‘নতুন সড়ক আইনে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা যথেষ্ট বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, যেই আপরাধকে আমরা পাঁচ বছরের সাজার আওতায় এনেছি তার জন্য এটি যথেষ্ট। এ আইনে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে। কারণ ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মৃত্যু হলে এবং তা যদি প্রমাণ হয় ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। 

সোমবার (০৬ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে নিজ দফতরে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বিষয়ে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

সংসদে পাস হওয়ার আগে এই আইন কার্যকরের সম্ভবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোন পরিকল্পনা নেই। এটি সংসদেই পাশ হবে। মন্ত্রীসভায় আজকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাো হয়েছে, কিন্তু এটা অর্ডিনেন্স করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংসদে পাশ হলে আরো আলাপ আলোচনার সুযোগ থাকবে।

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর খসড়ার অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি, ইচ্ছেকৃত দুর্ঘটনায় চালক বা সংশ্লিষ্টদের যে শাস্তির দাবি শিক্ষার্থীরা করে আসছে তার সবটাই এ আইনে রয়েছে। সুতরাং এই আইনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে।

তিনি বলেন, একটা অপরাধে এক পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এভাবে ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে তাকে আর ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আগে আমাদের দেশে ছিল না। এটা এবার এ আইনে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়ে এবং মটরযানের রেজিষ্ট্রেশনসহ যানবাহন নিয়নন্ত্রণের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মটরযান নির্মাণ, যন্ত্রপাতি বিন্যাস, ওজনসীমা নির্ধারণ এবং পরিবেশ দুষণসহ বেশকিছু ইস্যুতে এখানে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও বীমা ব্যবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রাখা হয়েছে এ আইনে।

তিনি আরো বলেন, চালক সমিতি, মালিক ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে এ আইনে। এ ট্রাস্টি বোর্ডের কাজ হবে তহবিল তৈরি করা। দুর্ঘটনা ঘটলে ইন্সুরেন্সের সমস্যা সমাধানে যে সময় লাগে সেই সময়ে  উক্ত তহবিল থেকে দ্রুত সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারে।

আনিসুল হক বলেন, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সড়ক ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত সবগুলো বিষয়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে যা যা প্রয়োজন তা এ আইনে যুক্ত আছে। রাজধানীতে সম্প্রতি বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যের ঘটনায় হওয়া মামলার পুলিশের তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যূনালে স্থানান্তরের দায়িত্ব আমাদের।

   

‘স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনায় অসৎ উপায়ে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টা প্রতিহত করবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, আমরা পদ্ধতিগত (সিস্টেম) পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। এই উদ্যোগ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

শনিবার (২২ জুন) বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জনবান্ধব ডিজিটাল জরিপ বিষয়ক কর্মশালা ও অংশীজনের সাথে এক মতবিনিময় সভায় ভূমিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনার স্মার্ট ডিজিটালাইজেশন বৈধ মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। এটি অবৈধ দখল রোধ করার পাশাপাশি অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টাও প্রতিহত করবে।

প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতির প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাকে ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনার সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছি। এই উদ্যোগ সফল হলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সচেতন নাগরিকই স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিকরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকেন। নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে দুর্নীতি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আহসান হাবীব, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের পরিচালক মো. মোমিনুর রশীদ, বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামসহ, বরিশালের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, চার্জ অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ভূমি প্রশাসনের অন্যান্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

রাসেলস ভাইপার চেনার উপায় ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাসেলস ভাইপার

রাসেলস ভাইপার

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাপের একটি প্রজাতি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। বলা চলে দেশে এখন আতঙ্কের নাম এই প্রজাতির সাপ। সাপটির নাম রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। যাকে বাংলাদেশ থেকে অনেক বছর আগেই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে সম্প্রতি এই সরিসৃপের বরেন্দ্র অঞ্চলে আনাগোণা থাকলেও বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এর উৎপাত। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার উপকণ্ঠের গ্রামগুলোতেও দেখা মিলছে বিষধর এই সাপের।

এমন পরিস্থিতিকে গবেষকরা বলছেন, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে স্বভাব পরিবর্তন করছে রাসেলস ভাইপার।

এদিকে ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যে এই সাপের কামড়ে শেষ পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু। তবে এ প্রজাতির সাপ কামড়ালে তারও চিকিৎসা আছে এবং সময়মত চিকিৎসা নিতে পারলে মৃত্যু ঝুঁকিও কমে আসে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি জেলায় রাসেল’স ভাইপারের কামড়ে কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

এই প্রজাতির সাপ নিয়ে বেশি আতঙ্কের কারণ হচ্ছে খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে। যার ফলে খুব সহজেই বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই সাপের আধিক্য মানুষের জন্য হুমকি তৈরি মতো সম্ভাবনার দেখা দিয়েছে।

কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে রাসেল’স ভাইপার নিয়ে যে মাত্রায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তা আসলে কতটা যৌক্তিক? যদি তাই হয় তাহলে এর থেকে নিরাপদে থাকারই বা উপায় কী?

