তজাতিক ক্যারিয়ার।