পরিবহন খাতে নৈরাজ্য বন্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরাও চান ‘পদক্ষেপ’



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবহন সেক্টরে অরাজক পরিস্থিতি বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ চান সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রধানরা। তাদের মতে, পরিবহন খাতে নৈরাজ্য চলছে। ছাত্রদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের আচরণ শোভনীয় নয়।

একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। এজন্য পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারকেই কার্যকর  ভূমিকা নিতে হবে বলে মানেন তারা।

রোববার (০৫ আগস্ট) শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন ঢাকা মহানগরীর সকল কলেজের (সরকারি-বেসরকারি) অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকা। এ সময় বার্তা২৪.কমের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এসব কথা জানান। 

লালমাটিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবহন খাতে নৈরাজ্য চলছে। তারা ধর্মঘট ডেকেছে, তাই বাস চলছে না। শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে আসতে পারছে না। তাদের বিষয়ে সরকারের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে এ পদক্ষেপ জরুরি।

লালমাটিয়া মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব দেন।

সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ কানিজ মাহমুদা বলেন, অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হচ্ছে না। এ ধর্মঘট বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয়া হোক। এছাড়া শ্রমিকরা যাতে ছাত্রদের সাথে দুর্ব্যবহার না করে সে বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। আর পরিবহন শ্রমিকরা যাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতে না জড়ায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত আলম বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফেরাতে শিক্ষার্থীদেরই কাজে লাগাতে হবে। ছাত্রদের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা স্পটগুলো চিহ্নিত করে ছাত্র প্রতিনিধিদের বোঝানো বোঝাতে হবে। এছাড়াও সড়ক পরিবহন, নৌ, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষামন্ত্রী একযাগে মতবিনিময় করতে পারেন। তারা শিক্ষার্থীদের জানাতে পারেন সরকার কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে। ভবিষ্যতে কি কি করা হবে।

উত্তরার ঢাকা বয়েজ কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, রাস্তায় এখন শিক্ষার্থীরা কম। তাদের সঙ্গে দুর্বৃত্ত যোগ দিয়েছে। এসব দুর্বৃত্তদের থামাতে  হবে। আমরা মাঠে থাকতে চাই। আমাদের সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় থাকে তাহলে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাসে ফেরাতে পারব বলে আশা করি।

বাড্ডার মহানগর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ফৈজী আকতার বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা সবাই ক্লাসে আসছে। তবে আমার মনে হয়, স্কুলগুলোর সামনে যদি কিছু পুলিশ মোতায়েন করা যায়, তাহলে দুষ্টু ছেলেদের নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। আর এটা করা গেলে বিশৃঙ্খলা হতো না। আর স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করলে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব। 

কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্যাহ খন্দকার বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।

শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে মতবিনিময় সভায় স্কুল ও কলেজ প্রধানদের পরামর্শ জানতে চাইলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকরা বলেন, সড়ক আন্দোলনে অনেক কথিত শিক্ষার্থী ঢুকে গেছে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র তৈরি করে তারা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তাদের চিহ্নিত করতে হবে।

তারা বলেন, বর্তমানে সেসকল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অনুপস্থিতি থাকবে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে হবে। অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মতবিনিময় করে বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে হবে। পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া চালু করতে হবে। প্রধান সড়কগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পুলিশি নিরাপত্তা বসাতে হবে। অপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারের নিশেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। আর যাতে আন্দোলনের দিকে ধাবিত না হয়, সে জন্য প্রতিদিন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে।

প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আরো বলেন, যারা আন্দোলনের উস্কানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট তুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে হবে।

এ সময় দাবি মানার পরও শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে আন্দোলনে নামলে তার দায়িত্ব শিক্ষা প্রধানদের নিতে হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বোঝাতে হবে। প্রধান শিক্ষক হয়ে যদি শিক্ষার্থীদের বোঝাতেই না পারেন তাহলে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন কেন? শিক্ষাথীদের অবশ্যই শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে।

মতবিনিময় সভাটি দুটি ভাগে সম্পন্ন হয়। প্রথম শিফটে ঢাকা মহানগরীর ২৪২টি সরকারি-বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এবং দ্বিতীয় শিফটে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  ও সহকারি প্রধান শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।

 

   

বোট ক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন বেনজীর আহমেদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারের বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। গত ১৩ জুন ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তিনি এ পদ ছাড়েন।

বোট ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

নাসির বলেন, বোট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকা বেনজীর আহমেদ ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, জরুরি কাজে পরিবারের সঙ্গে তিনি দেশের বাইরে আছেন। যে কারণে তিনি ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।

নাসির জানান, বেনজীর আহমেদের পদত্যাগের পর রুবেল আজীজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ও তার পরিবারের সম্পদ অনুসন্ধান করছিল। তার মধ্যেই গত ৪ মে তিনি সপরিবার দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজীর। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

;

