‘চেহারা দেখলেই কইতারি, কে চোর আর কে ভদ্রলোক’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
গৌরীপুর পৌর শহরের রাতের পাহারাদার জহুর আলী, ছবি: বার্তা২৪.কম

গৌরীপুর পৌর শহরের রাতের পাহারাদার জহুর আলী, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘ছোটবেলায় বাপ-মা মইর্যা গেছে। লেহাপড়া কিচ্ছু করি নাইক্যা। মাইনষের বাড়িত কাইজ-কাম কইর্যা বড় অইছি। অহন বয়স অইছে। গায়ে-গতরে আগের মতো খাঁটতাম পারি না। কিন্তু ঘরে বইয়্যা থাকলে খাওয়াইবো কেডা? হেরলেইগ্যা ৭ বৎস্যর আগে নাইটগার্ডের (নৈশ প্রহরী) চাকরি লইছি। তহন থেইক্যা আমার রাইতের ঘুম হারাম। একলা একলা হজাগ (সজাগ) থাইক্যা শহর পাহারা দেই। তয় আল্লার রহমতে এই ৭ বৎসরে আমারে কিনু বালা-মুছিবতে পায় নাই।’

বার্তা২৪.কম-এর সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন গৌরীপুর পৌর শহরের ‘নৈশ প্রহরী’ জহুর আলী (৬৬)। তার বাড়ি পৌর শহরের গাওগৌরীপুর মহল্লায়। বাবার নাম মৃত বাবর আলী।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে জহুর আলীর দেখা মেলে পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায়। তার পরনে খাকি প্যান্ট-শার্ট। গায়ে জড়ানো ময়লা ওয়েস্ট কোর্ট। মুখ মাফলারে বাধা। এক হাতে বর্শা ও আরেক হাতে টর্চ লাইট। সড়কের একমাথা থেকে আরেক মাথায় আসা-যাওয়া করছেন। অপরিচিত কাউকে দেখলেই টর্চেল আলো ফেলে গতিরোধ করে নাম-পরিচয় জানতে চাইছেন তিনি।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জহুর আলীর সঙ্গে হয়। তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘নাইটগার্ডের চাকরি অত সহজ না। মেলা মাইনষের জান-মাল দেইখ্যা-হুইন্যা রাখতে হয়। লোকজন আমার ওপরে বিশ্বাস কইরা দোহান-ঘরে মালামাল রাইখ্যা ঘুমাইতে যায়। আমি জানবাজি রাইখ্যা পাহারা দেই। রাইতের বেলায় কত কিছিমের মানুষ রাস্তা-দিয়া আনাগোনা করে। তয় আমরা চেহারা দেখলেই কইতারি কে চোর আর কে ভদ্রলোক।’

দাম্পত্য জীবনে জহুরের স্ত্রী ও তিন ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে বড় দুই ছেলে ইজিবাইক চালায়। ছোট ছেলে মাদরাসায় পড়ে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/06/1549423409575.jpg

রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পৌর শহরের মধ্যবাজার, সিনেমা হল রোড, গোবিন্দবাড়ি সড়ক ও হারুন পার্ক এলাকায় নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন জহুর। অন্ধকার রাতে তিনি একা একা সড়কের অলি-গলি দিয়ে ঘুরলেও ভয়-ডর তাকে স্পর্শ করে না। তবে মাস শেষে বেতন তিনি যে ৪ হাজার টাকা বেতন পান, সেটা দিয়ে সংসার ও ছোট ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাতে তার কষ্ট হয়।

বার্তা২৪.কমকে জহুর আলী বলেন, ‘৭ বৎস্যর চাকরি কইরাও বেতন বাড়লো না। আমরার কাছে অহন চইত-কার্তিক বারো মাসই হমান। মেঘের মইধ্যে বৃষ্টিত ভিইজ্যা, শীতের মইধ্যে কুয়াশাত ভিইজ্যা পাহারা দেই। কয়দিন কমান্ডার সাবরে কইলাম রাইতে ম্যালা শীত পড়ে, আমরারে একটা কইরা কম্বল দেইন। কমান্ডার সাব কয়, কম্বল দিলে ঝামেলা আছে, পরে আর ঠিকঠাক পাহারা দিবার পারবা না। অহন শীত লাগলে কাগজ টুহাইয়্যা আগুন জ্বালাইয়্যা শইল গরম করি।’

ধীরে ধীরে ঘড়ির কাঁটা এগুচ্ছে। শহর এখন অনেকটাই জনশূন্য। ফাঁকা হয়ে গেছে সড়ক ও অলিগলিগুলো। এমন সময় মধ্যবাজার সড়কের মরিচমহলে লুঙ্গি পরিহিত এক যুবককে দেখে তার গতিরোধ করে জহুর। মুখে টর্চ মেরে ধমকের সুরে জানতে চান, ‘অই তোমার বাড়ি কই? রাইতের বেলা এনো ঘুরাঘুরি করতাছো কে?’ জহুরের কথায় থমকে গিয়ে ওই যুবক বলেন, ‘আমার বাড়ি কোনাপাড়া। গাড়িত কইর্যা মাল আনছি, নামানির জায়গা খুঁজতাছলাম।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;