চলুন, রাসেলস ভাইপার থেকে নিরাপদে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

রাসেলস ভাইপার কতটা ভয়ঙ্কর

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সাপগুলোর মধ্যে অন্যতম এই রাসেলস ভাইপার। একটি পূর্ণাঙ্গ রাসেলস ভাইপারের কামড়ে প্রায় ১৩০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম বিষ থাকে। ছোট সাপগুলোর মধ্যে থাকে প্রায় ৮ থেকে ৭৯ মিলিগ্রাম। এছাড়া অন্যান্য যে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর তুলনায় এগুলো অনেক বেশি পরিমাণে বিষ নিঃসরণ করতে সক্ষম।

বিভিন্ন প্রজাতিতে এই বিষ মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে; নিউরোটক্সিন ও হেমোটক্সিন।

১। নিউরোটক্সিন: এই বিষ স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং এর মাধ্যমে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোকে পর্যায়ক্রমে নিষ্ক্রিয় করে দিতে থাকে। একসঙ্গে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের এই অবনতি বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দ্রুত ঘটে।

কামড়ের জায়গায় ব্যথার সঙ্গে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর আক্রান্ত স্থান থেকে ধীরে ধীরে তা ছড়াতে থাকে সারা দেহে। কামড়ের ২০ মিনিটের মধ্যে মুখ থেকে থুথুর সঙ্গে রক্ত বের হওয়া শুরু করে। রক্তচাপের পাশাপাশি হৃদস্পন্দন কমে যেতে থাকে। চূড়ান্ত অবস্থায় বমি হতে পারে এবং মুখ ফুলে যেতে পারে। কামড়ের ক্ষত চিহ্নের চারপাশের জায়গা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ফুলে ওঠে। ১ থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া যুক্ত হয়ে সারা শরীর নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। সর্বপরি, অবিলম্বে চিকিৎসা না করা হলে এই দংশন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে।

২। হেমোটক্সিক: এই বিষ প্রকৃতির হলে রক্ত জমাট বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। এতে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোতে রক্তের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ফলে অঙ্গগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে। 

এই সরিসৃপটির সবচেয়ে ভয়ানক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর গায়ের রঙ ও রেখা, যেগুলো যে কোনো পরিবেশের সঙ্গে একদম মিশে যায়। এতে করে কাছাকাছি কোনো শিকার এর অবস্থান টেরই পায় না। এছাড়াও শিকারকে পরিপূর্ণভাবে ধরাশায়ী করার জন্য এটি দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ঘাপটি মেরে পড়ে থাকতে পারে। অতঃপর ইঞ্চি ইঞ্চি করে এগিয়ে সুযোগ বুঝে ক্ষীপ্র গতিতে ঝাপিয়ে পড়ে শিকারের উপর।

শিকার ধরার জন্য এদের সেরা সময় হচ্ছে রাতের বেলা। কিন্তু শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে দিনের আলোতেও এদেরকে শনাক্ত করা মুশকিল।

রাসেলস ভাইপার সাপ চেনার উপায়

ভারতীয় উপমহাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোরা নামে পরিচিত এই সাপ ৫ দশমিক ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ত্রিভুজাকার আকৃতির চ্যাপ্টা মাথা ঘাড় থেকে বেশ আলাদা। মুখের সামনের অংশটি গোলাকার, ভোঁতা ও উপরের দিকে বাকানো।

নাকের ছিদ্র বড় এবং মাথার শীর্ষবিন্দু স্বতন্ত্রভাবে খণ্ডিত আবরণে আচ্ছাদিত। মাথা আকারে বেশ বড় এবং রঙ হলুদ বা সোনালি হলুদ। আর এর চারপাশে থাকে ১০ থেকে ১৫টি বৃত্তাকার আঁশের বেষ্টনী। দুই জোড়া চোয়ালের ঢালের মধ্যে সামনের জোড়াটি একটু বেশি প্রসারিত। মুখের ভেতর দুটি ম্যাক্সিলারি হাড়ের সঙ্গে এক জোড়া করে মোট ৬টি বিষদাঁত। তবে একদম সামনের জোড়া দাঁতগুলো বেশ প্রকাণ্ড এবং সক্রিয় থাকে। দেহের পেছনে ছোট লেজের দৈর্ঘ্য গোটা দেহের মাত্র ১৪ শতাংশ।