ফেনীতে বজ্রপাতে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে দশ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে রোকসানা আক্তার নামের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও তিনজন। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে চারটি গবাদিপশু। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি এলাকা। নিহত রোকসানা ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের উত্তর মন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

শনিবার (১৫ জুন) জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ের মধ্যে মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে রোকসানা আক্তারের মৃত্যু হয়। একইসময় বজ্রপাতে ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী উত্তর জামমুড়া এলাকায় মা-মেয়েসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- ওই এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামছুন্নাহার (৪২), মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা আক্তার (২১) এবং ভগ্নিপতি মোহাম্মদ মোস্তফা (৫২)।

আহতদের স্বজন মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বজ্রপাতে আহত হয়ে আমার মেয়ে ও স্ত্রী ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত ভগ্নিপতি জামমুড়া গ্রামের বাড়িতে রয়েছে।

এ ছাড়া বজ্রপাত-ঝড়ে ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় চারটি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে দুপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে ফুলগাজীর বাশুড়া গ্রামে একটি গরু, কোরবানির হাটে নেওয়ার পথে ফুলগাজী বাজারে একটি, বজ্রপাতে মুন্সীরহাট ইউনিয়নের নোয়াপুর গ্রামে একটি গরু ও ছাগলনাইয়ায় একটি মহিষ মারা গেছে।

ফুলগাজীর মুন্সিরহাট এলাকার কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য গরুটি লালনপালন করেছিলাম। ফুলগাজী বাজারে বিক্রির জন্য বের হলে পথিমধ্যে বৃষ্টি আসলে রাস্তার পাশে গরুটি রেখে আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় হঠাৎ বাতাসে গাছ ভেঙে গরুর উপর পড়ে।

এদিকে ঝড়ো হাওয়ায় গাছপালা উপড়ে পড়ে জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া সড়কে যানচলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় ফুলগাজী মহিলা কলেজ সংলগ্ন সড়কে গাছ উপড়ে পড়ে ৫-৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুৎ লাইন ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ছাগলনাইয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ছাগলনাইয়ার কালাপুল থেকে রেজুমিয়া পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়ে। এতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে যানচলাচল স্বাভাবিক করে।

ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, দুপুরে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও ঝড়ে বাতাসের বেগ বেশি ছিল। কোথাও কোথাও ভারি বজ্রপাতও হয়েছে।

সায়েম চৌধুরী নামে একজন বলেন, বৃষ্টি হচ্ছিল সাথে বজ্রপাত হয়েছে। ঝড়ো বাতাস ছিলনা। হঠাৎ করে ঝড়ো বাতাস শুরু হয় যা সর্বোচ্চ ১০ মিনিট স্থায়ী ছিল। এরমধ্যে এলাকার বেশ কয়েকটি স্থানে গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি।

ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে বসন্তপুর, বাশুড়া এলাকায় ১৫টির মতো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া লাইনে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের লোকজন কাজ করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, ঝড়ে ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বিদ্যুৎ লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংযোগ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।

;

প্রস্তুত সাভারের চামড়া শিল্প নগরী, লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ১০ লাখ পিস



মো. কামরুজ্জামান স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে ঢাকার সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কারখানাগুলোতে চলছে ধোয়া মুছার কাজ। প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিসিক ও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এ বছর ১ কোটি ১০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হরিণধরা এলাকায় বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে ঘুরে দেখা যায়, কারখানাগুলোতে জোর প্রস্তুতি চলছে। কোনো কারখানায় আনা হচ্ছে লবণ। কোথাও আনা হচ্ছে কেমিক্যাল। আবার কোথাও মেশিনারিজগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। কারখানা ও সড়কের পাশে বর্জ্য যেমন সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তেমনই পানি নিষ্কাশনের নালাও পরিষ্কার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ সিইটিপির মেশিনারিজ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেছে বলে জানায়। বিসিক কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে চামড়া সংগ্রহের জন্য ৫০ জনের স্বেচ্ছাসেবক দল ঠিক করেছে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্ল্যাহ বলেন, গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া মিলিয়ে আমরা এ বছর ১ কোটি থেকে ১ কোটি ১০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েছি। এ বছর লবণের দামও অনেকটা আয়ত্ত্বে রয়েছে। এ বছর আশংকার বিষয় হচ্ছে, গরম। যেহেতু কোরবানির মৌসুম গরমে পড়েছে আর এবছর গরমও বেশি তাই যারা সারাদেশে চামড়া সংগ্রহ করবেন তারা যথাযথ নিয়ম মেনে চামড়া সংরক্ষণ করবেন, তাহলে চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাবেন। এছাড়া সিইটিপির অবস্থা পূর্বের যেকোন সময়ের চাইতে ভালো।

