খাঁচার ভেতরে লেমুরের পরিবারে নতুন অতিথি
পাচারকারীদের খপ্পরে পরে বাংলাদেশে এসে প্রশাসনের জালে আটকা পড়েছিল আফ্রিকান প্রাণী এক জোড়া লেমুর। পরে লেমুর দুইটির স্থান হয় গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কোরাইন্টাইনে (বিশেস জোন)।
অবশেষে আবদ্ধ অবস্থায় গত ২৭ নভেম্বর একটি মা লেমুর দুইটি বাচ্চার জন্ম দেয়। ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশে লেমুরের বাচ্চা দেওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা।
বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিছুর রহমান জানান, উদ্ধারের পর থেকেই লেমুর দুইটিকে পার্কের কোরেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। সেখানেই দুটি বাচ্চার জন্ম হয়। লেমুর দেখতে অনেকটা বানর বা হনুমানের মতো। লেমুর হল আফ্রিকার মাদাগাস্কারের প্রাইমেট গোত্রভুক্ত কিছু প্রাণীর সমষ্টিগত নাম। যার অর্থ ভূতের মত। রাতের আধারে লেমুরের মুখে আলো ফেললে অনেকটা ভূতের মত দেখায়, তাই এর নামকরণ করা হয়েছে এভাবে।
তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিকভাবে লেমুর সাধারণত আফ্রিকার মাদাগাস্কারেই দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রজাতিটি খুব সম্ভবত সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে মাদাগাস্কারে আবির্ভূত হয়েছিল। লেমুরের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে আচরণের অনেক পার্থক্য দেখা যায়।
বড় আকারের লেমুররা সচরাচর দিনের বেলা ঘুরাফেরা করলেও ছোট আকারেরগুলো নিশাচর হয়। এদের মধ্যে সামাজিক ব্যবস্থা, কার্যকলাপ, শিকার থেকে সুরক্ষিত থাকার কৌশল, প্রজনন ও বুদ্ধিমত্তার পার্থক্যও দেখা যায়। দলবদ্ধভাবে থাকার পরও খাদ্য সংগ্রহের জন্য এরা একা বিচরণ করে এবং খাদ্যগ্রহণ শেষে পুনরায় দলে ফিরে আসে।
লেমুর অনেক ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে। তবে ছোট আকারের লেমুর পতঙ্গ ও ফল ফলাদি খেয়ে থাকে। অপরদিকে বড় আকারের লেমুর গাছপালা ও লতাপাতা খেয়ে জীবনধারণ করে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বেশ কিছুদিন আগে শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ বিভিন্ন প্রাণী উদ্ধার করে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে। এর মধ্যে দুইটি লেমুর ছিল। সম্প্রতি একটি মা লেমুর পর্যবেক্ষণে থাকা অবস্থায় বাচ্চার জন্ম দেয়। ধারণা করা যাচ্ছে পাচারের সময়ই এই প্রাণীটি গর্ভবতী ছিল। এখন বাচ্চাসহ লেমুরগুলো সুস্থ রয়েছে।