এদের শরীরের রঙের প্যাটার্নে রয়েছে গভীর হলুদ এবং বাদামী মাটির রঙ। শরীরের দৈর্ঘ্য বরাবর ৩ সারি গাঢ় বাদামী দাগ। এই দাগগুলোর প্রত্যেকটির চারপাশে রয়েছে একটি করে কালো বলয়। এর বাইরের সীমানা সাদা বা হলুদ হয়ে প্রান্তের দিকে গাঢ় হয়ে গেছে। মাথায় রয়েছে এক জোড়া গাঢ় ছোপ, যার প্রত্যেকটি একটি করে গোলাপী বা বাদামী রঙের ‘ভি’ বা ‘এক্স’ আকৃতি হয়ে মাথার শীর্ষবিন্দুতে যেয়ে মিলেছে। চোখের পিছনে অন্ধকার স্তরটি সাদা বা গোলাপী প্রান্তরেখায় পরিবেষ্টিত। শরীরের সামনে ও পিছনে সর্বাঙ্গ জুড়ে সাদা, হলুদ বা গোলাপী রঙের সঙ্গে কালো দাগের অনিয়মিত ও বিক্ষিপ্ত নকশা।

রাসেলস ভাইপারের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এরা যে কোনো স্থানের সঙ্গে অবিকল ভাবে মিশে যেতে পারে। কোনো শত্রুর কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এরা একটি ‘এস’ আকৃতি গঠন করে। অতঃপর শরীরের উপরের এক-তৃতীয়াংশকে উত্থাপন করে উচ্চ শব্দে আক্রমণের ঘোষণা দিতে থাকে। এইভাবে শরীরের নির্দিষ্ট অংশকে উপরে তুলে ধরাটা প্রতিটি সাপেরই আক্রমণের একটি সাধারণ ভঙ্গিমা। তবে অন্যান্য সাপের তুলনায় রাসেলস ভাইপার তার শরীরের বেশির ভাগ অংশ মাটি থেকে তুলতে পারে।

রাসেলস ভাইপার থেকে বাঁচার উপায়: প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

প্রতিরক্ষামূলক পরিধেয়

সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের লম্বা ও মোটা চামড়ার বা রাবারের বুট পরিধান করা উচিৎ। এছাড়া মোটা গ্লাভ্সও অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারে। রাসেলস ভাইপারের বিষদাঁত যে কোনো সাপের থেকে বেশ লম্বা, কিন্তু সেগুলো গামবুট ভেদ করতে পারে না।

অন্ধকার এলাকা এড়িয়ে চলা

এই সাপগুলো শিকার ধরার জন্য রাতের বেলা এবং অন্যান্য সময় অপেক্ষাকৃত অন্ধকার জায়গা বেঁছে নেয়। তাই রাতসহ দিনের অন্যান্য সময়ে পথ চলার সময় সঙ্গে একটি টর্চলাইট রাখা ভালো।

শিশু-কিশোরদের সাবধান করা

এসব বিষাক্ত প্রাণীদের এড়িয়ে গেলে সাধারণত এরা বিপদের কারণ হয় না। কিন্তু দুর্ঘটনা সহ মানুষের কোনো আচরণকে হুমকি ভেবে এরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। গ্রামে-গঞ্জে অনেক ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের এরকম বিভিন্ন প্রাণী নিয়ে খেলতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো বিপজ্জনক পরিস্থিতির উপক্রম হওয়ার আগেই তাদেরকে সাবধান করা দরকার। এমনকি সাপ মরে পড়ে আছে ভেবে সেটা সরানোর সময়ও সাবধান থাকা উচিৎ।

রাসেলস ভাইপার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি

দেশের যে এলাকাগুলোতে এই সাপের উপদ্রব বেশি, সেখানে অবিলম্বে যথাযথ সাবধানতা জোরদার করা উচিৎ। এর জন্য কৃষক, জেলেসহ প্রতিটি মানুষকে এই সরিসৃপের প্রজাতি ও তাদের আবাসস্থল সম্বন্ধে সহজ ভাষায় জানাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিরাপত্তামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। সেই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়সহ দেশের অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-ভেনম বিতরণ করা উচিৎ।

রাসেলস ভাইপার কামড়ালে করণীয়

এই সাপের দংশনের শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য অ্যান্টি-ভেনমের কোনো বিকল্প নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দক্ষ সেবা পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাৎক্ষণিক ভাবে প্রাথমিক যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া যেতে পারে তা হলো:

