কাজ থাকলে দেখতি বাহাদুরের বাহাদুরি!



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্টে,গৌরীপুর, বার্তা২৪.কম
হাতে কলমের চিত্রশিল্পী বাহাদুর, ছবি: বার্তা২৪

হাতে কলমের চিত্রশিল্পী বাহাদুর, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

'প্রায় ৫০ বছর আগের কথা। তখন আমি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাক্ষণ খাতা-কলম নিয়ে এটা-সেটার ছবি আঁকতাম। একদিন বার্ষিক পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর না লিখে নানা রকম ছবি আঁকা শুরু করি। বিষয়টি এক স্যার দেখে ফেলে ধমক দিয়ে খাতা টেনে নিলেন। রাগান্বিত কণ্ঠে স্যার বললেন, সবাই খাতায় উত্তর লিখছে, আর তুই খাতায় ছবি আঁকিস?। পরে শাস্তি স্বরূপ স্যার আমাকে কান ধরিয়ে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখলেন। পরীক্ষা শেষে ঘণ্টা বাজলে স্যার আমাকে বললেন- তোর শাস্তি শেষ, এখন বাড়ি যা, মন দিয়ে পড়াশোনা করবি, আঁকা-আঁকি করতে যেনো না দেখি। কিন্তু স্যারের শাসনেও অভ্যাসটা ছাড়তে পারিনি। উল্টো খাতা-কলমের সাথে সাথে রঙ-তুলির কৌশলটা আয়ত্ত করে ফেলি।'

নিজের আঁকা-আঁকির শুরুর দিকের গল্পটা বার্তা২৪.কমের সাথে বলছিলেন গৌরীপুর পৌর শহরের প্রবীণ চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেন বাহাদুর (৬৬)। রঙ-তুলি ও হস্তশিল্পে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও নিজের চেষ্টায় তিনি হয়ে উঠেছেন একজন গুণী শিল্পী। গত চার দশকে বাহাদুরের দেখাদেখি অনেকেই এই পেশায় এসেছেন। তবে ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ের দাপটে তারা একসময় ছিটকে পড়েছেন। তবে বাহাদুর টিকে রয়েছেন সগৌরবে।

শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাহাদুরের সাথে কথা হয় পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায় তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে। তিনি বলেন, 'অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু আঁকা-আঁকির প্রতি আমার যে নেশা ছিল। পরবর্তীতে সেটাই আমার পেশা হয়ে যায়। ১৯৭৭ সালে গৌরীপুরে রঙ-তুলির পেশাদার হস্ত শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপর কেটে গেছে ৪২ বছর।'

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/03/1549161165402.jpg

আলপনা, কুঞ্জ, সাইনবোর্ড, দেয়াল লিখন ও সুন্দর হাতের লেখার পাশাপাশি বাহাদুর রঙ-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলতে পারেন অসাধারণ সব চিত্রকর্ম। আঁকতে পারেন মানুষের অবিকল ছবিও। রঙের মিশেলে তৈরি করতে পারেন ক্যানভাস, বিখ্যাত ব্যক্তিদের ছবি, প্রাকৃতিক দৃশ্য অন্যান্য চিত্রকর্ম ও অসাধারণ সব চিত্রকর্ম। তবে এসব কাজের জন্য অতিরিক্ত পারিশ্রমিক নেন তিনি।

বাহাদুর জানান, নব্বই দশকে তার কাজের চাহিদা ব্যাপক ছিল। তখন প্রতিদিন দেয়াল লিখন, সাইনবোর্ড ও অন্যান্য হাতের কাজ তার আয় হতো ২ হাজার টাকার মতো। তবে ২০০৭ সালের দিকে ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসের আগমন ঘটায় তাদের কাজে ভাটা পড়ে। এখন প্রতিদিন ছোট-খাটো কাজ করে ৫ থেকে ৬শ টাকা আয় হয়। তাই রোজগার বাড়াতে তিনি ডিশ ব্যবসায় সংযুক্ত হয়েছেন।

দাম্পত্য জীবনে বাহাদুরের স্ত্রী ও দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পরিবার নিয়ে তিনি পৌর শহরের কলাবাগান এলাকায় বসবাস করেন। তবে সন্তানরা কেউ বাবার প্রতিভার ছিটেফোঁটাও পায়নি।

তবে নিজের প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে বাহাদুর পৌর শহরে একটি আর্টস্কুল খুলেছেন। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের ছবি আঁকা সম্পর্কে হাতে-কলমে শিক্ষা দেন। হস্তশিল্পীর পাশাপাশি একজন খ্যাতিমান ফুটবলার ও হাডুডু ক্রীড়াবিদ হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন বাহাদুর।

খেলাধুলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'একবার গৌরীপুর বাইরের গ্রামে কাজে যাই। ওই গ্রামে সেদিন হাডুডু টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার প্রস্তুতি চলছিল। লোকজন খোঁজ পায় আমি এখানে এসেছি। পরে তারা কাজ বন্ধ করে আমাকে মাঠে নামিয়ে দেয়। ওই খেলায় একক নৈপুণ্যে ফাইনাল ট্রফি জিতে আনি।'

এরই মাঝে বিকেলে গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। শহরের সড়কে জ্বলে উঠেছে নগরবাতি। এমন সময় আগমন ঘটে বাহাদুরের শিষ্য ফারুক আহামেদের।

তিনি বলেন, 'ওস্তাদের নাম যেমন বাহাদুর, তিনি কামেও বাহাদুর। কাম দেখলে চাইয়্যা থাকবার মন চায়। অহন যে প্রাইমারি ইশকুলগুলা লাল-সবুজ রঙে সাইজ্যা উঠছে। ওইটা আমগোর ওস্তাদের হাতের জাদুতেই। কাম দেখলেই বুঝবেন ওস্তাদের হাতে কত বাহাদুরি?।'

শিষ্যের কথার রেশ টেনে বাহাদুর বলেন, 'এখন তো আগের মতো কাজ নাই রে ফারুক। কাজ থাকলে দেখতি বাহাদুরের বাহাদুরি কত?'

 

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;