শহরে দুশ্চিন্তার কারণ ডেঙ্গু
রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এডিশ মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নগরের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে মোট ৫৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৩২ জন। তবে বাস্তবে এই সংখ্যা আরো বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের ৫৪ জন ডেঙ্গু ফিবার এবং ৪ জন ডেঙ্গু হেমোরেজিকে আক্রান্ত হয়েছেন।
এর আগে সোমবার দুপুর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৭ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিকিৎসক আয়শা আক্তার বার্তা২৪কে বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে না আপাতত। ঢাকার ভেতরেই আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এই বছরের শুরু থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৬২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই ৮৯৭ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নগরীরর হাসপাতালগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে গত দুই বছর চিকুনগুনিয়ার প্রভাব বেশি থাকায় এই বছর প্রবণতা কম।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ পারভেজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যেহেতু চিকুনগুনিয়া একবার হলে আরেকবার হয় না, সেহেতু এইবার প্রাদুর্ভাব কম। তবে চলতি বছরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে জুন মাসে ৩ জন এবং জুলাই ও আগস্ট মাসে ৪ জন করে আক্রান্তের মৃত্যু হয়। এপ্রিল থেকেই প্রতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জুন থেকে তা অনেক বেশি হয়ে যায়। আগস্ট মাসে মোট আক্রান্ত রোগী সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৬৬ জন। তবে এই মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের পরে এই বছরেই আবারো ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা এতো বেশি বাড়ছে।
চিকিৎসকরা অবশ্য সচেতনতা ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সব সময় মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
ডা. পারভেজ বলেন, ঢাকা শহরে কারো জ্বর আসলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। কারণ যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের বেশিরভাগই সময়মতো হাসপাতালে যাননি। রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে পানিশূন্যতার এবং প্রেশার কমে যায়। তাই এ ধরনের লক্ষণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর মশারি টানিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস রপ্ত করতে হবে।