বঙ্গোবসাগরের নাফনদী মোহনা থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে চলাচলের দুটি ট্রলারসহ ৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এর আগে সম্প্রতি সময়ে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বুধবার সকালে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘গতকাল টেকনাফ থেকে দুইটি ট্রলার রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে আরকান আর্মি সদস্যরা বঙ্গোবসাগরের নাফনদী মোহনা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এসময় ট্রলারে ৬ জন স্টাফ ছিল। তারা সবাই সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা। ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলারের মধ্যে আমার একটি ট্রলার রয়েছে। এ বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের অবহিত করা হয়েছে।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা নুর আলম বলেন, ‘টেকনাফ থেকে দ্বীপে আসার পথে দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে। সেখানে ট্রলারে ৬ জন মানুষ রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে।’
এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মালামাল ভর্তি দুটি ট্রলারসহ ৬ জনকে মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে কারা কিভাবে ঘটনা ঘটেছে খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
তবে এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে কেউ অবহত করেননি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিইদ্দীন আহমেদ।
এবিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। যদি এবিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় তাহলে বিজিবি এবং কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ করে জেলেদের ফিরিয়ে আনা হবে।’
নেপাল ও ভুটানের তৈরি জলবিদ্যুৎ ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে সোশ্যাল বিজনেস গ্রুপের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুৎ গ্রিড না থাকায় হিমালয়ের দেশগুলোর বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনা স্তিমিত রয়েছে।
নেপালের কর্মকর্তারা জানান, দেশটির ৪০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মতো বড় দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরি করার কথা ভাবতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ সহজেই নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারে কারণ এটি বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৪০ মাইল দূরে। নেপালের জলবিদ্যুৎ সহজলভ্যও হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বন্যা রোধে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পানি ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পানি আমাদের প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। আমাদের এমনভাবে পানি ব্যবস্থাপনা করতে হবে যাতে তা প্রকৃতিকে সমর্থন করে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুব উন্নয়ন ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত বার্ষিক টি-টোয়েন্টি বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন জানুয়ারিতে তরুণদের জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করবে সরকার।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং আইওসি প্রেসিডেন্ট টমাস বাখ উৎসবে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নারী ফুটবলের জন্য একটি টুর্নামেন্টেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা দেশের সব জায়গায় উৎসব করার চেষ্টা করছি।
অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান, যার মাধ্যমে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছিল সে সম্পর্কেও আলোচনা করেন।
তিনি কপ ২৯ এর মূল বিষয় এবং কার্বন ক্রেডিট নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থানের বিষয়েও কথা বলেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাক্টরচাপায় ওসমান আলী নামের এক মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বিদিরপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল হাই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওসমান আলী পৌর এলাকার মিল্কি মহল্লার উজ্জল আলীর ছেলে। সে স্থানীয় আলোর দিশারী মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকাল পৌনে ১০টার দিকে মাদরাসার বিরতিতে ওসমান বাই-সাইকেলযোগে বাসায় ফিরছিলেন নাস্তা করার জন্য। এ সময় পেছন থেকে বালুবোঝাই একটি টাক্টর তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওসমান। স্থানীয়রা ঘাতক ট্রাক্টর ও এর চালক রনি ইসলামকে মারধর করে আটকে রাখে। রনি ইসলাম সদর উপজেলার শ্রীরামপুরের কবির ইসলামের ছেলে।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল হাই জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওসমানের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘাতক ট্রাক্টর জব্দ ও চালক রনি ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
লিবিয়ায় আটকে পড়া আরও ১৪৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসেন তারা। এ সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে আসা অভিবাসীদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ দূতাবাস, ত্রিপোলির প্রচেষ্টা ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া অন্য বাংলাদেশিদেরও দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এরই ধারাবহিকতায় খুব শীঘ্রই অনিয়মিত অভিবাসীদের লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
প্রত্যেক প্রত্যাবাসনকারীকে খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অস্থায়ী বাসস্থানসহ ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিল। মূলত মানব পাচারকারীদের প্ররোচনায় পড়ে এ কাজ করেন তারা। তাদের অনেকেই লিবিয়ায় থাকাকালীন অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ মিশন এবং আইওএম লিবিয়া জুড়ে বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।