  • আক্রান্ত ব্যক্তির পরিহিত যে কোনো আঁটসাঁট অলঙ্কার বা পোশাক খুলে আরামদায়ক অবস্থানে তাকে বসিয়ে বা শুইয়ে রাখা
  • সাবান এবং পানি দিয়ে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে দেওয়া
  • কামড়ের স্থান এবং তার চারপাশের জায়গায় ব্যান্ডেজ লাগানো। তবে ব্যান্ডেজ যেন খুব বেশি শক্ত না হয়। নড়াচড়া এড়াতে ব্যান্ডেজের সঙ্গে একটি ছোট লম্বা বাঁশজুড়ে দিতে হবে। হাতে কামড়ের ক্ষেত্রে হাত ব্যান্ডেজ করে তা কাঁধের সঙ্গে গুলতির মতো করে ঝুলিয়ে যুক্ত করে দেওয়া যায়।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির এ অবস্থায় কোনোভাবেই দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানো ঠিক নয়
  • ক্ষতস্থানসহ দেহের অন্যত্রে কোনো রকম কাটাছেঁড়া বা আঁচড় দেওয়া যাবে না
  • ক্ষত স্থানে মুখ দিয়ে রক্ত টানার চেষ্টা করা একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা। এটি কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়।
  • কামড়ানো জায়গায় বরফ লাগানো যাবে না
  • আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথা উপশমের জন্য অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন বা নেপ্রোক্সেন সোডিয়ামের মতো কোনো ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া যাবে না। এতে ব্যক্তির রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

সর্বোপরি বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার থেকে নিরাপদে থাকার সর্বোত্তম উপায় অগ্রীম সতর্কতা অবলম্বন করা। বিপজ্জনক অঞ্চলগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বুট এবং রাতের বেলা টর্চ লাইট ব্যবহার করা উচিৎ। সাপ শনাক্তকরণের ব্যাপারে এগুলোর দৈহিক বৈশিষ্ট্য যতটা সম্ভব সুক্ষ্ম ভাবে জেনে রাখা ভালো।

আর সাপের কামড়ের পর অ্যান্টি-ভেনম দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। উপরন্তু, তাৎক্ষণিক চিকিৎসার সময় প্রচলিত কুসংস্কার এড়াতে আগে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান থাকা অতীব জরুরি।

সূত্র: ইউএনবি

;

ডিএমপির নতুন এসি মিডিয়া জাহাঙ্গীর কবির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ডিএমপির নতুন এসি মিডিয়া জাহাঙ্গীর কবির

ডিএমপির নতুন এসি মিডিয়া জাহাঙ্গীর কবির

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি মিডিয়া) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির।

বর্তমানে তিনি ডিএমপি সদর দপ্তরে আছেন। ১৩ জুন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের এক অফিস আদেশে এ দায়িত্ব পান জাহাঙ্গীর কবির।

একই আদেশে ডিএমপির তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. এনামুল হক মিঠুকে ওয়ারী গোয়েন্দা বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে।

;

রায়ের বাজারে দুর্ধর্ষ চুরি, থানায় মামলা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার এলাকার একটি বাসায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী রাজু আহমেদ। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, প্রায় ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) রাতে রহিম বেপারীর ঘাটে একটি ভবনের তিন তলায় এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২২ জুন) বিকেলে রায়ের বাজারের কাটাসুর রোডের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তিনতলার দরজার লক ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে চোর। এরপর বাসার দুই রুমের দুইটি ওয়ারড্রব ও একটি স্টিলের আলমারি ভেঙে ৫ ভরি স্বর্ণ, আলমারিতে থাকা একটি মাটির ব্যাংকে থাকা ৭০ হাজার টাকা ও ওয়ারড্রবে থাকা এক লাখ ৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সবমিলিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার, নগদ দুই লাখ টাকা নিয়ে গেছে চোর।

ভুক্তভোগী পাপিয়া আক্তার বলেন, আমি বাসায় খাবার রান্না করে বিক্রি করি। আমার স্বামী ইলেকট্রনিকস পণ্যের ব্যবসা করে। এভাবে একটু একটু করে স্বর্ণালংকার কিনেছিলাম। বাবার বাসায় বিকেলের চা খেতে গিয়েই সব হারালাম।

পাপিয়া আরও বলেন, স্টিলের আলমারির ভেতরে মাটির ব্যাংকে প্রায় ৭০ হাজার ও ওয়ারড্রবে এক লাখ ৬ হাজার টাকা ছিলো। সবই নিয়ে গেছে।

পাপিয়ার স্বামী রাজু বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৮ টার মধ্যে এই চুরি হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক তরুণ খালি হাতে বাসায় প্রবেশ করে। এর পাঁচ মিনিট পর বাসা থেকে নেমে যায়। রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর কল করে পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে দেখে গেছে। 

চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে শনিবার বিকেলে কথা হয় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহ্ফুজ হকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, রায়ের বাজারের কাটাসুরে চুরির ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করছি। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

;