ছাত্র আন্দোলনে গতি পাচ্ছে আনিসুল হকের বাস প্রকল্প
ঢাকা: রাজধানীতে স্কুল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের বাস প্রকল্প গতি পেতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের পরামর্শক প্রকৌশলী ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সড়ক দুর্ঘটনায় সহপাঠীর মৃত্যুর বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।
ঢাকায় ছয় কোম্পানির অধীনে বাস পরিচালনা প্রকল্পের পরামর্শক প্রকৌশলী ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ছোটরা আমাদের পথ দেখিয়ে দিল। ছাত্রদের আন্দোলনে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্বপ্নের এ প্রকল্প গতি পেতে যাচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন, সবার সাথে বসে আলোচনা করতে বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল (সোমবার) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছে। এ কৃতিত্ব পুরোটাই ছাত্রদের। কারণ বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে ধরণা দিয়েও আমরা প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে পারিনি। ছাত্ররা এখন আন্দোলন করছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বৈঠকে বসার। এ কারণে কাল দুপুরে সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে।’
ওই বৈঠকের মাধ্যমে প্রকল্পে গতি ফিরবে বলে আশা করছেন ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে ২১টি বৈঠক করে ঢাকায় সাড়ে চার হাজার নতুন বাস নামানো প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদকে ঢাকায় পাঁচ রংয়ের নতুন বাস নামানো প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর প্রকল্পটি অনেকটা থমকে যায়। সম্প্রতি বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনার পর দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হস্তক্ষেপ করলেন।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৩/৪ জন প্রকৌশলীকে নিযে আনিসুল হক প্রথম ছক এঁকেছিলেন। বিদেশ থেকে এরকম কনসালটেন্সি কাজ করে আনলে ৫ কোটি টাকা ফি দিতে হতো। কিন্তু আমরা কোনো টাকা নেইনি। বরং চেয়েছিলাম দেশের প্রধান শহরের যাতায়তের সমস্যার সমাধান হোক। কিন্তু আমরা এতদিন ফাইল নিয়ে কোথাও গেলে তারা আমাদের চিনতেন না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর সচিবালয় থেকেই ডাক পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন রাজধানীতে যেসব বাস চলে তার সবই তুলে নিতে হবে। পরে কোম্পানি গঠন করে বিভিন্ন রুটে বাস নামানো হবে। রাজধানীর মোট ২২টি রুটে ছয় কোম্পানির অধীনে চলবে সাড়ে ৪ হাজার বাস। এসব বাসের ধারণ ক্ষমতাও হবে বিভিন্ন রকম। প্রাথমিকভাবে তিন ধরনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বাস নামানোর পরিকল্পনা করা হয়। যেগুলোর মধ্যে কোনোটি ৫২ সিটের, কোনোটি ৪০-৪২ সিটের এসি গাড়ি এবং আর্টিকুলেটেড বাস। তবে সাড়ে ৪ হাজার বাসের মধ্যে কোনো ডাবল ডেকার রাখা হয়নি। বিভিন্ন কারণে ডাবল ডেকার বাসগুলো ঢাকা শহরের জন্য উপযুক্ত নয়।’
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানীতে ১৯৪টি রুটে প্রায় সাড়ে চার হাজার বাস চলে। এর মধ্যে নিবন্ধিত ২৯ হাজার বাস। যার মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার বাস। রাজধানীতে বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন যাতায়ত করেন এক কোটি যাত্রী।