বেপরোয়া গতি ও মনোভাবে অনিরাপদ হয়ে উঠছে গণপরিবহন

  • শাহরিয়ার হাসান ও মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার সড়ক ব্যবস্থা মূলত গণপরিবহন নির্ভর। কিন্তু এই গণপরিবহনই ঢাকার রাস্তায় একটি আতঙ্কের নাম। দিনে দিনে বাড়ছে সড়কে দুর্ঘটনা আর অকালে ঝরে যাচ্ছে প্রাণ। তথ্যানুযায়ী, হতাহতদের বেশির ভাগই শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, তরুণ বা কর্মক্ষম মানুষ। যারা দেশ বা আগামীর অর্থনীতির চালিকাশক্তি হতে পারতেন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) হিসাব অনুযায়ী, গত তিন বছরে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ৫৩৩ জন। যা প্রতি বছরে গড়ে ২ হাজার ৮৪৫জন।

বিজ্ঞাপন

এআরআই’র তথ্যানুযায়ী, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং এ দুর্ঘটনার প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এসব দুর্ঘটনার কারণে বছরে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৩ শতাংশ হারাচ্ছে বাংলাদেশ।

অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ও বুয়েটের সহকারি অধ্যাপক সাইফুননেওয়াজ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘এসব দুর্ঘটনার ৯০ শতাংশ ঘটছে চালকদের বেপরোয়া মনোভাব ও অতিরিক্ত গতির কারণে, ৪৭ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় পথচারীদের ভুলে। যেগুলোর মধ্যে ২০-৩০ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় পথচারীদের অসচেতনার কারণে।’

সম্প্রতি বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবি জোরদার হতে থাকে, নড়েচড়ে বসেন সবাই। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। গত ২৯ জুলাইয়ের পর সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীতে দুইজন ও গাজীপুরে ছয় জনসহ মোট ৮ জন নিহতহয়েছেন।

তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে (জানুয়ারি থেকে জুলাই) রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭৪টি। এতে নিহত হয়েছে ১৬৭ জন ও আহত হয়েছে ৩৭৩ জন। গড়ে প্রতিমাসে নিহত সংখ্যা ২৪ জন। আলোচিত এই সেক্টর নিয়ে অনেক কথাবার্তা হলেও শেষ পর্যন্ত সমাধানের মুখ দেখেনি কখনো। ফলে যত দিন যাচ্ছে অনিরাপদ হয়ে উঠছে ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা।

বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থা নিরাপদ করে তুলতে কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ধীর গতির গাড়ির জন্য আলাদা লেন তৈরি করা, সাইন স্থাপন করা, দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা, যত্রতত্র ইন্টারসেকশন না দেওয়া ইত্যাদি।

তবে চালকদের বেপরোয়া আচরণ কমাতে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া ভালোভাবে মনিটরিং করতে পারলেও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই অধ্যাপক।