মিম-করিমের মৃত্যু, সহপাঠিদের দিলো নিরাপত্তা  

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে রাখা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চকচকে পাঁচটি বাস। জীবন দিয়ে সহপাঠিদের জন্য নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা করে গেছে দিয়া-করিম। বাসগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছে তাদের রবিউল, তন্ময়রা। যাদের বুকে এখনও সহপাঠি হারানোর শোক।

বাসগুলো দেখতে দেখতে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র তন্ময় বার্তা২৪.কমকে বলেন, করিম ও মিমের মৃত্যু যেন বৃথা না যায় আমরা সেই জন্য আন্দোলন করেছি। সরকারও আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছে এবং ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। আমরা চাই বাকি দাবিগুলো যেন প্রধানমন্ত্রী দ্রুত পূরণ করেন। তাহলেই করিম ও মিমের আত্মা শান্তি পাবে। আর এই বাস আমাদের কাছে মিম-করিমের স্মৃতি হয়ে থাকবে।

বিজ্ঞাপন

রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজকে পাঁচটি বাস প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি মেনে নেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার একটি পূরণ করছেন। এই ৫ টি বাস পাওয়ার পর  এখন নিরাপদে কলেজে আসা যাওয়া করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বাস পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তারা জানান, আমাদের প্রিয় দুই সহপাঠীর অকাল এই মৃত্যুকে বৃথা যেতে দিবেন না। প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের অন্তর থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (০৪ আগস্ট) শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজকে সরকারের পক্ষ হতে ৫ টি বাস উপহারের পর শিক্ষার্থীরা বার্তা২৪.কমকের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

এর আগে সকালে সাড়ে ৯ টায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ প্রাঙ্গণে বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূইয়া ঢাকা অঞ্চলের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের স্কুল ও কলেজের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং লজিস্টিক এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আতাউল হাকিম সরওয়ার হাসানের কাছে ৫ টি বাসের চাবি হস্তান্তর করেন।

নিজেদের কলেজ ৫ টি বাস উপহার পাওয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র রবিউল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মিম ও করিমের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম নিরাপদ সড়কের দাবিতে। সেই আন্দোলন থেকে আমরা কিছু দাবি সরকারের কাছে রেখেছি। আমরা অত্যন্ত খুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা এখন আশাবাদি সরকার ধীরে ধীরে আমাদের অন্য দাবিগুলো পূরণ করবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/04/1533368043540.jpg

হাসিব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা মনে হয় না এখন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে। যেহেতু প্রধনামন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছেন তাই আর আন্দোলন চালানো ঠিক হবে না। আমাদের সবাইকে এখন ক্লাস রুমে ফিরে যাওয়া দরকার এবং অপেক্ষা করতে হবে দাবিগুলো পূরণের জন্য।

নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ বাস পাওয়ার আনন্দের মধ্যে যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ছিল দুই সহপাঠী হারানোর বেদনা। তারা দাবি, মিম ও করিমের এই অকাল মৃত্যুর মতো আর কাউকে যেন রাস্তায় না মরতে হয়।

৫ বাস ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজকে পাঁচটি বাস দেয়াসহ নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে ও দুর্ঘটনারোধে রমিজ উদ্দিন স্কুল সংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণ, দেশের প্রতিটি স্কুল সংলগ্ন রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানো এবং শুধু স্কুলের জন্য প্ল্যাকার্ড সম্বলিত বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দেন।

উল্লেখ্য, রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থীর নিহত হয়। এরপর ঘাতকদের বিচারসহ ৯দফা দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষও সমর্থন দিয়েছে।