দাবি আদায়ে ভাঙচুর-ধর্মঘট বোকামি: সিএমপি কমিশনার
দেশের উন্নয়নের মাইফলক গার্মেন্টস সেক্টরের ক্ষতি করে যে কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকতে শ্রমিকদের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান।
তিনি বলেছেন, `কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি, মিস ম্যানেজমেন্ট, অসহযোগিতা এবং অত্যাচারের ঘটনা থাকলে গার্মেন্টস মালিকদের সাথে কথা বলে সমাধান করা যায়। কিন্তু দাবি আদায়ের জন্য ভাঙচুর কিংবা ধর্মঘট পালন করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।’
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুর দেড়টায় বিজিএমইএ চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকরিকালীন মৃত্যুবরণকারী শ্রমিক গ্রুপ বীমা দাবির চেক হস্তান্তর উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজিএমইএ।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে গার্মেন্টস মালিকরা সরকারের অন্য সংস্থার কাজের চেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। কেবলমাত্র ব্যবসার মাধ্যমে তাদের শিল্পকে বিস্তৃত করেনি। বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীকে জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই কোটি উপকারভোগী পরিবার এর সাথে সম্পৃক্ত। এ শিল্পের মাধ্যমে সমাজ বিকাশে সহায়তা করছে। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা ও পুঁজি দিচ্ছেন মালিকরা। আরেকটি প্রয়োজনীয় উপাদান হচ্ছে শ্রম। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ শহরে এসে গার্মেন্টেসে কাজ করে তার পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। গার্মেন্টস বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, শিল্প বেঁচে থাকলে শ্রমিক বেঁচে থাকবে। শিল্পের ক্ষতি আর জীবিকার স্থলকে ক্ষতি করে কোনো আন্দোলন করা অনৈতিক।’
গার্মেন্টসকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিক ও শিল্প মালিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের। শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করে না এমন মালিকদের সংখ্যা কম। যদি থাকে তাদের আমরা সনাক্ত করে বিজিএমইএর সহায়তা নেই। না হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেই। সকলের সহযোগিতায় সরকারে স্বপ্ন ও উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
বক্তব্য শেষে সিএমপি কমিশনার বিভিন্ন কারখানায় মৃত্যুবরণকারী ২১টি পরিবারের হাতে গ্রুপ বীমার দুই লক্ষ টাকার চ্যাক তুলে দেন। চট্টগ্রাম ছাড়াও ঢাকায় কর্মরত এমন পরিবারের হাতে ১০৫ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছে পোশাক শিল্পের এই বৃহত্তম সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি মঈনউদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘দেশি-বেদেশি বিভিন্ন কুচক্রী মহল গার্মেন্টস শিল্পেকে ধ্বংস করার জন্য পায়তারা করে যাচ্ছে। পেট্রোল বোমা, রানা প্লাজা, হলি আর্টিসান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পেছনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। একমাত্র শ্রমিকদের আন্তরিকতা, সততা আর পোশাক মালিকদের কারণে তা সম্ভব হয়নি।’