চামড়া শিল্পনগরীর প্রস্তুতির বিষয়ে সাভারের বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান রিজোয়ান বলেন, এবারের কোরবানির ঈদে আমরা শিল্প নগরীতে মোট ৬ লাখ চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের চামড়া শিল্পনগরের পার্শ্ববর্তী যে আড়ৎ রয়েছে, সেখানেও ৬ লাখ পিস সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। চামড়া শিল্প নগরীতে চামড়া প্রবেশ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সেজন্য আমরা ৫০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল গঠন করেছি। ঈদের দিন বিকাল তিনটা থেকে কাজ করা শুরু করবে। আশা করছি এ সময় আমাদের চামড়া সংগ্রহ করা আমাদের চামড়া সংগ্রহ করা ও চামড়া প্রসেস করা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েটেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা কোরবানির জন্য ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি বছরই আমাদের প্রস্তুতি থাকে। আমাদের কমন ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিসিআরইউ) গত এক বছর বন্ধ ছিল। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে এটির ক্রোম সেপারেশন সেকশনের ৫০% আমরা চালু করেছি। আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি ৫০% চালু হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর আমাদের যে ওভারহোলিং করা হয়, কোরবানির সময় এটি এ বছর আরও ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে। আমাদের ইপিএস ১, ২ ও ৩ থেকে শুরু করে ইকুলেশন, ইফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশন, থিকিনিং ট্যাংক সবই আমরা প্রস্তুত রেখেছি যাতে আমাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, এ বছর চামড়া সংরক্ষণে ঢাকা জেলা প্রশাসন ব্যতিক্রম উদ্দ্যোগ নিয়েছে। এটির মূল কার্যক্রম মানুষকে সচেতন করা। ঢাকার দুই সিটির ২০ গরুর হাঁটে বিসিকের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা প্রশাসন স্টল দিয়ে জেলা প্রশাসন লিফলেট বিতরণ করছে। রোভার স্কাউট, আমাদের কর্মচারীসহ সবাই চামড়া কিভাবে ছাড়াতে হবে, কিভাবে লবন দিতে হবে সে বিষয়ে প্রচার করছেন।

তিনি বলেন, চামড়া পরিবহনের জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় চামড়ায় মান কমতে থাকে। ফলে চামড়া পরিবহনকারী যানগুলোকে সড়কে যাতে যানজটের কবলে না পড়তে না হয়, ও চামড়া যাতে দ্রুত সংরক্ষণাগারে পৌঁছানো যায়, সেজন্য পোস্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর সাভার চামড়া শিল্পনগরীতেও ওসি ও ইউএনওর সমন্বয়ে সেখানে যাতে কোনো যানজট না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

;

চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল আজহা পালিত হবে রোববার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের প্রায় ৬০ গ্রামে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোববার (১৬ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা এ ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন। ইতোমধ্যে ঈদের জামাত আদায়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সুফি সাধক মাওলানা মোখলেসুর রহমান (র.) ২০০ বছর আগে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার নামাজ পালন করার নিয়ম প্রবর্তন করেন। তার সেই দেখানো পথে এখন পর্যন্ত এ নিয়ম মেনে আসছেন তার ভক্ত- অনুসারীরা।

দরবারের সূত্র জানায়, মির্জাখীল দরবার শরীফের খানকাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদুল আযহার প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। হজরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (কঃ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হজরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (কঃ) এর তত্ত্বাবধানে উনারই জানশীন হজরত ইমামুল আরেফীন ড. মৌলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান নামাজে ইমামতি করবেন।

মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্রমতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডাঙ্গা, আলীনগর, মাদার্শা, খাগরিয়া, মৈশামুড়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, চরতি, সুঁইপুরা, হালুয়াঘোনা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, চরবরমা, কেশুয়া, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, ডোংরা, শেখেরখীল, ছনুয়া, পুইছড়ি, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, খাসখামা, কাঠাখালী, রায়পুর, গুজরা, লোহাগাড়ার পুঁটিবিলা, কলাউজান, চুনতী এবং সীতাকুন্ডের মাহমুদাবাদ, বারিয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মুহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আব্দুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, মিরশরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রামসহ চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী জেলাসমুহের শতাধিক গ্রামের বহুসংখ্যক অনুসারী আজ ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুর রহমান শাহ জাঁহাগিরী ও চন্দনাইশ কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের জাঁহাগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মতি মিয়া মনসুর বলেন, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে বিগত দ্বিশতাধিক বছর ধরে ইয়াউমুল আরাফাহ বা পবিত্র হজ্জ্ব দিবসের পরের দিনই পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করে আসছি। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ হতে চাঁদের অবস্থান এবং আজ হজ্জ্ব পালনের খবর সচিত্র অবগত হয়ে তথা এই বছর শায়খ মাহের আল মুয়াক্কিল কতৃর্ক প্রদত্ত হজ্জের খুতবা সরাসরি পবিত্র আরাফাতের মসজিদে নামিরা হতে দেখে-শুনেই দেশ-বিদেশে সিলসিলায়ে আলীয়া জাঁহাগীরিয়া, মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীগণ আগামীকাল রবিবার ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।

;